১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ফেসবুকে নিউজিল্যান্ডের হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করায় ব্রিটেনে এক ব্যক্তি আটক

নিউজিল্যান্ড মসজিদে হামলাকারী ব্রেন্টন টারান্ট - সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডের বর্বোরোচিত হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় ব্রিটেনে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেটার ম্যানচেষ্টারের ওল্ডহাম এলাকা থেকে আটককৃত ওই ব্যক্তির বয়স ২৪ বছর।

গ্রেটার ম্যানচেষ্টারের পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃত ব্যক্তির কাছ থেকে আরো তথ্য আদায়ের স্বার্থে এবং নিরাপত্তার খাতিরে তার নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এছাড়া ঘৃণাজনিত এই কাজে ওই ব্যক্তির সাথে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তাও তদন্ত করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টিকে তারা জরুরি গুরুত্ব দিয়ে সন্দেহভাজন সকল ক্ষেত্রে যথাযথ তদন্ত করছে।

এ বিষয়ে গ্রেটার ম্যানচেষ্টার পুলিশের এসিস্টেন্ট চিফ কনস্টেবল রাস জাকসন জানান, নিউজিল্যান্ডে প্রায় ৫০ জন মানুষ হত্যার ঘটনায় আমরা ও বিশ্বের সবাই স্তম্ভিত। এ ঘটনার নিন্দা ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমরা মনে করি না স্থানীয়ভাবে সন্ত্রাসী ঘটনার কোনো ধরনের হুমকি আছে। তবে এই সংকটময় মুহূর্তে আমার অতিরিক্ত নিরাপত্তার স্বার্থে সবদিকে খেয়াল রাখছি। আর এরই ধারাবাহিকতায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃনা প্রকাশ করায় ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

খুনি ব্রেন্টনকে থামিয়ে দেয়া দুই মুসলিম ‘বীর’
বিবিসি

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলায় নিহত পাকিস্তানী এক ব্যক্তির ভাই জানিয়েছেন তার গর্ব আর দুঃখের কথা। খুরশিদ আলম বলছিলেন তার ভাইয়ের কথা, যিনি ক্রাইস্টচার্চে গত শুক্রবার বন্দুকধারীর গুলিতে তার ছেলের সাথেই নিহত হন।

কিন্তু মারা যাবার আগে সেই হত্যাকারীকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।

"আমিও যদি তার মতোই মৃত্যুবরণ করতে পারতাম!" খুরশিদ এভাবেই মৃত ভাইয়ের কথা স্মরণ করছিলেন। শুক্রবার নামাজের সময় দুটি মসজিদে হামলায় নিহত হন অন্তত ৫০ জন।

সাহসী প্রতিরোধ
পঞ্চাশোর্ধ নাঈম রশীদ ও তার ২১ বছর বয়সী ছেলে তালহা নিউজিল্যান্ডে বাস করছিলেন ২০১০ সাল থেকে। আল-নূর মসজিদে গুলিবিদ্ধ হবার আগে হামলাকারীকে তিনি বাধা দেবার চেষ্টা করেন, যেটি ভিডিওতে দেখা গেছে।

রশীদের এই তৎপরতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে, তাকে সবাই বীর হিসেবে দেখছে। উত্তর পাকিস্তানের শহর অ্যাবোটাবাদে থাকা তার ভাই বলেন, তিনি তার ভাইয়ের কাজে গর্বিত।

"তিনি ছিলেন একজন সাহসী ব্যক্তি," বলছিলেন খুরশিদ আলম। তিনি বলেন, আমি সেখানকার লোকজনের কাছে শুনেছি... সেখানে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন বলেছেন যে তিনি সেই হামলাকারীকে থামানোর চেষ্টা করে কয়েকজনের জীবন বাঁচান।

কিন্তু তিনি একথাও বলেন যে, যদিও তার ভাইকে অনেকেই বীর হিসেবে দেখছে তারপরও ঘটনাটি তার জন্যে খুবই শোকের। ‘‘এটি আমাদের জন্যে গর্বের, কিন্তু সেই সাথে চরম ক্ষতিরও- এটা সত্যি নিজের হাতের আঙ্গুল কেটে ফেলার মতো। ‘ খুরশিদ আলম বলেন যে এই হামলার ঘটনায় তিনি খুবই ক্ষেপে আছেন।

"সন্ত্রাসীর কোনও ধর্ম নেই," তিনি বলেন। সেই সাথে এমন 'খ্যাপাটে মানুষদের' প্রতিরোধ করার কথাও দাবিও জানান।

আব্দুল আজিজের গল্প
অপর আরেকটি মসজিদ লিনউডে হামলার সময়ও একই ধরনের প্রতিরোধের ঘটনা ঘটেছে। বলা হচ্ছে সেই প্রতিরোধের পেছনে রয়েছেন আব্দুল আজিজ নামে এক ব্যক্তি।

আব্দুল আজিজ বলেন, তিনি মসজিদের বাইরে দৌঁড়ে গিয়ে বন্দুকধারীকে ধাক্কা দিয়ে পাশের একটি ক্রেডিট কার্ড মেশিনের ওপর ফেলে দেন।

সেই ধাক্কায় হামলাকারীর হাত থেকে বন্দুকটি পড়ে যায়। এরপর সে গাড়ির দিকে যায় আরও অস্ত্র নিয়ে আসতে। এসময় আজিজ হামলাকারীর বন্দুকটি কুড়িয়ে নিয়ে তার গাড়ির দিকে আঘাত করে এবং গাড়ির জানালা ভেঙ্গে ফেলে।

তারপর সেই বন্দুকধারী তার হামলা বন্ধ করে এবং কিছুক্ষণ পরেই সে গ্রেফতার হয়।


আরো সংবাদ



premium cement