২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সেদিন সেলুনে

-

আব্বা নিজের ঘরে বসে পেপারের বিনোদন পাতায় প্রকাশিত তার প্রিয় নায়িকা সুচিত্রার প্রতিবেদন পড়ছেন দেখে ভাবলাম এখন আর তাকে ডিস্টার্ব করব না। কিন্তু ডিস্টার্ব না করে উপায়ও নেই। আব্বার কাছ থেকে যে আমার এক হাজার টাকা নিতে হবে। শেষ পর্যন্ত আব্বার ঘরে ঢুকলাম। আমাকে দেখে আব্বা উৎসাহী গলায় বললেন।
‘কি রে, কিছু বলবি?’
‘ইয়ে মানে!’
‘বল!’
‘আমার এক হাজার টাকা লাগবে।’
‘কেন?’
‘একটা এতিম ছেলেকে দান করতে হবে। ছেলেটির নাকি স্কুল ড্রেস নেই। শুনে আমার খারাপ লাগল।’
‘বাহঃ, এ তো ভালো কাজ। এই নে এক হাজার টাকা।’
আব্বার দেয়া এক হাজার টাকা পেয়ে নাচতে নাচতে নিজের ঘরে চলে এলাম। এই যে এতিম ছেলেকে টাকা দান করব বলে টাকা চেয়ে আনলামÑ এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে। আব্বাকে মিথ্যে বলতে হলো। তা না হলে টাকা পেতাম না। কারণ এই টাকা দিয়ে আজ আমরা সব বন্ধু দলবেঁধে সিনেমা দেখতে যাবো। সিনেমার কথা বললে আব্বা টাকা দিতেন না, বরং উল্টো মেরে তক্তা বানিয়ে ফেলতেন।
বারান্দা থেকে দেখলাম আব্বা বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন। মিনিট দশেক পর আমিও রওনা দিলাম। বন্ধুরা আমার জন্য কলেজ রোডে অপেক্ষা করছে। আমি গেলেই সবাই সিনেমা হলের দিকে রওনা দেবে।
বাজারে কৌশিকের সেলুনের দোকানের সামনে আসতেই মনে হলো আমার শেভ করা দরকার। ঢুকলাম সেলুনে। কৌশিক ছাড়া আর কোনো কর্মচারী নেই। কৌশিক এক মনে এক মাঝ বয়সীকে শেভ করছে। লোকটার মুখমণ্ডল ফোম দিয়ে এতই ঢাকা যে তার চেহারা দেখাই যাচ্ছে না। আমি বসলাম তার পাশের চেয়ারে। লোকটার শেভের পরপরই কৌশিক আমার শেভ শুরু করবে। আমি সে সময়ের অপেক্ষায় বসে রইলাম। এরই মাঝে বন্ধু হিমেলের ফোনÑ
‘কিরে, তুই কই? তোর জন্য সবাই বসে আছে।’
‘দশ মিনিট ওয়েট কর দোস্ত। একটা সুখবর আছে।’
‘কী?’
‘এতিমকে দান করব বলে আব্বার কাছ থেকে এক হাজার টাকা উদ্ধার করলাম। আব্বা বুঝতেই পারেনি এই টাকা দিয়ে আমরা সিনেমা দেখব। আমার আব্বা অনেকটা বোকা।’
‘হা হা হা।’
লাইন কেটে দিলো হিমেল। কৌশিকের এক মনে শেভ করানো লোকটার মুখ থেকে ফোম মুছে ফেলার পর ভূত দেখার মতো আমি চমকে উঠলাম। ফোম সরানোর পর দেখলাম আমার পাশে যিনি বসে আছেন তিনি স্বয়ং আমার আব্বা। আমার জানের পানি শুকিয়ে গেল। আব্বা সব শুনছেন? মাই গড! এখন কী হবে।
তেমন কিছুই হয়নি। শেভ শেষে আব্বা আমায় অভয় দিয়ে বললেন, ‘দেখো বাবা, তোমার বয়সে আমরাও সিনেমা দেখেছি। এটা তো খারাপ কিছু না। টাকার জন্য মিথ্যে না বললেও চলত। খালি খালি পাপের পাল্লা ভারী করা ভালো কাজ নয় বাবা।’
এই বলে আব্বা সোজা সেলুন থেকে বের হয়ে গেলেন। আব্বার কথায় আমার ভেতরটা গলে গেল।


আরো সংবাদ



premium cement
রাজশাহীতে প্রথম আলো পত্রিকায় আগুন ও সাইনবোর্ড ভাঙচুর রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব আড়াইহাজারে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ১৬ শ্রম সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রগতিতে মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রশংসা আইপিএলে রেকর্ড গড়লেন ১৩ বছর বয়সী বৈভব সিলেটে ট্রাক ও বাসচাপায় নিহত ২ মানিকগঞ্জে প্রলোভন দেখিয়ে শাহাবাগে লোক নেয়ার মূলহোতা দবিরসহ আটক ৫ মধ্যাহ্নভোজের আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩ উইকেট তুলে নিলো বাংলাদেশ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলবে কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে নারীর নিহত জামায়াতের সাথে ইইউ অন্তর্ভূক্ত ৮টি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠক

সকল