দেড়গুণ
- পাভেল হোসাইন ইমরান
- ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
ঝাক্কাসদাকে একটি টিভি চ্যানেলের বিশেষ শোতে আমন্ত্রণ জানানো হলো। দাদা ১০ দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে থাকলেন। এত বড় জায়গায় যাবেন, সাদামাটাভাবে গেলে হবে নাকি! প্রেসটিজের একটা ব্যাপার আছে না!
দাদা দুইবার সেলুনে গেলেন। তিন চারবার চুলের এক একটা কাট দিলেন। লন্ড্রির দোকান থেকে গোটা কয়েক জামা কাপড় ওয়াশ করিয়ে ইস্ত্রি করিয়ে আনলেন। অনুষ্ঠানের দিন সেগুলো থেকে যেটায় তাকে বেশি মানাবে তিনি সেটাই পরে যাবেন। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত জুতো জোড়া কয়েকবার কালিমোচা করালেন যেন ক্যামেরার লাইট জুতোর উপর পড়লে তা চিকচিক করে ওঠে। এমন আরো অনেক কিছু। তিন কথায়Ñ যা যা প্রয়োজন। তার চেয়ে অতিরিক্ত, সবকিছুই হাজির।
সবই প্রস্তুত ছিল, শুধু যাওয়ার দিন যাতায়াতের বেলায় গণ্ডগোলটা লেগে গেল। গ্যারেজে দাঁড়িয়ে যখন দাদা তার খসে পড়া ভটভটিটার দিকে তাকালেন, তখন তার মনে পড়ল এর কথা তো তিনি ভুলেই গিয়েছিলেন। শিট, এখন কী হবে! এটা নিয়ে গেলে তো প্রেসটিজের ফালুদা হয়ে যাবে। লোকে বলবেÑ উপর দিয়ে ফিটফাট তলা দিয়ে আরিচাঘাট। নাহ আজ এত সুন্দর বেশ ভুসার সাথে এই ভটভটিটা ঠিক মানাবে না।
এসব ভাবতে ভাবতে দাদার মনে পড়ে গেলো তার বন্ধু আজিজ সাহেবের কথা। পাশের রোডেই তার বাড়ি। দাদা চলে গেলেন সেখানে বন্ধুর কাছে। বন্ধুকে গিয়ে বললেন, দোস্ত আজ আমার একটা চ্যানেলে ইনভাইটেশন আছে। আমাকে সেখানে যেতে হবে।
Ñ তাহলে এখানে কেন এসেছিস? আমাকেও নিয়ে যাবি সাথে করে?
Ñ নারে দোস্ত। পার্টিটা সিলেক্টেড গেস্টদের জন্যে। না হয় তোকে নিতাম। আসলে আমি এসেছি অন্য কারণে।
Ñ কী কারণে?
Ñ সেখানে যাওয়ার জন্য আমার তোর গাড়িটা প্রয়োজন।
Ñ তোর না বাইক আছে?
Ñ দোস্ত এত সুন্দর জামা কাপড়ের সাথে কম দামি বাইকটা যায় না। তোর ৩০ লাখ টাকার গাড়িটা নিয়ে গেলে ভাবটা একটু বাড়বে।
Ñ এই নে ৫০ টাকা।
Ñ টাকা দিয়ে কী করব?
Ñ ৫০ টাকা দিয়ে ৫০ লাখ টাকার বাসে করে যা। ভাব আরো দেড়গুণ বেড়ে যাবে।