কেকের দাম কম দেয়ায় পুলিশ বরখাস্ত!
- মাহবুব আলী খানশূর, ব্রিটেন
- ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৭:০৬, আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২১, ১৭:৫৭
ব্রিটেনে দুই প্যাকেট জাফা কেকের দাম মাত্র ১ পাউন্ড। যা বাংলাদেশী টাকায় ১১৮ টাকা। কিন্তু সেখানকার ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের এক পুলিশ অফিসার একটি চ্যারিটি শপ থেকে কিনতে গিয়ে তার দাম পরিশোধ করেছে মাত্র ১০ পেন্স। যা বাংলাদেশী টাকায় মাত্র ১২ টাকা। নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দাম দেয়ায় বরখাস্ত করা হয়েছে ওই পুলিশকে অফিসারকে।
দেশটির পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের হ্যালিফেক্স পুলিশ স্টেশনের ক্যান্টিনে উগান্ডার দরিদ্র মানুষদের জন্য অর্থ উত্তোলনের আয়োজন করে একটি চ্যারিটি সংস্থা। সেখানে বিক্রির জন্য রাখা হয় চিপস, চকলেট, কেক ও কোমল পানীয়। আর প্রতিটি পণ্যের দাম লিখে রাখা হয় ৫০ পেন্স। যা বাংলাদেশী টাকায় ৫৯ টাকা। এ বছরের ২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই চ্যারিটি অনুষ্ঠানে পুলিশ কনস্টেবল ক্রিস ডোয়ার দু‘টি জাফা কেকের প্যাকেট কিনেন। নামে কেক হলেও জাফা কেক বিস্কুটের উপর চকলেট ও কমলার স্বাদের জেলি মিশানো এক ধরনের বিস্কুট। প্রতিটি পণ্যের দাম ৫০ পেন্স হিসেবে দুই প্যাকেট জাফা কেকের দাম হয় এক পাউন্ড। যে টেবিলে বিভিন্ন পণ্য ছিল সেখানে একটি টিনের কৌটা রাখা ছিল পণ্যের দাম পরিশোধের জন্য। ৫১ বছর বয়স্ক পুলিশ অফিসার ক্রিস ডোয়ার দুই প্যাকেট জাফা কেকের দাম হিসেব ওই কৌটায় রাখেন ১০ পেন্স। এর কিছুক্ষণ পরে ডোয়ারের এক সহকর্মী অন্যান্য সহকর্মীর কাছে প্রশ্ন করেন, ডোয়ার কেন নির্দিষ্ট দামের চেয়ে কম দাম দিলো দুই প্যাকেট জাফা কেকের জন্য? ওই প্রশ্নের পরই সবার সামনে কৌটার অর্থ বের করে গণনা করা হয়। প্রথমে ডোয়ার দাবি করেন তিনি ২০ পেন্সের পাঁচটি কয়েন দিয়েছেন।
কিছুক্ষণ পরে তিনি বলেন, আসলে তিনি মনে করতে পারছেন না কত দাম পরিশোধ করেছেন তিনি। কিন্তু ওই শপের দায়িত্বশিল ব্যক্তি কৌটার অর্থ গণনা করে জানান, আগে যা বিক্রি হয়েছিল তার চেয়ে ১০ পেন্স বেশি আছে ওই কৌটায়। অর্থাৎ ক্রিস ডোয়ার ১০ পেন্স পরিশোধ করেছেন দুই প্যাকেট জাফা কেকের জন্য। যেহেতু সেটি ছিল একটি চ্যারিটি শপ তাই সেখানকার কর্তাব্যক্তিরা তাকে কোনো প্রশ্ন করেনি কম দাম দেয়ার জন্য। কিন্তু নিজের সহকর্মীরা তার ওই কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে উদঘাটন করেন ডোয়ারের কর্মকাণ্ড। ২০১৭ সালে ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন ক্রিস ডোয়ার। কাজের ক্ষেত্রে অপরাধ করায় বিচার বিভাগে তার কাজের তদন্ত করা হচ্ছে।
তদন্ত প্যানেলের চেয়ারম্যান আকবর খান বলেন, পিসি ডোয়ারের কাজগুলো ছিল বিশ্বাসের অপব্যবহার এবং এটি ব্রিটিশ পুলিশ ও এর সেবার বদনাম এনেছে।
তিনি আরো বলেন, ওই অফিসার শুধুমাত্র তার নিজের আচরণের জন্য দায়ী যা অসৎ এবং অপরাধমূলক প্রকৃতির ছিল।