সিরিয়ায় তুরস্কের সামনে রাশিয়াকে না আসার আহ্বান এরদোগানের
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ মার্চ ২০২০, ১০:৪২
চলতি সপ্তাহে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইদলিবে সরকারি বাহিনীর হামলায় তুরস্কের ৩৪ সৈন্য নিহত হওয়ার পর সিরিয়ায় রাশিয়াকে সরে দাঁড়াতে বলেছে আঙ্কারা। সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে এককভাবে তুরস্কের মোকাবেলা করতে দিতে রাশিয়াকে সরে যাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন বলে শনিবার জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান।
বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইদলিব পুনরুদ্ধারের জন্য সম্প্রতি রাশিয়ার বিমান শক্তির সমর্থন নিয়ে বড় ধরনের অভিযান শুরু করেছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। ইদলিব তুরস্কের সমর্থিত বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা সিরিয়ার শেষ ভূখণ্ড। উত্তেজনা প্রশমনে আঙ্কারা ও মস্কোর সৌজন্যে শুরু হওয়া কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর যেকোনো সময়ের চেয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার অনেক কাছে চলে এসেছে তুরস্ক।
শুক্রবার ইদলিবের সারাকেব শহরের কাছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর মিত্র হিজবুল্লাহ গেরিলাদের সদর দফতরে ড্রোন ও স্মার্ট পেণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে তুরস্ক। এতে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ৯ সদস্য নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে। এটি সিরিয়ায় হিজবুল্লাহর ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি বলে দামেস্ক সমর্থিত আঞ্চলিক জোটের এক কমান্ডারের ভাষ্য।
গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্কের হামলায় দামেস্কপন্থী মোট ৪৮ জন সেনা নিহত হয়েছে বলে লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক গোষ্ঠী সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে। ইস্তাম্বুলে এক বৈঠকে এরদোগান জানান, এক ফোন কলে পুতিনকে তিনি এক পাশে সরে দাঁড়াতে এবং তুরস্ককে সিরিয়া সরকারের সাথে এককভাবে ‘যা করা দরকার তা করতে দিতে’ বলেছেন। তুরস্কের এখনই সিরিয়া ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান তিনি।
এরদোগান বলেন, ‘(সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের) দাওয়াত পেয়ে আমরা সেখানে যাইনি, আমরা গিয়েছি, কারণ সিরিয়ার জনগণ আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সিরিয়ার জনগণ, ‘ঠিক আছে, কাজটি হয়েছে,’ বলা না পর্যন্ত আমাদের ছেড়ে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই।’
উত্তেজনা বাড়ার পর থেকে রাশিয়া ও তুরস্ক তিনবার আলোচনায় বসেছে, প্রথম দুই বৈঠক থেকে অস্ত্রবিরতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহের বৈঠকে ইদলিবে সামরিক পদপে অব্যাহত রেখে উত্তেজনা হ্রাস করার বিষয়ে দুই পরে মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিমান হামলায় তাদের সৈন্য নিহত হওয়ার পর তুরস্ক জানায়, তাদের এখানে থাকা অভিবাসীদের ইউরোপে যাওয়ার জন্য সীমান্ত খুলে দিবে তারা। শনিবার ইস্তাম্বুলে এরদোগান জানান, ১৮ হাজার অভিবাসী সীমান্ত অতিক্রম করেছে এবং এই সংখ্যা শনিবারই ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজারে পৌঁছে যেতে পারে। তবে তিনি নিজের দেয়া তথ্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ দাখিল করেননি। শনিবার তুরস্কের গ্রিস সীমান্তে জড়ো হওয়া অভিবাসীরা তাদের গ্রিসে প্রবেশের করতে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করার সময় তাদের লক্ষ্য করে কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ে গ্রিস পুলিশ।
এরদোগান বলেন, ‘আসছে দিনগুলোতেও আমরা (সীমান্ত) গেটগুলো বন্ধ করব না আর এটি অব্যাহত থাকবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) তার প্রতিশ্রুতি রাখতে হবে। আমরা এত শরণার্থীকে পালতে, খাওয়াতে পারব না।’ শরণার্থীদের জন্য তুরস্ককে হস্তান্তর করা ইইউয়ের তহবিল খুব ধীরে ধীরে আসছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। রয়টার্স।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা