এখানে সিঙ্গাড়ার সাথে পেঁয়াজ দেয়া হয়
- ইরফান তানভীর
- ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
সেদিন বাজারে গিয়ে রৌদ্রকে বললাম, চলো কিছু খাই।
রৌদ্র বলল, চল।
আমরা দুই বন্ধু বাজারের সবচেয়ে বড় হোটেল হোটেল গিলানিয়াতে যাওয়ার জন্য মনস্থির করলাম! এর মধ্যেই ঘটে গেলো অবাক করা ঘটনা। ঠিক আমাদের পাশ কাটিয়েই একটি বিশাল মিছিলের মতো বহর এগিয়ে যাচ্ছে। তারা ওলি ভাই জিন্দাবাদ, ওলি ভাই জিন্দাবাদ, করে করে আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে তুলছে। আমি রৌদ্রের মুখে হা করে তাকিয়ে বললাম, কী রে দোস্ত, নির্বাচন তো অনেক আগেই শেষ! এটা কিসের মিছিল?
রৌদ্র অট্টহাসি দিয়ে ঢলে পড়তে পড়তে বলল, তুই দেখি সাম্প্রতিক কোনো জ্ঞানই রাখস না! এইটা হলো অভিবাদন মিছিল। বাজারের ওলি মিয়া তার ছোট্ট হোটেলটাকে রীতিমতো বালাখানা বানিয়ে ফেলেছে। জানোস না? বাজারে এখন টক অব দ্য ডে হলো পেঁয়াজ!
আমি মাথা ঝাঁকিয়ে বললাম, তা জানি।
তাহলে আর কী! ওটাই ব্যাপার। ওলি মিয়া পেঁয়াজের এমন চড়া বাজারকে জনপ্রিয়তার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন! তিনি দোকানে নতুন সাইনবোর্ড টাঙিয়ে সেখানে লিখে দিয়েছেÑ ওলি মিয়ার ঝাল বিতান। এখানে সিঙ্গাড়ার সাথে পেঁয়াজ দেয়া হয়। ব্যস কেল্লা ফতে!
এরপর থেকে ওলি মিয়ার দোকান রীতিমতো মিরপুর গ্যালারিতে পরিণত হয়। ভাবতে পারস, দেশের লাখোপতি থেকে শুরু করে কোটিপতিরা যেখানে পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করে দিচ্ছেন সেখানে ওলি মিয়া সিঙ্গাড়ার সাথে পেঁয়াজ দিচ্ছেন একদম ফ্রি!
এরপর যা শুনলাম তা আরো বিস্ময়কর। ওলি মিয়ার নাকি সামনের বছর ইলেকশন করবে। এ সুযোগে বিশাল জনমত তার আয়ত্তে পুড়ে নিচ্ছেন!
কথা বলতে বলতে আমরা হোটেল গিলানিয়ার সামনে এসে দাঁড়ালাম। কী করুণ হাল হয়েছে বাজারের সেরা হোটেলটির! বলতে গেলে প্রায় লোকশূন্য। হোটেল মালিক রমিজ সওদাগর আহত দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে! বাঁদিক থেকে ঘুরে ঘাড় ফিরালাম, ওলি মিয়ার বিখ্যাত দোকানটার দিকে। সত্যি তিল ধরারও সামান্য ঠাঁই নেই ভেতরে! বাইরে বিশাল সিরিয়াল অপেক্ষা করছে, কখন সুযোগ আসবে পেঁয়াজসহ সিঙ্গাড়া খাওয়ার।
পেঁয়াজের কথা মনে হতেই আমরাও ওলি মিয়ার দোকানে ছুটে গেলাম।