চার্লসের স্ত্রীকে রানি না ডেকে কুইন কনসর্ট ডাকার কারণ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৭:৩৯
তিনি চার্লসের আজীবনের ভালোবাসা। তরুণ বয়স থেকে একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়ের অংশীদার, ১৭ বছর ধরে তার স্ত্রী এবং এখন তিনি হলেন কুইন কনসর্ট। দেশের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ নানা অনুষ্ঠান, উৎসবে স্বামীর পাশে ক্যামিলার উপস্থিতি দেখে অভ্যস্ত সাধারণ মানুষ। কিন্তু তিনি নিজে স্বীকার করেছেন তার জন্যে বিষয়টা একেবারেই সহজ কিছু ছিল না।
তার মতো জনসমক্ষে এত অপমানের মুখোমুখি খুব কম নারীকেই হতে হয়েছে। তিনি ছিলেন সেই নারী, যার কারণে এই শতকের সবচেয়ে আলোচিত বিবাহ বিচ্ছেদটি ঘটেছে। চার্লসের প্রথম স্ত্রী, প্রিন্সেস অফ ওয়েলস ডায়ানার সাথে তাকে বারংবার তুলনা করা হয়েছে।
চার্লসকে বেছে নিয়ে তিনি তার নিজের জীবনকে ওলটপালট করেছেন। বহু বছর ধরে সাংবাদিকরা তাকে জ্বালাতন করেছে। তার চরিত্র, চেহারা, বেশভূষা সারাক্ষণ আক্রমণের মুখে পড়েছে। কিন্তু অসীম ধৈর্যের সাথে তিনি এসব ঝড়ঝাপটা মোকাবেলা করেছেন এবং রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ নারী সদস্য হিসেবে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছেন।
বলা হয়, কুড়ির কোঠায় থাকাকালীন দুজনের দেখা হওয়া মাত্রই চার্লস তার প্রেমে পড়েন। অথচ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে তার অনেকটাই সময় লেগেছে। কিন্তু জীবনের শেষের দিকে এসে ক্যামিলাকে দ্ব্যর্থহীন সমর্থন যুগিয়েছেন রানী।
নতুন কুইন কনসর্ট হয়ত কখনোই জনগণের কাছে সম্পূর্ণ গ্রহণযোগ্যতা পাবেন না। কিন্তু এ বছরের শুরুতে ভোগ ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি যেমনটা বলেছিলেন, ‘আমি এসবের ঊর্ধ্বে গিয়ে জীবন চালিয়ে গেছি। নিজের জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
১৯৪৭ সালের ১৭ জুলাই জন্ম নেয়া ক্যামিলা রোজমেরি শ্যান্ড কোনো একদিন রাজপরিবারের উত্তরাধিকারীকে বিয়ে করবেন, ওই সময় তার এমন ভবিষ্যৎ সম্পর্কে কেউ কখনো ধারণাই করেননি। তার পরিবার ছিল ধনী, অভিজাত ও বেশ ভালো যোগাযোগ ছিল তাদের। তবে পরিবারটির সাথে রাজবংশীয় কোনো কিছুর সম্পর্ক ছিল না।
সাসেক্সে তাদের মনোরম পারিবারিক বসতভিটায় ভাইবোনদের সাথে হেসেখেলে সুন্দর ভালোবাসাময় পরিবেশে তিনি বড় হয়েছেন। তার বাবা ব্রুস শ্যান্ড একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। তাকে ছোট বেলায় রাতে শোবার সময় গল্পের বই পড়ে শোনাতেন।
তার মা রোজালিন্ড অন্য আর সব মায়ের মতোই তাদের স্কুলে আনা নেয়া করতেন। সৈকতে বেড়াতে নিয়ে যেতেন। তার ছেলেবেলা ছিল চার্লসের চেয়ে একেবারেই ভিন্ন। চার্লসকে ছোটবেলায় বাবা মায়ের অনুপস্থিতিতে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে। কেননা এই দম্পতি রাজকীয় কাজে প্রায়শই দেশের বাইরে থাকতেন।
ক্যামিলাকে লন্ডনের সমাজে আত্মপ্রকাশের জন্য প্রস্তুত করেছে সুইজারল্যান্ডের একটি স্কুল। তিনি তার সমাজে জনপ্রিয় ছিলেন এবং ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু পার্কার বোলস্-এর সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের প্রায়শই ছাড়াছাড়ি হয়ে যেত কিন্তু আবার তারা একপর্যায়ে সম্পর্কে ফিরে যেতেন।
প্রিন্স চার্লসের জীবনীর লেখক জনাথন ডিমব্লেবি'র ভাষ্য অনুযায়ী, ৭০-এর দশকের শুরুতে ক্যামিলার সাথে চার্লসের পরিচয়। বইটিতে তিনি লিখেছেন, তিনি (ক্যামিলা) ছিলেন স্নেহপরায়ণ, সাদাসিধে ধরনের। প্রথম প্রেমের সকল তীব্রতা নিয়ে তাৎক্ষণিক তার প্রেমে পড়েন চার্লস।
কিন্তু তাদের প্রেমের জন্য সময়টা একেবারেই সঠিক ছিল না। চার্লসের বয়স তখন ২০-এর কোঠায় এবং তিনি তখন ব্রিটিশ নৌবাহিনীতে কাজ করার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। ১৯৭২ সালে তাকে আট মাসের জন্য দেশের বাইরে নিয়োগ দেয়া হয়।
ওই সময়ের মধ্যেই ক্যামিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসেন অ্যান্ড্রু আর ক্যামিলা তাতে রাজি হয়ে যান। কিন্তু চার্লসের জন্য তিনি অপেক্ষা করলেন না কেন?
তার বন্ধুরা ধারণা করেন, তিনি সম্ভবত নিজেকে রানী হবার যোগ্য প্রার্থী বলে মনে করেননি। চার্লস যতটাই প্রত্যাখ্যাত অনুভব করুক না কেন, তারা সবসময় একে অপরের জীবনের অংশীদার ছিলেন। তারা একই সমাজে চলাফেরা করতেন।
চার্লস ও অ্যান্ড্রু একসাথে পোলো খেলতেন। সেখানে তোলা চার্লস ও ক্যামিলার ছবিতে তাদের দু’জনের মধ্যেকার এক ধরনের স্বচ্ছন্দ অন্তরঙ্গতা ফুটে ওঠে। প্রথম সন্তান টমের ধর্মপিতা হওয়ার জন্য চার্লসকে অনুরোধ করেছিলেন ক্যামিলা ও অ্যান্ড্রু।
এরই মধ্যে ১৯৮১ সালের গ্রীষ্মকালে লেডি ডায়ানা স্পেনসারের সাথে পরিচয় হয় চার্লসের এবং একপর্যায়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু ক্যামিলা তখনো তার জীবনের অংশ।
'ডায়ানা: হার ট্রু স্টোরি' বইতে অ্যান্ড্রু মরটন লিখেছেন, অনুষ্ঠানের মাত্র দু’দিন আগে বিয়ে ভেঙে দিতে চেয়েছিলেন ডায়ানা। ওই সময় চার্লস ও ক্যামিলার ভালবাসার নামের প্রথম অক্ষর খচিত একটি হাতের গয়না বানিয়েছিলেন চার্লস ক্যামিলাকে দেবেন বলে। আর সেটি আবিষ্কার করার পর ডায়ানা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
স্বামীর সাথে ক্যামিলার সম্পর্ক নিয়ে ডায়ানাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। চার্লসের দাবি, ডায়ানার সাথে তার বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পরই ক্যামিলার সাথে আবার তার প্রেম পুনরুজ্জীবিত হয়েছে।
১৯৯৫ সালে বিবিসি'র প্যানোরামা অনুষ্ঠানে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডায়ানা বলেছিলেন, ‘এই বৈবাহিক সম্পর্কে সদস্য সংখ্যা তিনজন।’
যখন চার্লস ও ক্যামিলা দু’জনেরই বৈবাহিক সম্পর্কের অবনতি হতে শুরু করে, সেসময় খবরের শিরোনামগুলো সম্ভবত তার জন্য ছিল খুবই কষ্টের।
১৯৮৯ সালে গোপনে রেকর্ড করা চার্লস ও ক্যামিলার মাঝরাতের এক ফোনালাপের বিস্তারিত জানতে পেরেছিলেন ডায়ানা।
সেখানে দু’জনে কি আলাপ করেছিলেন তার বিস্তারিত প্রকাশিত হয় চার বছর পর। সেই ফোনালাপে একদম স্পষ্ট ফুটে উঠেছিল কোন পর্যায়ের ঘনিষ্ঠতা তাদের দুজনের মধ্যে ছিল।
১৯৯৫ সালে ক্যামিলার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আর আনুষ্ঠানিকভাবে চার্লস ও ডায়ানার বিবাহবিচ্ছেদ হয় এর পরের বছর।
মানুষজনের কটূক্তি, নিজের পারিবারিক জীবনে অনেক জটিলতা থাকার পরও ক্যামিলা চার্লসের সাথে সম্পর্কে বজায় রাখেন। তাতে চার্লসের প্রতি আবেগ যে কতটা গভীর সেটি ফুটে উঠেছে। দিনের পর দিন বাড়ির বাইরে ঝোপের মধ্যে কিভাবে ফটোগ্রাফাররা গোপনে বসে থাকত সেনিয়ে কথা বলেছেন ক্যামিলার ছেলে টম পার্কার বোলস।
তিনি বলেন, ‘নতুন করে কেউই এমন কিছু আমাদের পরিবার সম্পর্কে বলতে পারবে না, যাতে আমরা অসম্মান বোধ করব।’
সেখানে তিনি আরো বলেছিলেন, ‘আমার মা বুলেট প্রতিরোধী।’
ওই দিনগুলো সম্পর্কে ক্যামিলা বলেছেন, ‘আপনার দিকে সারাক্ষণ তাকিয়ে থাকা হচ্ছে এটা কেউই পছন্দ করে না। আপনাকে এটির সাথে বাঁচার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’
তবে ১৯৯৭ সালে ডায়ানার মৃত্যুর পর সমালোচনা মোকাবেলা করার উপায় খুঁজে পাওয়া আরো কঠিন হয়ে পড়ে। জনসমক্ষে চার্লস তার দু’ ছেলে উইলিয়াম ও হ্যারির দিকে মনোনিবেশ করেন এবং ক্যামিলা দৃষ্টির বাইরে চলে যান। কিন্তু তাদের সম্পর্ক ঠিকই চলতে থাকে।
চার্লসের অবস্থান এরকম ছিল যে, তার জীবনে ক্যামিলার অবস্থান নিয়ে কোনোরকম আলোচনা চলবে না এবং তাই জনসাধারণের চোখে তার ইমেজ বদলাতে সুকৌশলে এক ধরনের প্রচারণা চালানো হয়েছিল।
এর শুরুটা ছিল ১৯৯৯ সালে ক্যামিলার বোনের ৫০তম জন্মদিন উদযাপনের পর রিটজ হোটেল থেকে দু’জনের গভীর রাতে একসাথে প্রস্থানের মাধ্যমে। ছয় বছর পর একটি ছোট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তারা উইন্ডসর গিল্ডহলে বিয়ে করেন।
মানুষজন তাদের প্রতি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে সেনিয়ে নতুন এই দম্পতির যত উদ্বেগই থাকুক না কেন পরে তা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছিল।
