বেইজিংয়ের সাথে আলোচনায় আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বুধবার রিপাবলিকান সেনেটর মার্কো রুবিওর সাথে সরাসরি ‘অর্থবহ’ বৈঠক করেছেন। সেনেটর রুবিওকে নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন। ট্রাম্পের দল যখন ক্ষমতা গ্রহণের প্রক্রিয়ায় রয়েছেন ঠিক সেই সময়ে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।
পররাষ্ট্র দফতরের ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সংবাদ ব্রিফিংয়ের সময়ে সংবাদদাতাদের বলেন, ‘এটি ভালো, গঠনমূলক ও অর্থবহ আলোচনা ছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘জানুয়ারির ২০ তারিখে ক্ষমতা হস্তান্তরে সাহায্য করতে আমরা প্রস্তুত।’
‘হংকং সম্পর্কিত বিষয়ে’ রুবিও ও অন্যদের আচরণ ‘নিন্দনীয়’ ছিল- মর্মে চীন ২০২০ সালের আগস্টে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
ডিসেম্বরের শুরুর দিকে রুবিও বলেন, তার বিশ্বাস যে পদায়ন নিশ্চিত হলে এ বিষয়ে তিনি ‘সমাধান খুঁজে বের করতে পারবেন।’
পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে আগের অবস্থানে থাকবেন কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণ করেন প্রেসিডেন্ট। পররাষ্ট্র দফতরে আমাদের কাজ হলো তা বাস্তবায়ন করা।’
অতীতে চীন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রুবিওর আইনি কর্মতৎপরতা ও প্রকাশ্য বিবৃতি সম্পর্কে এক নজর :
যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিকে নিরাপদ রাখা
সেপ্টেম্বর মাসে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড চায়না মেড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে রুবিও সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘স্মরণকালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র যাদের বৈরিতার মুখোমুখি হয়েছে, কমিউনিস্ট চীন তাদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী।’
ওই প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়, ‘ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে বাজারকে অস্থিতিশীল করা’ এবং ‘অব্যাহতভাবে চুরির’ মাধ্যমে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প খাতকে নিয়ন্ত্রণ করে।
রুবিও জোর দিয়ে বলেন, ‘পুরো সমাজকে দেশের পুনর্নির্মাণে চীনের চ্যালেঞ্জকে রুখে দিতে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য স্বাধীনতার আলোকে প্রজ্জ্বলিত রাখার জন্য আইনপ্রণেতা, সিইও ও বিনিয়োগকারীদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
রুবিও যুক্তরাষ্ট্র-চীন গবেষণা সহযোগিতার একজন সোচ্চার সমালোচক। এ বিষয়ে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের অজান্তেই করদাতাদের অর্থ চীনা সামরিক বাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত ক্ষেত্র অর্থাৎ লুকোনো প্রযুক্তি, সেমি-কন্ডাক্টার ও সাইবার সিকিউরিটিকে সহায়তা দিয়েছে। এর ফলে বেইজিং কৌশলগত সুবিধা পেয়েছে।’
রুবিও ২০২১ সালের দ্বি-দলীয় সিকিউর ইকুইপমেন্ট অ্যাক্টের পক্ষে কথা বলেছেন। এ আইনটি না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র সরকার হুয়াওয়ি ও জিটিইর মতো চীনা কোম্পানীগুলোকে নতুন সরঞ্জামে লাইসেন্স প্রদান নিষিদ্ধ করতে পারত না। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য পাশ্চাত্য দেশগুলো এই চীনা কোম্পানীগুলোকে নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি বলে মনে করে।
চীনের ‘সবচেয়ে সুবিধা পাওয়া দেশের’ মর্যাদা বাতিল
রুবিও রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের মধ্যে একজন যিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের স্থায়ী ও স্বাভাবিক বানিজ্য সম্পর্ক (পিএনটিআর) বাতিলের একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
সাধারণত ‘সবচেয়ে সুবিধা পাওয়া দেশ’ বা পিএনটিআরে আমদানিকৃত চীনা পণ্য শুল্ক ও অন্যান্য বিধিনিষেধের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকে।
রুবিও ২০২২ সালে ওয়াশিংটনভিত্তিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনে দেয়া এক ভাষণে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, মুক্ত বানিজ্য ও বিশ্বায়ন চীনকে বদলে দেবে বলে মনে করা ‘গত ২০ বছরের সবচেয়ে বড় ভূ-রাজনৈতিক ভুল।’
তার যুক্তি ছিল, ‘গত দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে চীন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি, আমাদের উৎপাদন সক্ষমতা এবং আমাদের চাকরিকে চুরি করে আমাদের অর্থনৈতিক শক্তিকে খর্ব করেছে।’
এছাড়াও রুবিও চীনের মানবাধিকার ও তাইওয়ানের উপর ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক, সামরিক ও রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগেরও একজন সোচ্চার সমালোচক।
সূত্র : ভিওএ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা