দুইমুখী সমস্যা
- রুহুল আমিন রাকিব
- ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ময়নার মায় কথা কয় না আমার সাথে। তাও কম করে হলেও লাল শনিবার থেকে তো হবেই! তার থেকেও বেশি দিন হতে পারে। ময়নার মায়ের হঠাৎ করে কী হইল? এই টেনশন করতে করতে অহন আমায় মরণ শুধু কাছেই ডাকে। সে যাই হোক, ময়নার মায় গোল্লায় যাক! হঠাৎ এক ছোট্ট ভাইয়ের ফোনÑ আমার ফোনটার আবার শব্দ দূষণ সমস্যা ক’দিন ধরে। মানে হলো গিয়ে ফোনের ভলিয়ম না বাড়ালে কথা শোনা যায় না। ফোন রিসিভ করে সমস্ত মুখ হ্যাঁ করে বললাম, হ্যালো ছোট্ট ভাই। কিয়া খবর তোমার, ভালা আছোনি?
আমার কথা ছোট্ট ভাই শুনতে পারে কি না কে জানে? ওর মতো করে ও বকবক করেই যাচ্ছে। আই আমার মতো করেই বক বক করতাছি। ফোনে কথা বলার সময় হাত এদিক-ওদিক ছড়াই দিয়া কথা বলার ভঙ্গি দেখে। আশপাশের ব্যাগগুন মানুষ ভয়ে একদম জবুথবু অবস্থা!
সে যাই হোক, অনেক সময় দুইজনে আবোলতাবোল বকবক করার পরে যখন ছোট্ট ভাইরে কথার লাইনে আনলাম। তহন ছোট্ট ভাইয়ের কথা শুইনা আমি পড়লাম মহাবিপদে! কী জবাব দেবো ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না।
ছোট্ট ভাই হের ফোনের ওইপাশ থাইকা মোরে কইল, ভাইজান ঢাকা আইসা তো ফাঁইসা গেছি।
আমি বললাম, এতো ভণিতা না করে বুকে এক দলা থুথু লাগাইয়া সাহস করে কইয়া ফেলা কী কইতে চাস?
আমার এহেন উৎসাহ পাইয়া ছোট্ট ভাই বলল, ভাই আপনি তো ভালো কইরা জানেন আই ব্যাচেলর মানুষ। লেখাপড়া করছি বহুত বছর ধরে।
ওই পড়ালেখা করতে যাইয়া আজ অবধি মোর কপালে একখান মাইয়াও জুটল না। মোর থাইকা পাঁচ বছরের ছোট্ট ছাওয়াল, হের ঘরেও এহন তিন-তিনটা পোলা-মাইয়া। অথচ এই পড়ালেখা করার কারণে আমার কপালে বউ জুটল না এখনো। আমি বললাম, এহন সমস্যা কী? পড়ালেখার গুষ্টি উদ্ধার করাত শেষ! শুনলাম তুমি নাকি এহন ঢাকা শহরে থাক। চাকরির লাইগা ওই ঢাকার বুকে পা রাখছো? এহন মন দিয়া চাকরি করো। কয় মাস পরে বাড়ি আসলে তোমারে পরীর মতো একখান জব্বর মেয়ে দেইখা বিয়ে করাই দিমু। আজকাল চাকরির কথা শুনলে, শ্বশুরের পোলারা, মাইয়া সাইদা দেয়! শুধু তাই নয়, লগে একখান মোটর বাইকও দেয়।
আমার কথা শেষ হতে না হতে এবার কাঁদো কাঁদো স্বরে ছোট্ট ভাই বলল, আরে রাখেন তো আপনার বকবক।
ছোট্ট ভাইয়ের এমন রকম কর্কশ কণ্ঠ শুনে আমি বললাম, তো কী সমস্যা বলবে তো?
এবার ছোট্ট ভাই বলল, ঢাকা শহরে আইছি চাকরি খুঁজতে।
চাকরি করতে গেলে তো বাসা ভাড়া লইয়া থাকতে হবে, তাই না?
আমি বললাম, জি। বাসা ভাড়া তো লইতে হবেই।
এবার ছোট্ট ভাই বলল, বাসার মালিকেরা বলে, ব্যাচেলর বাসা ভাড়া দেয়া হয় না। এখন আপনি বলেন, কী করব? কোন পথে যাবো বলেন? গ্রামের লোকে মেয়ে দেয় না চাকরি নেই বলে। আর শহরের লোকে বাসা ভাড়া দেয় না বউ নেই বলে। এখন আমি কী করব? আমারে কিছু একটা বলেন।
ছোট্ট ভাইয়ের এমন প্রশ্ন শুনে আমি উত্তর খোঁজার জন্য একটু অপেক্ষা করলাম ফোন কানে ধরেই। তবে উত্তর আর বলা হলো না। কারণ, তার অনেক আগেই ফোন কাইটা গেছে। আমি হেইডা খেয়াল করি নাই। মনে হয় ছোট্ট ভাইয়ের সিমে টাকা নাই। নয়তো ওর প্রেমিকা উষ্ঠা মারতাছে, এতক্ষণ ফোন ওয়েটিং দেখে। হ