২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

কালু চাচার গরু কাহিনী

-


ভ্যাপসা গরমের কথা মাথায় রেখে কালু চাচা লুঙ্গি পরে গরুর হাটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। লুঙ্গি পরলে মুক্তভাবে বাতাস চলাচলের সুবিধা পাওয়া যায়। তা ছাড়া গরুর হাটে গোবর ছিটা থেকে বাঁচতে হাঁটুর ওপরে লুঙ্গি উঠিয়ে হাঁটা যায়। মাঝে মধ্যে ১০ নম্বর বিপদ থেকে বাঁচতে অর্থাৎ ষাঁড় আলগা হয়ে দৌড়ানি দিলে লেংটি কাছাও দেয়া যায়। কাজেই কালু চাচা বড় সাইজের একটি লুঙ্গি পরে হাটে রওনা দিলেন। জীবনে প্রথমবারের মতো গরুর হাটে যাচ্ছেন তিনি। মনে মনে বললেন, পরের ওপর নির্ভর করে আর কত? এবার নিজের গরু নিজেই কিনব।
রওনা দেয়ার আগে চাচী বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, অবশ্যই যেন দুই থেকে চার দাঁতের গরু আনা হয়। এর বেশি হলে খবর আছে।
কালু চাচা এই সতর্কবার্তা মাথায় নিয়ে হাটে রওনা হয়েছেন। আর এটা মাথায় রাখতে গিয়ে মহা বিপদে পড়লেন তিনি। শুধু মহা বিপদ নয়, রীতিমতো শাঁখের করাতও হয়ে দাঁড়াল। চাচীর কথা মতো দুই থেকে চার দাঁতের গরুও পাওয়া যাচ্ছে না। আবার বেশি দাঁতের গরু কিনলে চাচীর খরগোশ মার্কা দাঁতের ভেংচি খেতে হবে, অন্তত গোশত যত দিন থাকবে তত দিন তো অবশ্যই।
কালু চাচা হন্যে হয়ে খুঁজছেন কাক্সিত দাঁতের গরু। কিন্তু বিধিবাম। যে গরুরই মুখ হাঁ করান, দেখেন নিচের পাটিতে দাঁত গিজগিজ করছে কিন্তু ওপরের পাটিতে একটি দাঁতও নেই। কালু চাচা কপাল চাপড়ান আর মনে মনে বলেন, কার মুখ দেখে যে আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেছিলাম!
চাচার শরীর বেয়ে ঘাম ঝরছে। চান্দিটার তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। কালু চাচা জানেন, তার চান্দি অতিরিক্ত গরম হলে দু’কান দিয়ে ভুঁ ভুঁ করে শব্দ বের হয়। মাথাটা ঝিমঝিম করে। তাই তিনি চান্দির তাপমাত্রা ঠিক রাখতে হাটের পাশ থেকে তিন গ্লাস আখের রস খেয়ে নিলেন। দূর হতে লাল-কালো রঙের একটি গরু দারুণ পছন্দ হলো কালু চাচার। কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘গরু কয় দাঁতের?’
বিক্রেতা বলল, ‘দুই দাঁতের গরু।’
কালু চাচা মনে মনে বললেন, এবার মিলগা। তিনি নিজ হাতে গরুর মুখ হাঁ করিয়ে দেখলেন, নিচের পাটিতে গিজগিজে এক পাটি দাঁত কিন্তু ওপরের পাটি দাঁতশূন্য। তিনি মুখ বাঁকিয়ে দিলেন এক রাম ঝাড়িÑ ‘এই মিয়া, আমারে বোকা পেয়েছ, না? লুঙ্গি পরনে দেখে মনে করেছ ক্ষেত থেকে এসেছি! মিয়া জান? আমি বড় অফিসে ফাইল আনা-নেয়ার কাজ করি।’
কালু চাচা হাঁটতে হাঁটতে কান্ত। হঠাৎ করেই বলা নেই কওয়া নেই, এক ষাঁড় গোবর ত্যাগের কাজটি সেরে ফেলেছে সবার সামনেই। কালু চাচা ‘এই এই’ করতে করতে গোবরের কিয়দংশ এসে টপ করে বসে পড়ল তার পাঞ্জাবিতে। তিনি চরম বিরক্ত হলেন। দাঁতে দাঁত কাটলেন। বিড়বিড় করে বললেন, ‘এখন এই গোবর কী দিয়ে সাফ করি?’
তিনি হাতে থাকা বাজারের ব্যাগ দিয়ে গোবর সাফ করতে গিয়ে দেখলেন, গোবর বেটা পাঞ্জাবি তো ছাড়লই না বরং কিয়দংশ লেপ্টে গেল ব্যাগে। সবশেষে তিনি বাধ্য হলেন হাত দিয়ে পাঞ্জাবি পরিষ্কার করতে। তিনি এবার দ্বিগুণ বিরক্ত হলেন। বললেন, ‘বেয়াদব গোবর, এক জায়গা থেকে তিন জায়গায় লাগলি?’
এমন সময় তিনি পশ্চাদ্দেশে গুঁতো অনুভব করলেন। পেছন দিকে তাকাতে তাকাতে বললেন, ‘কোন শালারে?’
পেছনে তাকিয়ে তার চোখ কপালে! এ তো মানুষ নয়, জবরদস্ত এক ষাঁড়। অবস্থা বেগতিক দেখে কালু চাচা ঝেড়ে দৌড় দিলেন। কিন্তু কাল হয়ে দাঁড়াল তার লুঙ্গি। প্যাঁচ লেগে কালু চাচা ভূপাতিত। তার পরের ঘটনা তিনি মনে করতে পারলেন না। জ্ঞান ফিরে এলে তিনি নিজেকে আবিষ্কার করলেন জেলা সদরের হাসপাতালের বেডে। তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকজন লোক। কালু চাচা কাউকেই চিনছেন না। তিনি তার ছেলেকে বললেন, ‘ভাই, আমি এখানে কেন?’
বাবার মুখে ‘ভাই’ ডাকা শুনে থ বনে গেল তার ছেলে। কালু চাচার উল্টাপাল্টা কথা শুনে তার বউ এগিয়ে গিয়ে বললেন, ‘তোমার ছেলেকে ভাই ডাকছো কেন? তোমার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে!’
কালু চাচা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বললেন ,‘খালা, আপনাকে তো চিনতে পারলাম না!’

 


আরো সংবাদ



premium cement
জুলুমের দায়ে মতিউর রহমান ও মাহফুজ আনামকে পদত্যাগ করতে হবে : হেফাজত আমির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১,৮৯০ টাকা কমেছে খালেদা জিয়ার সাথে সৌদি রাষ্ট্রদূতের বৈঠক মাওলানা আতাহার আলীকে বাদ দিয়ে দেশের ইতিহাস রচিত হতে পারে না : ধর্ম উপদেষ্টা ‘মানবিক সমাজ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে বিএনপি’ ছাত্র সংঘর্ষ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের উদ্বেগ কোনো পত্রিকা বন্ধে চাপ প্রয়োগ সহ্য করা হবে না : তথ্য উপদেষ্টা সিলেটে ব্যবসায়ী হত্যায় বাবাসহ ২ ছেলের মৃত্যুদণ্ড ভারতে মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে নিহতের ঘটনায় জামায়াতের প্রতিবাদ গুগল ম্যাপ দেখে গাড়ি চালাতে গিয়ে ব্রিজ থেকে পড়ে নদীতে, নিহত ৩ গাজীপুরে বেক্সিমকো শ্রমিকদের ফের মহাসড়ক অবরোধ

সকল