২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

তুরস্ক-ইউরোপ বিরোধ বাড়ছে; জার্মানি-ফ্রান্সের হুমকির জবাব দিল আঙ্কারা

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান - ছবি : সংগৃহীত

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুস ওগলু বলেছেন, 'ভূমধ্যসাগরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামরিক অভিযান এবং এর প্রতি লিবিয়ার বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতারের সমর্থন লিবিয়ায় স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা।'

তিনি স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অরানচা গুঞ্জালেসের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভূমধ্যসাগরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সামরিক অভিযান ও এর প্রতি খলিফা হাফতারের সমর্থনের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এর ফলে লিবিয়ায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক উপায়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।

বাস্তবতা হচ্ছে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে সাইপ্রাস দ্বীপ থেকে লিবিয়া পর্যন্ত বিশাল অঞ্চল জুড়ে তুরস্কের তৎপরতার ফলে ইউরোপীয় সরকারগুলো খুবই অসন্তুষ্ট এবং উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

তুরস্ক সরকার একদিকে, পূর্ব ভূমধ্যসাগর এলাকায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন কর্মসূচি জোরদারের মাধ্যমে এই এলাকার নিজের প্রভাব ধরে রাখার চেষ্টা করছে এবং অন্যদিকে লিবিয়ায় ফাইজ আল সেরাজের নেতৃত্বে ন্যাশনাল ওয়াফাক সরকারের সঙ্গে দুটি চুক্তি সই করে আঙ্কারা নজিরবিহীনভাবে লিবিয়ায় তাদের উপস্থিতি বজায় রাখার পদক্ষেপ নিয়েছে।

গত প্রায় এক বছর ধরে তুরস্ক সরকারের এ ধরণের তৎপরতার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের দেশ গ্রিস ও সাইপ্রাস দ্বীপ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশও তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাগুলো গত দুই বছর ধরে তুরস্কের কর্মকাণ্ডকে উস্কানিমূলক বলে অভিহিত করেছে। এ কারণে তুরস্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সমালোচনা দিন দিন বেড়েই চলেছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যদি তুরস্কের এসব পদক্ষেপের ব্যাপারে উপযুক্ত জবাব না দেয় তাহলে তারা অনেক বড় ভুল করবে।

তিনি বলেন, পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের তৎপরতা ইউরোপের স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর এবং প্যারিস আঙ্কারাকে এ সুযোগ কখনোই দেবে না।

এদিকে, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীও তুরস্ককে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, আঙ্কারা যেন এ অঞ্চলে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকে।

ইউরোপের এসব হুমকির জবাবে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, 'পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের অনুসন্ধানী জাহাজের তৎপরতার ব্যাপারে কারো অনুমতি নেয়ার প্রয়োজন আমাদের নেই। আমরা আন্তর্জাতিক আইন মেনে এবং আমাদের নিজস্ব সমুদ্র এলাকার মধ্যে থেকেই তেল, গ্যাস অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।'

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ধারণা করা হচ্ছে, লিবিয়ায় অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের বিষয়টি তদারকির অজুহাতে ইউরোপ ভূমধ্যসাগর এলাকায় সামরিক অভিযানের উদ্যোগ নিয়েছে। এ কারণে তুরস্ক ইউরোপের সমালোচনা করেছে।

এ অবস্থায় তুরস্কের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে উত্তেজনা নয় বরং তুরস্ক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে আরো বেশি পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। পার্সটুডে


আরো সংবাদ



premium cement