২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ব্রিটেনে এক বছরের জন্য লকডাউন!

ব্রিটেনে এক বছরের জন্য লকডাউন! - সংগৃহীত

বাইশ হাজার পেরিয়ে কিছুটা গতি কমেছে আমেরিকার মৃত্যুমিছিলের। স্পেনও দাবি করেছে, দৈনিক মৃতের সংখ্যা এখন কিছুটা কম। একই কথা জানাচ্ছে ইতালি, ফ্রান্সও। যার জন্য ইউরোপের কম ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো গৃহবন্দি থাকার নির্দেশিকা শিথিল করার কথা ভাবছে। একমাত্র যে ব্রিটেন এত দিন বাসিন্দাদের গৃহবন্দি করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না, তারাই এখন দেশ এক বছর তালাবন্ধ করার কথা ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা মণ্ডলীর বিশেষ বৈঠকে মিলেছে এমনই ইঙ্গিত।

পৃথিবীজুড়ে সংক্রমণের সংখ্যা এখন ১৯ লাখের উপরে। মৃত্যু ১ লাখ ১৯ হাজার ছাড়িয়েছে। ইউরোপে সব চেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি ইতালির। ২০ হাজারের বেশি জনের প্রাণ যাওয়ার পরে এ দেশে মৃত্যুহার কিছুটা কমেছে। স্পেনে মারা গিয়েছেন ১৭,৭৫৬ জন। ফ্রান্সে সংখ্যাটা ১৪,৯৬৭। কিন্তু ব্রিটেনে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও করোনা-আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিন রাত আইসিইউয়ে কাটিয়েছেন। রোববার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বরিস জনসন বলেছেন, ‘‘ওদের জন্যই জীবন ফিরে পেলাম।’’

এর পর সোমবারই বরিস ‘সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজ়রি গ্রুপ ফর ইমার্জেন্সিস’-এর সঙ্গে বৈঠকে বসেন। শোনা গেছে বৈঠকে বরিস জানিয়েছেন, এত দিন বাসিন্দাদের ঘুরে-বেরানো, মেলামেশায় নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার শয্যা এক-এক করে ভরতে থাকার পরে এবং মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ানোর পরে নতুন করে ভাবছে ব্রিটিশ প্রশাসন। বরিস স্পষ্ট জানিয়েছেন, পাব ও রেস্তরাঁ বন্ধ না করলে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না দেশে। আর এই লকডাউনের সময়কাল এক বছর পর্যন্ত হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।

ব্রিটেনের বিশেষজ্ঞরাও আপাতত স্কুল-কলেজ-সহ যেকোনো ধরনের জমায়েত দীর্ঘমেয়াদি ভাবে বন্ধ রাখার উপরে জোর দিচ্ছেন। বন্ধ রাখা হবে বাজার-দোকানও। তাতে দরিদ্র পরিবারগুলো কঠিন আর্থিক পরিস্থিতিতে পড়লেও কিছু উপায় নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘‘সরকার যদি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়, তবেই দেশের মানুষ এর গুরুত্ব বুঝবে।’’

বাসিন্দাদের দীর্ঘ তিন মাস গৃহবন্দি রাখার পরে অবশেষে একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল চীনের হুবেই প্রদেশ। কিন্তু নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে সেখানে। গত কয়েক সপ্তাহে এই প্রথম এক দিনে ১০৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন চীনে। দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সংক্রমণ সম্পর্কে বেইজিংয়ের দাবি, আক্রান্তেরা সকলেই বিদেশ ফেরত। তাদের থেকেই কিছু স্থানীয় সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

এ দিকে দীর্ঘকাল লকডাউনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সোমবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাদের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-র কথায়, ‘‘এখনও সুপারমার্কেটে খাবার মজুত রয়েছে। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে শিগগিরই খাদ্য সরবরাহের শৃঙ্খলে ভাঙন ধরবে। কারণ চাষি, কৃষি ব্যবস্থা, সেই সঙ্গে যুক্ত কারখানা, জাহাজ পরিবহণ, বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী... পুরো পদ্ধতিটাই ভেঙে পড়বে।’’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement

সকল