পশুর হাটে একদিন
- মাহবুবুর রশিদ
- ০৮ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
দিন-তারিখ মনে নেই। তখন প্রাইমারি স্কুলে ক্লাস ফাইভে পড়তাম। শুধু এটুকুই মনে পড়ে। তখন আমার সহপাঠীরা সবাই শার্টের সাথে লম্বা প্যান্ট পরলেও কেন জানি আমি লুঙ্গি পরতাম। আমার লম্বা প্যান্ট মোটেই পছন্দ ছিল না বিধায় শর্ট-প্যান্ট আর লুঙ্গি ছিল আমার সঙ্গী। লুঙ্গি পরতে অনেকটা আরাম, তবে গিট্টু দিয়ে ভালো করে লুঙ্গিও পরতে পারতাম না। তাই ইজ্জত হারানোর ভয়ে লুঙ্গি পরার সময় নিচে একটা শর্টপ্যান্ট রাখতাম। কারণ, ভাগ্য আর লুঙ্গি কার যে কখন খুলে যায় বলা মুশকিল। কোনো এক ঈদের সিজনে বাবা গরু কিনতে হাটে যাবেন। বাবার সাথে অনেক কাকতি-মিনতি করে সেদিন আমিও পশুর হাটে গেলাম। পরনে ছিল বরাবরের মতো বাঙালির ঐতিহ্যের প্রতীক লুঙ্গি আর লুঙ্গির নিচে শর্টপ্যান্ট তো আছেই। এ রকম ড্রেসআপে তখন নিজেকে অনেকটা হিরোর মতো লাগত। যা হোক কাজের কথায় আসি, বাবা মোটাসোটা দেখে একটা গরু পছন্দ করলেন। আমি গরুটি সুস্থ কি না পরখ করতে গরুর পেছনে গিয়ে লেজ ধরে টান দিলাম। ওমা, যেই মাত্র গরুর লেজ ধরে দিলাম টান সেই গরু উপহার হিসেবে আমাকে থ্রিজি গতিতে দিলো একটা লাথি। গরুর লাথিটি সোজা গিয়ে পড়ল আমার লুঙ্গি বরাবর, আর অমনি করে ধপাস করে খুলে গেল লুঙ্গি। আমি লুঙ্গি রেখে সেদিন উসাইনবোল্টের মতো দৌড়ে পশুর হাট থেকে পালিয়েছিলাম। সেদিন যদি আমার পরনে শুধুই লুঙ্গি থাকত তাহলে পশুর হাটে জনসম্মুখে ইজ্জত খুইয়ে বাড়ি ফিরতে হতো। হাটে গিয়ে বাটে পড়ার এ ঘটনাটি যখনই আমার মনে পড়ে তখনই একা একা শুধুই হাসি। পাগলের মতো হাসি।