আইকিউ পরীক্ষায় আইনস্টাইন ও হকিংয়ের চেয়ে এগিয়ে বৃটিশ মুসলিম শিশু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ নভেম্বর ২০২২, ১৭:৫৭, আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২২, ১৮:৩৮
ইন্টারন্যাশনাল মেনসা অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আইকিউ পরীক্ষায় এবার ইতিহাস গড়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ১১ বছর বয়সী ব্রিটিশ শিশু ইউসুফ শাহ। আইকিউতে তিনি দুই স্কোরে ইতিহাসের কিংবদন্তী দুই বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ও স্টিফেন হকিংয়কেও ছাপিয়ে গেছেন।
সূত্রগুলো উল্লেখ করেছে, আইকিউ পরীক্ষায় মূল্যমাণ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪০ স্কোর। সেখানে ইউসুফ শাহ পেয়েছেন ১৬২ স্কোর। যা লিখিত পরীক্ষার সর্বোচ্চ রেকর্ড।
ইউসুফ শাহ মা-বাবার সাথে ইংল্যান্ডের লিডস শহরে থাকেন। তিনি আইকিউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যাপারে বলেন, আমি বন্ধুদের ক্রমাগত উৎসাহের ফলে আইকিউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।
তবে তিনি কোনো ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়াই ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন বলে জানান। পরীক্ষার প্রকৃতি সম্পর্কেও তার জানাশোনা ছিল না। তবুও পরীক্ষা দিতে গিয়ে তার মাঝে কোনো শঙ্কা কাজ করেনি।
এ ব্যাপারে ইউসুফ শাহ ব্রিটেনের দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি জানতাম, ইন্টারন্যাশনাল মেনসা অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত পরীক্ষাটি অনেক কঠিন। অনেকে তুখোড় মেধাবী মানুষ পূর্ব প্রস্তুতি নেয়ার পরও তাতে উত্তীর্ণ হতে পারে না। তথাপি আমার মধ্যে কোনো ভয় কাজ করেনি।
পরিবারের শঙ্কার কথা উল্লেখ ধরে তিনি বলেন, আমার পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় আমার পরিবার খুবই উৎকণ্ঠিত ছিল। ফলে এমন ঈর্ষণীয় ফলাফলে তারা খুবই অবাক হয়েছিলেন। হয়েছিলেন অনেক আনন্দিত।
তিনি আরো বলেন, ‘আইকিউ পরীক্ষায় আমার প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় লেগেছে। আমার সাথে আরো সাত-আটজন ছিলেন। তাদের মধ্যে দুইজন শিশু ও অন্যরা প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন।’
সাক্ষাৎকারে তিনি পছন্দের কাজ সম্পর্কে বলেন, আমি সব সময় এমন কিছু করতে পছন্দ করি, যা আমার মেধাকে শাণিত করে। এরপর তিনি পছন্দের কাজের তালিকা উল্লেখ করে বলেন, আমার সুডোকু পাজল, রুবিক কিউব, কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ব্যাডমিন্টন, পিয়ানো বাজানো, সাঁতার কাটা ও পড়াশুনা করতে ভালো লাগে। ভৌগলিক স্থান সম্পর্কেও আমার যথেষ্ট আগ্রহ আছে। আমি বিশ্বের সবদেশের রাজধানীর নাম জানি।
তিনি আরো বলেন, আমি জানুয়ারিতে গণিতের হুইজ আইকনিক কিউব খেলতে শুরু করি। মাত্র এক মাসের মধ্যে সেগুলো ভেঙে ফেলতে সক্ষম হই।
ইউসুফ শাহের রেকর্ড ফলাফলে আনন্দ প্রকাশ করে তার মা সানা বেগম বলেন, ‘আমরা তার সফলতায় খুবই গর্বিত। আমাদের পরিবারে সেই প্রথম আইকিউ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।’
সাক্ষাৎকারে ইউসুফ শাহ কেমব্রিজ বা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত পড়ার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি তার আট বছর বয়সী ছোট ভাই খালিদ বড় হলে আইকিউ পরীক্ষায় অংশ নেবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ইন্টারন্যাশনাল মেনসা অ্যাসোসিয়েশন ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত ও প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান। উচ্চ আইকিউ সম্পন্ন ব্যক্তিরা এর সদস্যপদ গ্রহণ করে থাকে। বিশ্বের আশিটি দেশে এর শাখা আছে। সদস্য রয়েছে লক্ষাধিক। প্রতিষ্ঠানটি আইকিউ পরীক্ষার তত্ত্বাবধান ও প্রত্যয়ন করে থাকে।
সূত্র : দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, আল জাজিরা