১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১, ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ব্রিটিশ পাঠ্যক্রমে উপনিবেশ ইতিহাস সংযোজনের দাবি

ব্রিটিশ পাঠ্যক্রমে ঔপনিবেশিক ইতিহাস সংযোজনের দাবি - সংগৃহীত

প্রায় দুই শ' বছর ভারতীয় উপমহাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ শাসন করে ব্রিটেন। ঔপনিবেশিক ওই শাসনের ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে যুক্ত না থাকায় ব্রিটেনের ছেলে মেয়েরা ততটা জানতে পারতো না। আর এ কারনেই ব্রিটিশ পাঠ্যক্রমে দেশটির ঔপনিবেশিক ইতিহাস সংযোজনের দাবি উঠেছে। সম্প্রতি এমন দাবি জানিয়েছেন দেশটির বিরোধী দল লেবার পার্টির শীর্ষ নেতা জেরেমি করবিন। লেবার পার্টি বিরোধী দলে থাকলেও অনেক দিন ক্ষমতায় ছিল। বর্ণবাদবিরোধী হিসেবে পরিচিত লেবার নেতা জেরেমি করবিন মনে করেন ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের প্রভাব সম্পর্কে স্কুলগুলোতে পড়ানো উচিত। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

১৯৪০ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের দেশটিতে উইন্ডরাশ জেনারেশন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ১৯৭৩ সালের আগে কমনওয়েলথ নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেওয়া অনেকেও এ উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন। ব্রিটিশ সরকারের অসামঞ্জস্যপূর্ণ অভিবাসন নীতির এদের অনেকেই দেশটিতে অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছিলেন।

সম্প্রতি এমন অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড। ওই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আগামী কয়েক বছরে ১০ শতাংশের বেশি ‘অবৈধ অভিবাসী’কে যুক্তরাজ্য থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এটি ফাঁস হওয়ার জেরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২৯ এপ্রিল রাতে পদত্যাগে বাধ্য হন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রাড। নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত অভিবাসী পরিবারের সন্তান সাজিদ জাভিদ। অবৈধ অভিবাসীদের তাড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের বিষয়টি পরিচিতি পায় ‘উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারি’ নামে।

জেরেমি করবিন বলেন, উইন্ডরাশ কেলেঙ্কারির প্রেক্ষাপটে পাঠ্যপুস্তকে পরিবর্তন আনাটা এখন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কমনওয়েলভুক্ত দেশগুলো থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেওয়া লোকজনের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব অন্যায্যভাবে প্রত্যাখ্যানের বিষয়টিও উল্লেখ করেন লেবার পার্টির ওই শীর্ষ নেতা।

শিক্ষা বিষয়ক ট্রাস্ট চালুর পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলেন জেরেমি করবিন। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, এ ব্যবস্থায় স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা দাসত্ব এবং দাস বাণিজ্য মোচনের সংগ্রামের প্রভাব সম্পর্কে জানতে পারবে।

জেরেমি করবিন বলেন, ‘আমাদের সমাজে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, উপনিবেশবাদ ও দাসত্বের ভূমিকা ও উত্তরাধিকার অনুধাবনের চেয়েও এটি (পাঠ্যক্রমে ব্রিটিশ উপনিবেশের ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করা) আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

লেবার পার্টির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের ইতিহাসে কালো ব্রিটিশদের অবদান রয়েছে। বর্ণবৈষম্যবিরোধী লড়াইয়েও তাদের অবদান রয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ বিষয়টি অনুধাবন করা গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখ্য, জাতিগত পরিচয় এবং গায়ের রঙ-এর ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরির ঘোর বিরোধী লেবার নেতা জেরেমি করবিন। গত সেপ্টেম্বরে দলীয় এক অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা দেন, লেবার পার্টি ক্ষমতায় যাওয়া মাত্রই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য।

লিভারপুলে দলীয় সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, দুই রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান একটি বাস্তবতা। ফলে লেবার পার্টি ক্ষমতাগ্রহণের পরপরই যত দ্রুত সম্ভব ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। ওই সম্মেলনে ফিলিস্তিন ইস্যু, আবাসন ব্যবস্থা, স্কুল ব্যবস্থা ও উইন্ডরাশ প্রজন্মের সুবিচার সংক্রান্ত ইস্যুগুলো প্রধান্য পায়।

আরো পড়ুন : রাষ্ট্রদূত হিসেবে সিনেটের অনুমোদন পেলেন রবার্ট মিলার
কূটনৈতিক প্রতিবেদক ১৩ অক্টোবর ২০১৮, ১৯:০৪

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন পেয়েছেন আর্ল রবার্ট মিলার। শপথ গ্রহণের পর আগামী মাসে তিনি বাংলাদেশে আসবেন। এর পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করে মিলার আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নেবেন।

মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পাতায় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে আর্ল রবার্ট মিলারের সিনেটের অনুমোদনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে তিন বছর আট মাস দায়িত্ব পালন শেষে মার্শা বার্নিকাট চলতি মাসে ওয়াশিংটন ফিরে যেতে পারেন। সিনেটে মিলারের অনুমোদন চূড়ান্ত হওয়ার পর এখন বার্নিকাটের বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। পেশাদার কূটনীতিক বার্নিকাটের বয়স ৬৫’তে পড়ছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না পেলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী তিনি অবসরে যাবেন।

মিলার বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে তিনি বাতসোয়ানায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে রয়েছেন। মিলার ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে কনস্যুল জেনারেল ছিলেন। তিনি দিল্লি, বাগদাদ ও জাকার্তায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মিলার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে কূটনীতিক নিরাপত্তা সেবাও কাজ করেছেন।

১৯৮১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মিলার যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন সেনা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং ইউনাইটেড স্টেটস মেরিন কর্পস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

মিলার স্টেট ডিপার্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর হিরোইজমসহ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। সামরিক বাহিনীর একাধিক পুরস্কারেও তিনি ভূষিত হয়েছেন। মিলার ইংরেজি ছাড়াও ফরাসি, স্প্যানিশ ও ইন্দোনেশীয় ভাষা জানেন।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল