১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দাল্লালিকে বরখাস্তের পর এনইউএস থেকে সরে যেতে ভোট দিলো কুইন মেরির শিক্ষার্থীরা

সায়মা দাল্লালি - ছবি - ইন্টারনেট

সায়মা দাল্লালিকে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে বরখাস্ত করার জেরে লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ব্রিটেনের ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ স্টুডেন্টস (এনইউএস) থেকে সরে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

ইউনিয়ন বলছে, ইহুদি বিরোধীতার অভিযোগে দাল্লালিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বাধীন কাউন্সেল তদন্তের পর দেখেছেন যে এনইউএস’র নীতিগুলোর উল্লেখযোগ্য লঙ্ঘন ঘটেছে।

তবে মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন অভিযোগ করেছে যে দাল্লামি ইসলামবিদ্বেষের শিকার হয়েছেন।

এদিকে কুইন মেরি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন দাল্লালিকে বরখাস্ত করার মাধ্যমে এনইউএস’কে ‘ফিলিস্তিনিবিরোধী বর্ণবাদের বিস্তারে অবদান’ রাখায় অভিযুক্ত করেছে এবং তাকে অপসারণকে ‘গণতন্ত্রের অপমান হিসেবে বর্ণনা করেছে, যা এনইএস অর্জন করতে চায়’।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এই সিদ্ধান্তের মানে হলো যে ছাত্র ইউনিয়ন এনইউএস-এর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, প্রচারণা এবং জাতীয় সম্মেলন সহ প্রতিনিধিত্বমূলক প্রক্রিয়াগুলোর সাথে অবিলম্বে যুক্ত হওয়া বন্ধ করবে।’

গত নভেম্বরের শুরুর দিকে এনইএস ঘোষণা করে যে ইহুদিবিরোধীতার অভিযোগে একটি স্বাধীন আচরণবিধি তদন্তের পরে দাল্লালিকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এনইউএস বলেছে, ‘আমরা জানি বিষয়টির সাথে ‘গভীর আবেগ’ জড়িয়ে আছে। আমরা জনগণের কাছে অনুরোধ করব যে, প্রক্রিয়াটির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং কোনো পক্ষ নেয়া থেকে বিরত থাকতে।’ পাশাপাশি এই অনুরোধও করেন যে বিষয়টি নিয়ে যাতে জড়িত কারো বিরুদ্ধে, বিশেষ করে অনলাইনে কোনো বিদ্বেষপূর্ণ কথা বলা না হয়।

বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ইউনিয়ন অব জিউস স্টুডেন্ট (ইউজেএস) সহ উগ্র জায়নবাদী দলগুলোর ‘একটি চিঠি’ প্রকাশ্যে আনার মাধ্যমে। ১০ বছর আগে ২৬ বছর বয়সী সায়মা দাল্লালি সামাজিক মাধ্যমে খোলা চিঠিটি লিখেছিলেন।

পোস্টটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে, একটি যুদ্ধের কথা উল্লেখ করায়। সপ্তম শতাব্দির শুরুতে আরব উপদ্বীপের মরুদ্যানে খাইবারের ইহুদি বাসিন্দা ও মুসলমানদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। এতে বলা হয়েছিল যে ‘মুহাম্মদ স:-এর সেনাদল’ গাজার দিকে ফিরে আসবে।

সে সময় এনইউএস বলেছে, উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কোল ফিল্ড বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি তিনি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট দাল্লালির স্থলাভিষিক্ত হবেন।

ঘটনার পর বরখাস্ত হওয়া দাল্লালি সায়মা টুইটারে জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টের কারণে তাকে পদচ্যুত করা হয়েছে। হাস্যকর বিষয় হলো, এটি ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সচেতনতার মাসের প্রথম দিন। তিনি বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

দাল্লালির বাবা তিউনেশিয়ার এবং মা সুদানের নাগরিক। তিনি ২০০০ সালে ব্রিটেনে আসেন এবং লন্ডনের সিটি ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা শুরু করেন। বর্তমানে আইন বিষয়ে মাস্টার্স করছেন।

মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন দাল্লালির এ বিষয়টিকে গভীর উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে। তিনি ইসলামবিদ্বেষের শিকার বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

সহযোগী এ সংগঠনটি বলছে, অনেক মুসলিম শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ইসলামবিদ্বেষের শিকার হচ্ছে। এমন সিদ্ধান্ত আরো ভীতি ছড়াবে এবং এনইউএস তাদের অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এগুলোর ব্যাখ্যা চেয়েছেন তারা।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর


আরো সংবাদ



premium cement