কারণ শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাদের উল্লাস এবং করতালি দিয়েই স্বাগত জানিয়েছিল। তবে বহু বছর ধরে বিতর্ক চলতে থাকে যে, তিনি কখনো রানি হিবেবে পরিচিত হবেন কিনা।
আইনগতভাবে তার রানির পদবি ব্যবহারের অধিকার থাকলেও, রাজ পরিবারের আনুষ্ঠানিক অবস্থান ছিল যে, তিনি প্রিন্সেস কনসর্ট হিসেবে পরিচিত হবেন।
যারা ডায়ানার সাথে চার্লসের বিয়ে ভেঙে যাওয়ার জন্য ক্যামিলাকে দোষারোপ করেছিলেন, তাদের শান্ত করার উপায় হিসাবে এটি করা হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি রানি নিজে নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালে তিনি বলেন যে, এটি তার আন্তরিক ইচ্ছা যে, ‘যখন সেই সময় আসবে, ক্যামিলা কুইন কনসর্ট হিসেবে পরিচিত হবেন।’
এর ফলে এটাই নিশ্চিত হলো যে, চার্লসের পাশে ক্যামিলা তার স্থান অর্জন করেছেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক কার্যকরভাবে শেষ হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে ক্যামিলার ব্যাপারে রানি সতর্ক থাকতেন মূলত প্রিন্স উইলিয়াম ও হ্যারির জন্য। দু’জনেই মাত্র ১৫ ও ১২ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সংসার ভেঙে যাওয়া, তারপর মায়ের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে গেছেন।
২০০৫ সালে তাদের বিয়ের কয়েক মাস পরে, প্রায় ২১ বছর বয়সী হ্যারি বলেছিলেন, ক্যামিলা একজন চমৎকার নারী, যিনি তাদের বাবাকে খুব সুখী করেছেন। উইলিয়াম ও আমি তাকে অনেক ভালবাসি এবং তার সাথে আমরা বেশ ভালোই মানিয়ে নিতে পারি।
এরপর থেকে বহু বছর ধরে দু’ভাইয়ের কেউই আর ক্যামিলা সম্পর্কে তাদের মনোভাব ব্যক্ত করেননি। তবে উইলিয়ামের স্ত্রী ক্যাথরিন ও ক্যামিলার জনসমক্ষে আচরণ বলে যে, তাদের মধ্যে সম্পর্ক ভালোই।
এখন বয়স ৭০-এর মাঝামাঝি এসে ক্যামিলার জীবন পরিচালিত হয় তার স্বামী ও তার পরিবারকে সমর্থন যুগিয়ে। তাকে নিয়ে অনেক শিরোনাম হতে পারে কিন্তু তিনি দৃষ্টির আড়ালে একজন নানী ও দাদী। পাঁচ নাতি-নাতনী রয়েছে তার।
ভ্যানিটি ফেয়ারকে ক্যামিলার ভাগ্নে বেন এলিয়ট বলেছিলেন, লোকচক্ষুর আড়ালে একটু সুস্থির কয়েকটা দিন কাটাতে ইচ্ছা করেই তিনি উইল্টশায়ারে তার পারিবারিক বাসস্থানে চলে যান। তার খুব ঘনিষ্ঠ একটি বন্ধুমহল এবং খুব সহযোগিতাপূর্ণ পরিবার রয়েছে। তিনি তার স্বামী, সন্তান ও নাতি-নাতনিদের খুব ভালোবাসেন।
নিজের পছন্দের কিছু বিষয়ে ক্যামিলা নিজেও একটা ভালো অবস্থান তৈরি করেছেন। যেমন অস্টিওপোরোসিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, যা তার মা ও দাদীকে খুব কষ্ট দিয়েছে। পারিবারিক সহিংসতা, ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার মতো বিষয়গুলোর ওপর তিনি মানুষের মনযোগ আকর্ষণ করছেন।
