বিরিয়ানি
- জেলী আক্তার
- ০৩ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
কালু সাহেব প্রচণ্ড বুদ্ধিমান লোক। ঠিক তেমনি বুদ্ধিমতী বউ পেয়েছে। বাড়িতে মেহমান এলে কালু মেহমানের সাথে চুটিয়ে গল্প শুরু করে দেয়।
একদিন পাশের বাড়ির ব্যাপারীর মেয়ের বিয়ে। ব্যাপারী দাওয়াত দিতে এসেছে। বলল, কালু সাহেব আপনার এবং ভাবী সাহেবার দাওয়াত রইল। আগামী ২১ তারিখ আমার একমাত্র মেয়ের বিয়ে।
কথা বলতে বলতে ঘ্রাণ পাচ্ছে পাশের রুম থেকে। রান্নার ধোঁয়াও আসছে। ব্যাপারী ভাবল, ক্ষুধাও লাগছে। খাওয়াটা হবে তাহলে। কালু বলল, বাহ খুশির খবর তো।
এই বলে শুরু হয়েছে গল্প। এক কাপ চাও দেয়ার খোঁজ নেই। ব্যাপারী হতাশ হয়ে বলল, কালু সাহেব, আজ তাহলে উঠি। মেয়ের বিয়েতে আসবেন কিন্তু।
কালু বলল, আরে বসেন। আর একটু গল্প করি।
এই বলে বউকে ডাকল কালুÑ কই গো চা হলো?
প্রায় দুই ঘণ্টা পর এক কাপ চা এলো। সেটাও চিনি ছাড়া। সাথে দুইটা লেক্সাস বিস্কুট। ব্যাপারী মনে মনে প্রচণ্ড জ্বলছেন। মনে হচ্ছে ফ্রিজের পানি দরকার। ব্যাপারী বললেন, আচ্ছা ভাই উঠি এবার।
চা শেষ করেন। আপনার ভাবীর হাতের চা মুখে লেগে থাকবে?
আপনার ভাবীর ডায়াবেটিস আর আমার হাই প্রেসার। দু’জনেই নিয়ম মেনে চলি। তাই চিনি ছাড়া চা খেতে হলো।
ব্যাপারী বিড়বিড় করে বললেন, আপনিও আইসেন, আমি তেমন মনে রাখাব। বিরিয়ানি রান্না করছেন খাওয়াইলেন না।
কিছু বললেন?
না না। বললাম, চা খুব ভালো হয়েছে।
এই বলে ব্যাপারী চলে গেলেন।
২১ তারিখ কালু সাহেব এবং কালু সাহেবের বউ দু’জনেই দাওয়াতে গেল। কত খাবার চার দিকে কী সুগন্ধ; কালুর জিভে জল টলটম করছে কখন খাবার দেবে। ব্যাপারী এসে বসিয়ে দিলো তাদের। প্লেটে সাদা ভাত আর ডাল। সাথে শাক বিভিন্ন রকমের শাক, লালশাক, পুঁইশাক, পাটশাক।
পাশের একজন বলল, ব্যাপারী এই টেবিলে এ রকম আয়োজন কেন?
ব্যাপারী বললেন, কালু সাহেবের প্রেসার। চর্বিজাতীয় খাবার নিষেধ। আর ভাবীর ডায়াবেটিস তাই কয়েক প্রকার শাকের ব্যবস্থা করেছি। কালু ভাই কি খুশি হয়েছেন?
কালু বুঝতে পারল, ব্যাপারী বিরিয়ানি না খাওয়ানোর শোধ নিয়েছে। তাই বলল, হ্যাঁ অনেক খুশি হইছি।