২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মশার কবলে

-

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ নগরবাসী। অতিষ্ঠ বদরুল। এখনকার যুগের মশার সাথে আগেরকার যুগের মশার কোনো মিল নেই। দিন যত যায় মশার বেয়াদবি বাড়তেই থাকে। শরীরের এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে মশা হামলা চালায়নি। কীটপতঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বেয়াদব সম্ভবত মশা। বদরুল প্রেমিকার সাথে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে। হঠাৎ একটা মশা এসে বদরুলের কপালে বসল। হাত দিয়ে নেড়ে মশাটা সরানোর অনেক চেষ্টা করছে বদরুল। আসলে সরানো না, মোদ্দাকথা হলো মশাটা মেরে ফেলা। প্রেমিকার সাথে গভীর আলাপে বেশ ডিস্টার্ব করছে মশাটা। মশারা এত বেরসিক কেন? তারা কোনো রোমান্টিক সময় বোঝে না। তাদের কাজ কামড়ানো, তা সে যেকোনো পরিস্থিতিতেই হোক। বদরুল কিছুণ পর পর কপালে আঘাত করে মশা মারার জন্য। এ দিকে তার প্রেমিকা এ অবস্থা দেখে খুব রেগে গেল।
- বদরুল, তুমি কপাল থাপড়াচ্ছো কেন?
- মশা বসছে কপালে তাই...
- তাই বলে এতবার?
- মশা যাচ্ছে না তো তাই তাকে মারার চেষ্টা করছি।
- আমার সাথে ফাজলামি কোরো না। মূলকথা হলো, তুমি আমার ওপর সন্তুষ্ট না। এ জন্য বারবার কপালে হাত দিচ্ছো।
- জান, বিষয়টা এমন না।
এ কথা বলার মাঝেই বদরুল আবারো মশা মারার উদ্দেশ্যে কপালে আঘাত করল। যা তার প্রেমিকার চোখ এড়িয়ে যায়নি।
- বদরুল, আমি যা বোঝার বুঝে গেছি। এটা তুমি আমাকে অপমান করার জন্যই করেছ।
- না জান, তুমি ব্যাপারটা একটু বোঝার চেষ্টা করো।
মেয়েমানুষ একবার যা বোঝে সেটা থেকে তাদের সরানো মুশকিল। শুধু মশার কারণেই তাদের ব্রেকআপ হয়ে গেল।
বদরুল বহুদিন পর খালার বাসায় এলো। বেশ জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ উপলইে এসেছে বদরুল। খাবার টেবিলে বসে আছে বদরুল। হঠাৎ করে একটা মশা বদরুলের কানের ভেতর ঢুকে গেল। বদরুল আঙুল দিয়ে মশাটাকে মারার চেষ্টা করল। বেশ কিছুণ চেষ্টা করতে লাগল। বদরুল যখন কানে আঙুল দেয় অমনি মশাটা বের হয়ে যায়। বদরুলের অবস্থা দেখে অন্য লোকেরা বিরক্ত।
- ভাই, খাওয়ার সময় কান খোঁচাচ্ছেন কেন?
- কই? আমি তো মশা মারছি।
- ফাজলামি পাইছেন? ওঠেন এই টেবিল থেকে।
বদরুল অনেক চেষ্টা করেও তাদের বোঝাতে পারেনি। এভাবে খাবার টেবিল থেকে উঠিয়ে দেয়া এক বড় ধরনের অপমান।
মশারা এত বেয়াদব, তারা টয়লেটেও কামড়ায়। এটা কোনো কথা হলো? আরে টয়লেটে কেউ মজা করে যায়? এ সময়ও কামড়াতে হবে? বদরুলের প্রতি মশাদের সম্ভবত বিশেষ কোনো ােভ রয়েছে। না হলে এ রকম করার কথা নয়।
ঘুম থেকে উঠে বদরুল দেখল, তার সারা শরীরে মশার কামড়ের দাগ। না, আর বসে থাকা যাবে না। এবার এর বিরুদ্ধে নামতে হবে। বদরুল মশা নিধনের জন্য মাস্টার প্ল্যান হাতে নিয়েছে। মশা নিধনের জন্য সে সনাতন পদ্ধতি অবলম্বন করতে লাগল। আগের কালে ধূপ জ্বালিয়ে মশা দূর করা হতো। বদরুল সারা ঘরে ধূপ জ্বালিয়ে দিলো। মশা সম্ভবত বিষয়টি বুঝতে পেরেছে। ধূপ জ্বালানো অবস্থায় মশা থাকে না। কিছুণ পর মশারা একত্রে হামলা চালায়। বদরুল মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠল। না, ধূপ জ্বালিয়েও মশা যাবে না। কয়েল জ্বালালেও কোনো মশা দূর হয় না, বরং মশারা এখন কয়েলের ওপর বসে থাকে। বদরুল মশার কামড়নিরোধক লোশন লাগাল। এরপর থেকে মশার উৎপাত আরো বেড়ে গেল। বদরুল মশা নিধন করতে মোটামুটি ব্যর্থ। কী করবে আর বুঝতেও পারছে না। মাথায় একটা আইডিয়া এলো বদরুলের। দিন-রাত মশারি টানিয়ে রাখলে কেমন হয়? মশারা এত চালাক। তারা একটু ফাঁক পেলেই আক্রমণ চালায়। মশারির ভেতরেও মশাদের হামলা চলতে লাগল। বিধ্বস্ত বদরুল মশাদের উদ্দেশ করে একটা কথাই বলল, ‘কত কামড়াবি কামড়া। কত রক্ত খাবি খা। তোদের জন্য আমার সব রক্ত উৎসর্গ করলাম।’
এ কথা বলা ছাড়া বদরুল আর কী-বা বলবে? হ

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল