২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে অভিযুক্ত ইরানি গোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ

নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগে অভিযুক্ত ইরানি গোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ - সংগৃহীত

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনঃনির্বাচন প্রচারাভিযানকে দুর্বল করার এবং আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ব্যাহত করার প্রচেষ্টাসহ একাধিক অপরাধের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র তিন ইরানি হ্যাকারকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক সরকারি সংস্থা এই পদক্ষেপগুলোর ঘোষণা দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাসের একটু বেশি সময় বাকি আছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন এবং এর বাইরে বিভক্তি ও বিভেদ সৃষ্টির জন্য ইরানের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করছে।

এফবিআই-এর ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার রে একটি ভিডিও বিবৃতিতে বলেন, ‘আপনি এবং কিবোর্ডের পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারবেন না।’

রে বলেন, ‘আপনারা যদি আমাদের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেন তবে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে। যতদিন আপনারা আইনের শাসনকে লঙ্ঘন করার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন, আপনারা এফবিআই-এর মুখোমুখি হবেন।’

ইরানের কর্মকর্তারা এর আগেও বারবার নির্বাচনে হস্তক্ষেপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তবে জাতিসঙ্ঘে ইরানের মিশন সাম্প্রতিক অভিযোগ নিয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধের কোনো জবাব দেয়নি।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের অভিযোগপত্রে ইরানকে তাদের দীর্ঘদিনের অপচেষ্টার জন্য, পাশাপাশি ইরান ইসলামী বিপ্লবী গার্ড কোরের (আইআরজিসি) নিযুক্ত তিন হ্যাকারকে ট্রাম্পের প্রচারণাকে ব্যাহত করার লক্ষ্যে একটি সাম্প্রতিক হ্যাক-অ্যান্ড-লিক অপারেশনের জন্য দায়ী করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ মাসুদ জালিলি, সৈয়দ আলি আঘামিরি এবং ইয়াসের বালাঘিকে অভিযুক্ত করেছে। প্রসিকিউটররা তাদের অপারেশনকে বর্তমান এবং সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, প্রচারণা কর্মকর্তা এবং গণমাধ্যমের সদস্যদের কর্মস্থল এবং ব্যক্তিগত ইমেল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার জন্য একটি বিস্তৃত অভিযান হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

প্রসিকিউটররা বলেন, তাদের হ্যাকিংয়ের শিকারের তালিকায় পররাষ্ট্র দফতরের একজন সাবেক কর্মকর্তা, প্রেসিডেন্টের একজন সাবেক অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং কমপক্ষে দু’জন সাবেক সিআইএ কর্মকর্তা রয়েছেন।

কিন্তু প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেন, মে মাসের শুরু থেকে তিনজন ইরানি ট্রাম্পের প্রচারণার দিকে মনোযোগ দেয়, নথিপত্র ও উপকরণ চুরি করে যা তারা জনসাধারণের কাছে ফাঁস করার চেষ্টা করে।

ট্রাম্প প্রচারাভিযান দল গত মাসে প্রথম এই সন্দেহভাজন হ্যাকিংয়ের কথা ঘোষণা করে। তারা ‘প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বিদেশী উৎসকে’ দোষারোপ করে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা প্রায় এক সপ্তাহ পরে ইরানকে এই হামলার জন্য দায়ী করেন।

শুক্রবার অভিযোগটি ঘোষণা করার জন্য একটি সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড বলেন, ‘আসামিদের নিজেদের কথাই স্পষ্ট করে যে তারা ২০২৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রচারণাকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছিল।’

তিনজনই ইরানে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যদিও যুক্তরাষ্ট্র তাদের গ্রেফতারে সহায়তা করে এমন তথ্যের জন্য এক কোটি ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এফবিআই- উভয়ই সন্দেহভাজনদের অনুসন্ধানে ‘ধরিয়ে দিন’ পোস্টার ছেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এর আগে দাবি করে, তেহরান ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণাকে ব্যাহত করার জন্য কাজ করছে। কারণ তারা বিশ্বাস করে ট্রাম্প জয়ী হলে তা মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরে ইরানের লক্ষ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে।

জালিলি, আগামিরি ও বালাঘির বিরুদ্ধে পরিচয় চুরি, অধিকতর পরিচয় প্রতারণা, অ্যাক্সেস ডিভাইস জালিয়াতি, কম্পিউটারে অননুমোদিত অ্যাক্সেস এবং ব্যাংকের মাধ্যমে জালিয়াতির ষড়যন্ত্রের একাধিক ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

বিভিন্ন অভিযোগের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে দুই থেকে ২৭ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা


আরো সংবাদ



premium cement