দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কমানোর সূত্র
- জেলী আক্তার
- ১৬ মে ২০১৯, ০০:০০
যখন বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তখন কিভাবে কম টাকায় ব্যাগ ভর্তি বাজার করতে হয় সেটা শিখিয়ে দিচ্ছে গুলটুসি। স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বলছেÑ এই শুনছো। বাজারে গিয়ে একটু ঘোরাঘুরি করবে দেখবে কোন দোকানে কেমন জিনিস, আর একটু ভাব নেবে। ভালো করে খেয়াল করবে কোনো দোকানদার সহজ সরল টাইপ। সেখানেই ঝোপ বুঝে কোপটা মারবে। তিনটা সূত্র মনে রাখবে। এতে কম দামে বেশি দ্রব্য কিনতে পারবে।
প্রথম সূত্র : দেখবে লোকটার বয়স কেমন? বিশ থেকে পঁচিশ হলে বলবে ছোট ভাই। যেহেতু তোমার বয়স ত্রিশ চলছে।
দ্বিতীয় সূত্র : দোকানদারের বয়স যদি একত্রিশ থেকে পঞ্চাশ হয় তবে বলবে বড় ভাই।
তৃতীয় সূত্র : যদি দেখ দোকানদারের বয়স একান্ন প্লাস হয় তাহলে চাচা বলতে পারো।
উপরের তিনটে সূত্র মাথায় রেখে সম্বোধন করে কথা বলবে। তবে শোনো, কথায় তো সব সময় লবণ মিশিয়ে রাখো বাজার গেলে একটু মধু মিশিয়ে যেও নয়তো পরে চৌধুরী উপাধিটা আর থাকবে না। দেনার দায়ে পথে বসতে হবে।
যা হোক, গুলটুসির এইসব পরামর্শ শুনে স্বামী ক্যাবলা চৌধুরী টাকা নিয়ে বাজারের দিকে রওনা হলো। বাজারে গিয়ে প্রথম সবজি কিনতে কাঁচা বাজারে ঢুকল। ঢুকেই বাজিমাত। বউ গুলটুসির গুলুমুলু টিপস কাজে লেগেছে। প্রথম সূত্র অনুযায়ী ছোট ভাই বানিয়ে প্রতি কেজি পাঁচ টাকা দরে পাঁচ কেজি বেগুন কিনেছে। তারপর গোশত কিনতে সেখানেও গুলটুসির তৃতীয় সূত্র কাজে লাগিয়ে চাচা বানিয়ে বিশ টাকা কম দিয়ে গোশত কিনেছে। এবার ক্যাবলা চৌধুরী মাছ কিনতে গিয়ে ভাবল, এতক্ষণ পরের বুদ্ধি খাটাইছি এবার নিজের বুদ্ধি খাটাই। সে দেখল বয়সটা বড় ভাইয়ের মতো। তাই নিজের বুদ্ধিমতে মাছ বিক্রেতাকে বলল, ভাই আপনারে আমার বড় ভাবী বড় ভাবী লাগে।
মাছ বিক্রেতা রেগেমেগে আগুন। সে ক্রুদ্ধ গলায় বলল, আপনে কি ফাইজলামি করতাছেন আমার লগে? আমি কি মাইয়া মানুষ, আপনের ভাবী ভাবী লাগে।
কিন্তু ক্যাবলা চৌধুরী ভাবল কথায় হয়তো লবণ বেশি হইছে। পকেট থেকে মধুর বোতল বের করে মধু মুখে দিয়ে আবার বলল, বড় ভাই, আপনারে আমার বড় ভাবী বড় ভাবী লাগে।
এবার মাছ বিক্রেতা মাছ কাটার বঁটি দিয়ে মারল এক কোপ। ভাগ্যিস গায়ে লাগে নাই। তবে শার্টটা পিঠের মাঝ বরাবর ছিঁড়ে গেল। তারপর মাছ না কিনেই বাড়ি ফিরল। গুলটুসি দেখে বলল, ওগো তোমার এ অবস্থা কেন?
ক্যাবলা চৌধুরী বলল, তোমার তৃতীয় সূত্রে আমি ভাইয়ের জায়গায় ভাবী বসাইছিলাম আর এর ফলাফল এটাই।
এ ঘটনা শুনে গুলটুসি হুঁশ থেকে বেহুঁশ হয়ে ধপাস করে পড়ে গেল।