২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

নারী অধিকার-বিষয়ক সনদ থেকে কেন বেরিয়ে গেল তুরস্ক

নারী অধিকার-বিষয়ক সনদ থেকে কেন বেরিয়ে গেল তুরস্ক -

নারী অধিকার নিয়ে ইউরোপের ঐতিহাসিক এক সনদ থেকে তুরস্ক নিজেকে প্রত্যহার করে নেবার পর এর নিন্দা করেছে ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা।

কাউন্সিল অব ইউরোপের সেক্রেটারি জেনারেল মারিয়া বুরিচ বলেছেন, আঙ্কারার এই সিদ্ধান্ত তুরস্কের ভেতর এবং বাইরে নারীদের সুরক্ষার পরিপন্থী।

ইস্তাম্বুল সনদ নামে পরিচিত ইউরোপীয় এই চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দেশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে যে, তাদেরকে ‘বৈবাহিক সম্পর্কের ভেতরে ধর্ষণ’ এবং ‘মেয়েদের খৎনা রোধ’সহ নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে আইন তৈরি করতে হবে।

এতে পারিবারিক সহিংসতা রোধ ও তার বিচারের কথাও আছে। কিন্তু তুরস্কের রক্ষণশীলরা বলছেন, এই সনদে যে নারী-পুরুষের সাম্যের কথা বলা হয়েছে তাতে ‘পরিবারকে হেয় করা হয়েছে।’

তা ছাড়া এতে যৌন-অভিরুচির জন্য কারো বিরুদ্ধে বৈষম্য না করার কথা আছে যা তাদের ভাষায় ‘সমকামিতাকে উৎসাহিত করে’ বলে রক্ষণশীলরা বলেন।

তুরস্কের পরিবার বিষয়ক মন্ত্রী জেহরা জুমরুট তুরস্কের ওই সনদ থেকে বেরিয়ে যাবার কোনো কারণ দেখাননি, তবে বলেছেন, তার দেশের সংবিধানে নারীর অধিকার সংরক্ষিত রয়েছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুল সনদ ত্যাগের বিরুদ্ধে ওই শহরের নারীরা বিক্ষোভ করেছেন।

তবে দেশটির বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির একজন নেতা গোকচে গোকচেন টুইট করেন, সনদটি ত্যাগ করার অর্থ হলো তুরস্কে ‘নারীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রাখা এবং তাদের হত্যার শিকার হতে দেয়া।’

তুরস্কের একটি সংগঠনের হিসেব মতে গত বছর সেখানে কমপক্ষে ৩০০ নারী হত্যার শিকার হয়েছেন এবং আরো বেশি নারীকে সন্দেহজনক অবস্থায় মৃত পাওয়া গেছে। আঙ্কারায় ২০১৮ সালে সুলে সেত নামে এক তরুণীর ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

আক্রমণকারীরা তাকে এক বহুতল অফিস ভবনে ধর্ষণের পর জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেয় যাতে তা আত্মহত্যা মনে হয়।

তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান প্রায় দু-দশক ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন এবং তার সমালোচকরা তার বিরুদ্ধে দেশটির ধর্মনিরপেক্ষ বৈশিষ্ট্যহানি এবং সামাজিক রক্ষণশীলতা প্রসারের অভিযোগ এনে থাকেন।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement