২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দাওয়াত

-

ছাত্রজীবন হলো অনেকটা সুতা ছাড়া ঘুড়ির মতো। যখন যা ইচ্ছে যেখানে যাওয়ার কিংবা যা করার করতে পারা যায়। লাইফের সবচেয়ে সুন্দর সময় কাটে ছাত্রজীবনে। ছাত্রজীবন শেষ করলাম বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল। এখন সে সময়কার স্মৃতি মনে পড়লে হৃদয়ে নাড়া দেয়। কখনো কখনো ভয়ও লাগে। আমরা দুই বন্ধু ছিলাম একটু ব্যতিক্রম। ব্যতিক্রম মানে আমরা একটু রুটিনের বাইরের লোক ছিলাম। দু’জনের একটা বড় ধরনের বদাভ্যাস ছিলÑ কোনো বিয়ের বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত ছাড়াই উপস্থিত হওয়া। আত্মীয়স্বজনের েেত্র একটু বিরক্ত হলেও অপরিচিত কোথাও গেলে মাঝে মাঝে বৈরী পরিবেশেও পড়তে হয়। তবে আমাদের ব্যর্থতার চেয়ে সফলতাই বেশি।
আমাদের বাসার পাশেই ছিল কমিউনিটি সেন্টার। ঝকঝক লাইট জ্বলত সবসময়। বিয়ের কিংবা জন্মদিনের কত অনুষ্ঠানে আমরা এ কমিউনিটি সেন্টারে অংশগ্রহণ করেছি তার ইয়ত্তা নেই।
বেশ সুন্দর পোশাকে বিয়ের দাওয়াত খেতে বের হলাম। আমার সাথে যথারীতি গ্রন্ধু রঞ্জুও আছে। কমিউনিটি সেন্টারে ঢুকেই দেখি জলিল স্যার বসে আছেন। সম্ভবত স্যারও দাওয়াতে এসেছেন। আমাদের দেখেই ডাক দিলেন। জলিল স্যারকে এমনিতে দেখলে ভয় লাগে। ভয়ে ভয়ে স্যারের কাছে গেলাম।
- কী, তোমরা এখানে? দাওয়াতে আসছ নাকি?
আমরা থতমত খেয়ে বললাম।
- না, স্যার এমনিতে আসলাম। এক পরিচিত লোককে খুঁজতে এসেছি।
- কমিউনিটি সেন্টারে পরিচিত লোক খুঁজতে, মানে কী?
- স্যার, আসলে একজন আমাদের কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দাঁড়াতে বলল। তাই আমরা ওয়েট করছি।
- তো, কে সে লোকটা।
খাইছেরে জলিল স্যার পুরা পুলিশের মতো জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করছে। বুঝতেছি না উনি কি বুঝতে পেরেছেন আমরা এখানে দাওয়াত খেতে এসেছি।
- স্যার, আমার এক কাজিন।
- ও আচ্ছা।
স্যারের সাথে কথা বলেই কেটে পড়লাম। মনে হয় মহাবিপদ থেকে বেঁচে গেলাম।
এর মাঝে অনেক দিন কেটে গেল। আমরা আর দাওয়াত খেতে কমিউনিটি সেন্টারে যাচ্ছি না। বেশ জাঁকজমক করে কমিউনিটি সেন্টার সাজানো হলো। নিশ্চই বড়লোক কারো ছেলে বা মেয়ের বিয়ে। আমরাও সেরকম পোশাক পরে প্রস্তুতি নিতে লাগলাম। দুই বন্ধু বেশ পরিপাটি হয়েই ঢুকলাম। যথারীতি খেতে বসলাম। সাধারণত এসব জায়গায় নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে হবে। আমরা দু’জন হাসাহাসি করছি, আশপাশে সবার সাথে কথাও বলছি। সম্ভবত এটা মেয়েদের অনুষ্ঠান ছিল। তাই আমরা মেয়ের প্রশংসা করতে লাগলাম।
- বুঝছোস রঞ্জু, মেয়েটা এত ভালো ছিল কখনো কোনো ছেলের সাথে কথাও বলেনি।
- ঠিক বলছোস, এ যুগে এরকম মেয়ে পাওয়া মুশকিল। ওর বর জিতেছে।
আমরা কথা বলেই যাচ্ছি। আমাদের টেবিলে বসা লোকগুলো বেশ কৌতূহল নিয়ে আমাদের কথা শুনছে। একজন জিজ্ঞেস করল- ভাইয়েরা কোন পরে?
- কেন? মেয়ে পরে!
- আপনারা ওর কী হন?
- কাজিন হই, কাজিন।
ছেলেটা হঠাৎ করে উঠে গেল। কলিজার মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠল।
কিছুণ পর একজন মুরুব্বিকে নিয়ে হাজির। লোকটা এসেই বলল- বের হও, বের হও!
- কেন আঙ্কেল?
- বিনা দাওয়াতে খেতে এসেছ আবার কথা বলো।
আমরা আর কথা না বাড়িয়ে খাবার টেবিল থেকে উঠে গেলাম।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গ্রেড-১ এ পদোন্নতি পেলেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ডিজি ডা. রেয়াজুল হক ‘বড় কোনো পরিকল্পনা না থাকলে এক দিনে এতগুলো ঘটনা ঘটতো না’ জুলুমের দায়ে মতিউর রহমান ও মাহফুজ আনামকে পদত্যাগ করতে হবে : হেফাজত আমির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১,৮৯০ টাকা কমেছে খালেদা জিয়ার সাথে সৌদি রাষ্ট্রদূতের বৈঠক মাওলানা আতাহার আলীকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস রচিত হতে পারে না : ধর্ম উপদেষ্টা ‘মানবিক সমাজ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি’ ছাত্র সংঘর্ষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের উদ্বেগ কোনো পত্রিকা বন্ধে চাপ প্রয়োগ সহ্য করা হবে না : তথ্য উপদেষ্টা সিলেটে ব্যবসায়ী হত্যায় বাবাসহ ২ ছেলের মৃত্যুদণ্ড ভারতে মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে নিহতের ঘটনায় জামায়াতের প্রতিবাদ

সকল