২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

চিকেন গ্রিল

-

গ্রামের চাচাতো ভাই এবারই প্রথম ঢাকায় বেড়াতে এসেছে। তাকে পুরো ঢাকা ঘুরিয়ে দেখার দায়িত্ব পড়েছে আমার কাঁধে। সকাল-সকাল বেরিয়ে পড়লাম। একটার পর একটা জায়গা তাকে নিয়ে ঘুরতে লাগলাম।
চিড়িয়াখানা দিয়ে শুরু। কী দেখাইনি তাকে, দেখিয়েছি সাপ, হাতি, ঘোড়া, গরু। তবে তার মনে ধরেছে শুধু প্রথম খাঁচার বানরগুলো। সে তো রীতিমতো বানরগুলোর সাথে কথা বলল। আদর করে পপকর্ন ছুড়ে মারল। সে বানরগুলোর প্রতি এত ভালোবাসা দেখালেও বানরগুলো তার কোনো প্রতিদান দিলো না। পপকর্নগুলো তো খেলোই না। বরং পা দিয়ে পিষে একজন গিয়ে আরেকজনের উকুন বাছতে থাকল।
সে যাই হোক, গল্পটা যদি এখানে শেষ হতো ভালোই হতো। কিন্তু না! গ্রামের চাচাতো ভাই সে যে সে মানুষ না। তার খুব ইচ্ছা ছিলো জাদুঘর দেখবে। তাই তাকে মিরপুর থেকে নিয়ে গেলাম শাহবাগে। পুরো জাদুঘর ঘুরেও যেন তার মন ভরল না। আমাকে প্রশ্ন করল, ভাইজান জাদুঘরে তো আনলেন। শালার জাদুকর কই? মেলা টেহা খরচ কইরা আনলেন। আমগো কী জাদু দেহাইবো না? উত্তর নেই আমার কাছে। ইচ্ছে হচ্ছিলো গলায় রশি বেঁধে ঝুলে পড়ি কচু গাছে।
জাদুঘরের পাঠ চুকিয়ে, তাকে নিয়ে গেলাম কচুক্ষেতে। খুঁজে এক বড় রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়লাম আমরা। যদিও শীতকাল, তবুও অনেক গরম। ওয়েটার নিয়ে এলো খাতা-কলম।
- স্যার কী আনব আপনাদের জন্য? করে আমার জীবন ধন্য!
আমি চাচাতো ভাইকে প্রশ্ন করলাম, কী খাবে তুমি? তার উত্তর, যা মন চায় খাওয়ান। আমি কী জানি! আমি আর মাথা খাটাইনি। ফটাফট ওয়েটারকে বলে দিলাম- দুটো কোয়াটার উইথ নান।
ওয়েটার চলে যেতেই আমার চাচতো ভাই সামনের দিকে ঝুঁকে বলল, আচ্ছা ভাইজান, আমি যতদূর পড়াশোনা করছি ততদূর জানি যে কোয়াটার মানে হইল বাড়ি। ঢাকায় আজকাল আপনেরা বাড়িঘরও খাওয়া শুরু করছেন নাকি?
হাসব নাকি কাঁদব সে উত্তর খুঁজে সময় নষ্ট না করে আমি হাসা শুরু করে দিলাম।
- হাহাহা। নাহ ভাইয়া এই কোয়াটার সেই কোয়াটার না?
- তাইলে?
- জাস্ট চিল! এটা হলো কোয়াটার গ্রিল!
- ওয় মোর জ্বালা! কী কন এগুলা। এই কইলেন কোয়াটার। এখন কন গ্রিল! আমারে কি ভাত খাওয়াইতে আনছেন? নাকি বাসা-বাড়ি, রড-সিমেন্ট?
- আরে বোকা চিকেন কোয়াটার গ্রিল।
- হায় আল্লাহ কন কী এইডা? আমাগো মুনসি বাড়ির কালাইম্মার তো এই রোগ হইছিল চিকেন ফক্স না মক্স কী জানি একটা।
- হাহাহা। ওইটা চিকেন পক্স আর এটা চিকেন গ্রিল।
- না না! খামু না আমি এইসব। থাকুম না আপনার লগে। আপনে সকাল থেইকা মজা লইতাছেন আমার লগে। আপনি থাকেন বইসা। আমি বাড়ি যাইগা।
গ্রামের সেই চাচাতো ভাই, সত্যি সত্যি খেল দেখাল। চেয়ার ছেড়ে উঠে, দিলো দৌড় কোনো রকম লুঙ্গি গুছিয়ে।
ওয়েটার চিকেন গ্রিল ঠিকই আনল। কিন্তু আমাদের ভাগ্যে নাহি জুটল। চাচাতো ভাই সামনে। আমি তার পেছনে। ছুটছি তো ছুটছি। ভয়ের চোটে সে দৌড় থামাচ্ছে না। আমিও তাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে থেমে যেতে পারছি না।

 


আরো সংবাদ



premium cement
শখের বশে কমলা চাষে সফল রানা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শ্রমিকদের অবরোধ পাহাড়ি খাদ্যসংস্কৃতিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ : শিশুসহ দগ্ধ ৭ সাবেক প্রধান বিচারপতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আজ সুপ্রিমকোর্টের বিচারকাজ বন্ধ ফিরছেন শান্ত, অপেক্ষা বাড়ছে মুশফিকের জন্য পিক‌নিকের বা‌সে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু : পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তাসহ বরখাস্ত ৭ কুয়াশায় ঢাকা কুড়িগ্রাম, তাপমাত্রা ১৫.৬ ডিগ্রি ‘স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদমুক্ত দেশ গড়তে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে’ রাশিয়ায় শিক্ষার্থীদের ‘নির্মমভাবে’ গ্রেফতারের বিরুদ্ধে ইরানের প্রতিবাদ সাবেক প্রধান বিচারপতি রুহুল আমিন আর নেই

সকল