২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

জগলুর পোয়াবারো

-

পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে মহাখুশি জগলু। সারা দেশের মানুষ যখন পেঁয়াজের ঝাঁজে অস্থির জগলু তখন শুধু হাসে আর হাসে। তার দান লেগে গেছে। ধনী হওয়া এবার আর আটকায় কে? ফুর্তিতে চায়ের স্টলের রাজনীতির আড্ডায় সাড়ম্বরে যোগ দেয় সে। রাজনীতি না বুঝেও রাজনীতি নিয়ে কথা বলে। কথা বলতে বলতে পানির পিপাসা লাগে। ঢকঢক করে পানি খায় সে। আরেক দফা অর্ডার করে লাল চায়ের। সবাইকে নিজের টাকায় চা খাওয়ায়। তার কাণ্ডকারখানায় টি-স্টলের নিয়মিত খরিদ্দারেরা জগলুর দিকে ফিরে ফিরে তাকায়। জগলুর কথাবার্তা শুনে সবাই মনে করে, জগলু আগামী বার ভোটে দাঁড়াবে। একজন মুখ ফুটে বলে বসে, জগলু তুই ভোটেত দাঁড়াবু নাকি?
জগলু হেসে বলে, আমারে কী বোকায় পাইছে যে মাইনক্যা চিপায় পা দিমু?
সেদিন পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছে ডোমার জগলু। নিজের জন্য একটা টিকিট নিতে যায় কাউন্টারে। টাকা দিয়ে যথারীতি টিকিট নেয় জগলু। আসন বরাদ্দ করে দেয় তাকে। এরপর ট্রেনের রেগুলার প্যাসেঞ্জার জগলু মিয়াকে অফিসার বলে, বিশটা টাকা দাও চা খাবো।
জগলু ক্ষেপে যায়। সে টাকা না দিয়ে চলে যায়।
সেদিন টাকা উঠাবার জন্য ব্যাংকে গিয়েও এই রকম একটা ঘটনা ঘটেছে। ক্যাশিয়ারকে জমা দিয়েছে ছয় হাজার বিশ টাকা। হিসাবে জগলু ফেরত পাবে দুই টাকা। টাকা দুটো ফেরত পাবার আশায় সে হাত পেতে থাকে কিন্তু অফিসার টাকা ফেরত দেয়ার নাম করে না। ব্যস্ত থাকেন অন্য কাজে। জগলু স্মরণ করিয়ে দেয়, আমার দুইড্যা ট্যাকা ফিরত দ্যান। অফিসার বলে, দুই টাকা নাই আমার কাছে।
উত্তর শুনে চড়চড় করে ক্ষেপে ওঠে জগলু। জগলুর উচ্চবাচ্য শুনে ম্যানেজার সাহেব এগিয়ে আসেন। ঘটনা শুনে জগলুর দুই টাকা ফেরত দিয়ে ক্যাশিয়ারকে তুলোধনা করেন। টাকা ফেরত পায় তবু গজরাতে থাকে জগলু, ট্যাকা য্যান ছোলের হাতের মোয়া। আরে এই জগলুরে মানুষ ঠকাতে ঠকাতে ত্যানাত্যানা করি ফালাইছে। রাইত দিন রাস্তাঘাটে পড়্যা থাকি। হোট্যালের বাসিপচা খায়ে পেঁজের ব্যবসা করি। কই কেউ তো কয় না একটা ট্যাকা বেশি লে। আইজকা তোমাগের চায়ের বিল দেয়া লাগে, রিকশা ভাড়া দেয়া লাগে, ঠণ্ডামাণ্ডা খাওন লাগে। বাপরে বাপ, হাজী মহসিনের মুতো আমার য্যান রাজত্বরী আছে! কষ্টের কথা বলতে বলতে জগলুর চোখ দুটি জলে ভরে ওঠে। সম্বিত ফিরতেই লজ্জা পেয়ে চোখ মুছে নেয়। লোকে কী ভাববে? সকলে মনে করবে মাত্র দুইটি টাকার জন্য কান্নাকাটি করে জগলু।
সত্যিই এবারের খ্যাপে জগলুল হায়দার রাজত্বরী পেয়ে যায়। কিংবা পেঁয়াজের বেপারী জগলু যেন আলাদিনের চেরাগ পায়। কোনো দিন ভেড়ার গোশত খায়নি জগলু। সে কারণেই নিয়ত করেছে এবারের ঈদে ভেড়া কোরবানি দেবে। তার নিয়ত সত্যি হতে চলেছে। তার স্টক করা পেঁয়াজে কেজি প্রতি বিশ টাকা লাভ হয়। জগলুর পোয়াবারো অবস্থা। খুশির ঠেলায় সে বাড়িতে ফেরার পথে রাজমিস্ত্রি ধরে নিয়ে আসে। তাকে বারবার বলে, বাড়ির ভিতরে ইটা বালু রড সেমেট দিয়া আমারে একটা পেঁজের ভাস্কর্য বানায়া দ্যাও। লিত্যিদিন সকালে আমি ওরে দেকপো আর সালাম দিবো।
জগলুর কথা শুনে রাজমিস্ত্রি ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের জন্য জনগণের আস্থা অর্জন করাই ইসির প্রধান কাজ : রিজভী পাইকগাছা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত প্যানেলের নিরঙ্কুশ জয় কক্সবাজার সৈকতে গোসলে নেমে মৃত ১, নিখোঁজ ২ জাপান নতুন বাংলাদেশেরও বন্ধুই রয়েছে : রাষ্ট্রদূত পরীক্ষা দিতে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে হাবিপ্রবি ছাত্রলীগ নেতা প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় জয় জিম্বাবুয়ের আদানির বিরুদ্ধে এবার সমন জারি করল যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য সহযোগিতায় বাংলাদেশের বড় অগ্রাধিকার চীন : বাণিজ্য উপদেষ্টা হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধ নিহত সংস্কার কেন সবার আগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে সরকার

সকল