সিরিয়ায় তুরস্কের ধৈর্যের সীমা ফুরিয়ে আসছে : এরদোগান
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৪৮
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান গতকাল বুধবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘সিরিয়ার ইদলিবে তুর্কি পর্যবেক্ষণ ঘাঁটিগুলোর চারপাশে সিরীয় সেনাদের অবস্থান সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে আঙ্কারার চূড়ান্ত সময়সীমা দ্রুত ঘনিয়ে আসছে।’ ‘এ বিষয়ে তুরস্কের ধৈর্যের সীমা ফুরিয়ে আসছে’।
ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপার্টি) সংসদীয় দলের সভায় এরদোগান ইদলিবের চলমান সঙ্কটের সমাধান খুঁজতে তুরস্কের দৃঢ় সঙ্কল্পের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘তুরস্ক যখন সিরিয়ার ইদলিবের মানবিক সঙ্কট নিরসনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তখন রাশিয়া পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবনে অস্বীকার করেছে।’ এরদোগান আরো বলেন, ‘তুরস্ক সরকারি বাহিনীকে তাদের আক্রমণ যত শিগগির সম্ভব শেষ করার এবং তুর্কি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলো থেকে সেনা পেছনে সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়েছে’।
এরদোগান বলেন, ‘সিরীয় সরকারকে দেয়া আমাদের সময়সীমা শেষ হতে চলেছে।’ ‘মাস শেষ হওয়ার পর আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তার জন্য যা করার করব।’ ‘তুরস্ক কোনোভাবেই পিছিয়ে আসবে না এবং সরকারি বাহিনীকে নির্ধারিত অঞ্চল থেকে পিছু হঠতে বাধ্য করবে।’ এ দিকে গতকালই তুরস্ক ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা ইদলিব সঙ্কট সমাধানের জন্য একটি বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এরদোগান সিরিয়ার সরকারকে অব্যাহতভাবে সমর্থন দেয়ার জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করেন। রাশিয়ার সমর্থনের কারণেই ইদলিবের পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে।
সিরিয়া ইস্যুতে তুরস্ক ও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা দুই দফা বৈঠক করেও চূড়ান্ত সমাধানে আসতে ব্যর্থ হয়। তুর্কি কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ইদলিবের বিষয়ে রাশিয়ার প্রস্তাব নিয়ে অসন্তুষ্ট। সম্প্রতি ইদলিবে আসাদ বাহিনীর হামলায় ১৩ তুর্কি সেনা নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলোচনায় বসেন রাশিয়া ও তুর্কি প্রতিনিধিরা।
গত মঙ্গলবার এরদোগান জানিয়েছেন, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা নিয়ে সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে এখন পর্যন্ত রাশিয়া, জার্মানি ও ফ্রান্সের সাথে পূর্ণাঙ্গ কোনো চুক্তি হয়নি। এএফপি জানিয়েছে, মঙ্গলবার আজারবাইজান সফরে যাওয়ার আগে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান।
এরদোগান বলেছেন, ‘ফরাসি প্রেসিডেন্টের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে আমার ইদলিব ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কোনো চুক্তি হয়নি।’
এর আগে গত শনিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, আগামী ৫ মার্চ সিরিয়া ইস্যুতে রাশিয়া, ফ্রান্স এবং জার্মানির নেতাদের সাথে সম্মেলন আয়োজন করা হবে। এটি মূলত ইস্তাম্বুলে নয়তো আঙ্কারায় অনুষ্ঠিত হবে। এরদোগান বলেছেন, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীকে হটাতে তুর্কি সেনারা যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত। প্রয়োজনে আমরা পদাতিক ও বিমান বাহিনীর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করব। তা ছাড়া চলতি মাসের শেষ নাগাদ আমাদের ঘাঁটির চারপাশ থেকে তাদের সরিয়ে দেয়া হবে।
এরদোগান আরো বলেন, ইদলিবে রুশ ও সিরীয় বাহিনী সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তারা এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকলে ইদলিবের বাইরেও সিরীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালাবে তুরস্ক।
বিশ্লেষকদের মতে, রুশ সমর্থিত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নির্দেশে সম্প্রতি বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি ইদলিবে জোরালো সেনা অভিযান শুরু হয়। আর এতেই নতুন করে শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট এরদোগান সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও সাঁজোয়া যান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। সূত্র : ডেইলি সাবাহ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা