ঝরঝরে বুদ্ধি
- জেলী আক্তার
- ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০
ঝন্টু মিয়া বরাবরই অঙ্কে পাক্কা। হিসাবে সহজে ভুল করেন না, কিন্তু বউ কাঁচাবাজারের নাম করে কত টাকা হাতিয়েছে হিসাব নেই। ঝন্টু মিয়া ব্যাংকের চাকরি করে তাই হিসাবটা চিনির দানার মতো ঝরঝরে তবুও বউকে কিছু বলতে পারে না। বললেই তুলকালাম ঝগড়া। আর এই ঝগড়ার ভয়ে ঝন্টু মিয়া হিসাব নেয় না। ওই দিকে বউ বেশ দিব্যি শাড়ি থাকতে শাড়ি কিনছে, আর ওয়ারড্রব ভর্তি করছে। আর অনলাইন যখনই নতুন কিছু দেখছে সাথে সাথে অর্ডার করে ফেলছে। তাই ঝন্টু মিয়া ঝগড়া-ঝাটি অধ্যায়ে না গিয়ে এখন অফিসের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করে বাজার নিয়ে বাসায় আসছে। বউ যদিও মনে মনে ভীষণ রাগান্বিত তবুও মুখ ফুটিয়ে কিছু বলছে না। কারণ তাহলে এত দিনের টাকার হিসাবটা দিতে হবে। বউ ইদানীং ইউটিউব দেখে ভালো ভালো খাবার রান্না করছে। ঝন্টু মিয়ার বুঝতে বাকি রইল না সামনে নিশ্চয়ই বাহানার বাজার লিস্ট প্রস্তুত করে রেখেছে। শাড়ি লাগবে, চুড়ি লাগবে, পায়ের হিল লাগবে, কিছু নতুন মডেলের জুয়েলারি লাগবে আরো কত কী। সব মিলিয়ে টাকা হিসাব করে দেখল পাঁচ হাজারের ঊর্ধ্বে ছাড়া হবেই না। তার চেয়ে বরং একটা ঝগড়া লাগিয়ে কয়েক দিন চুপচাপ থাকাই ভালো হবে। সে দিন তরকারিতে মসলা, ঝাল ঠিকঠাকই ছিল তবুও ঝন্টু মিয়ার অভিযোগ তরকারি ভালো হয়নি। সারা দিন ফোন নিয়ে ব্যস্ত, রূপচর্চায় মগ্ন এসব বলল তবুও বউ সহ্য করে যাচ্ছে, যদিও অন্যান্য দিন সামান্য কথায় ঝগড়া বিরাট আকার ধারণ করত। সহ্য করার একমাত্র কারণ সামনে পয়লা বৈশাখ এখন ঝগড়াঝাটি করলে কেনাকাটা হবে না। কিন্তু ঝন্টু মিয়াও যা তা বলছে। একপর্যায়ে ঝগড়া লেগেই গেল রেগে মেগে ঝন্টু মিয়ার বউ বেরিয়ে বাপের বাড়ি চলে গেল। অবশেষে ঝন্টু মিয়া নিশ্চিন্ত। এবার অন্তত পাঁচ হাজার টাকা বাঁচল।
তারপর মনস্থির করল শ্বশুরবাড়ি গিয়ে পেট পুরে খেয়ে দেয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে বউ ফিরিয়ে আনবে।