ইনস্টাগ্রামে একটি বইয়ের ক্লাব চালু করার মাধ্যমে বই পড়ার প্রতি ভালোবাসা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। সম্ভবত জীবনের অনেক পরের দিকে রাজকীয় পদে এসেছেন বলে তাকে ঘিরে যেসব হইচই ও ব্যতিব্যস্ত পরিস্থিতি তৈরি হয় সেনিয়ে তাকে প্রায়ই বিব্রত হন বলে মনে হয়।
ক্লারেন্স হাউসে একটি দাতব্য অনুষ্ঠান কভার করার সময় আমি দেখেছিলাম ডাচেস এক কোনা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখছেন সবাই প্রস্তুত আছে কিনা। নিচে নেমেই তিনি দাতব্য সংস্থাটির প্রধানকে প্রানবন্তভাবে আলিঙ্গন করে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন।
লকডাউন চলাকালীন ডাচেস তার নাতি-নাতনিদের আলিঙ্গন করতে পারছেন না, সেনিয়ে দুঃখের কথা বলেছিলেন। বিধিনিষেধগুলো শিথিল হওয়ার সাথে সাথেই তিনি স্পষ্টতই বাইরের দুনিয়ায় ফিরে যেতে পারার বিষয়টি খুব উপভোগ করেছিলেন।
বৈঠকে তার কথাবার্তা দেখে বোঝা যায়, তার মধ্যে মানুষজনকে আশ্বস্ত করার ক্ষমতা রয়েছে। কোথাও বক্তৃতা দেয়ার বিষয়টি তার জন্যে একটা কঠিন উদ্বেগের বিষয়, এমন কথা স্বীকার করতে তিনি দ্বিধা করেননি। তবে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন তিনি।
১৭ বছর ধরে সংসার করছেন চার্লস ও ক্যামিলা। তাদের মধ্যে সম্পর্কটা কেমন সেটা যেন একেবারে পরিষ্কার। একে অপরের দিকে তাকানো, দু‘জনে মিলে হাসির মুহূর্ত তাদের অনেক। এমন কোনো অনুষ্ঠান নেই যেখানে তারা কোনকিছু নিয়ে মজা করছেন না।
এলিয়ট ভ্যানিটি ফেয়ারকে বলেন, তারা একে অপরকে ভালোবাসেন, সম্মান করেন এবং একই বিষয় তাদের আনন্দ দেয়, হাসির খোরাক যোগায়।’
তারা খুবই বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। কিন্তু খুব কঠোর বিচার, বিশ্লেষণ, চাপের মধ্যে দিয়ে তাদের জীবন কাটে।
বিয়ের ১০ম বার্ষিকীতে সিএনএনকে প্রিন্স চার্লস বলেছিলেন, ‘সবসময় পাশে কেউ থাকলে তা অবশ্যই খুব চমৎকার একটি বিষয়। সে আমার জন্য একটা অনেক বড় অবলম্বন এবং জীবনের আনন্দের দিকগুলো সে বোঝে, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।’
দুজনের জীবন সম্পর্কে ক্যামিলা বলেছিলেন, ‘রাতের বেলায় যেমন ধীরে ধীরে জাহাজ পার হয়ে যায়, আমাদের জীবনটাও মাঝেমাঝে সেরকম। কিন্তু আমরা সবসময় একসাথে বসি, এক কাপ চা খাই এবং দিনের নানান বিষয় নিয়ে আলোচনা করি। নিজেদের জন্য একটু সময় কাটাই।’
একজন রাজাকে একদম একাকী তার ভূমিকায় থাকতে হয়। চার্লস হয়ত বুঝেছিলেন যে রাজা হওয়ার পর যে ধরনের সাহচর্য তার প্রয়োজন হবে, একমাত্র ক্যামিলাই পারবেন তা দিতে। ক্যামিলার ব্যাপারে হাল ছেড়ে দিতে চার্লসের অনিচ্ছার এটাই হয়ত কারণ।
সূত্র : বিবিসি