০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

উইম্বলডনের ফাইনালে প্রথম আরব নারী

উইম্বলডনের ফাইনালে প্রথম আরব নারী - ছবি : সংগৃহীত

প্রথম আরব নারী হিসেবে উইম্বলডন টেনিসের ফাইনালে ওঠেছেন তিউনিসিয়ার ওন্স জাবিউর। ফলে তিনি শিরোপা জয়ের আগেই রেকর্ড করে ফেলেছেন। এবার অবশ্য উইম্বলডন মহিলা বিভাগে নতুন একজন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে। জাবিউরকে শিরোপার লড়াইতে নামতে হবে কাজাখস্তানের এলেনা রিবাকিনার। এলেনাও প্রথম কাজাখ নারী হিসেবে উইম্বলডনের ফাইনালে ওঠেছেন।

বৃহস্পতিবার যে দুই খেলোয়াড় ফাইনালে উঠলেন, তাদের কেউই খেতাব জয় তো দূরে থাক, এর আগে কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে ওঠেননি। বৃহস্পতিবার প্রথম সেমিফাইনালে তিউনিসিয়ার ওন্স জাবিউর ৬-২, ৩-৬, ৬-১ গেমে হারালেন ৩৪ বছরের তাতিয়ানা মারিয়াকে। অন্য সেমিফাইনালে কাজাখস্তানের এলেনা রিবাকিনা ৬-৩, ৬-৩ উড়িয়ে দিলেন উইম্বলডনের সাবেক চ্যাম্পিয়ন সিমোনা হালেপকে।

২০১৯ সালে এই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন হালেপ। ২০২০-তে উইম্বলডন হয়নি। ২০২১-এ চোট-আঘাতের কারণেই তিনি খেলেননি উইম্বলডনে। এ বারের প্রতিযোগিতায় শুরু থেকেই তাঁকে ট্রফির দাবিদার মনে করা হচ্ছিল। বিশেষত, গত বারের চ্যাম্পিয়ন ইগা শিয়নটেক ছিটকে যাওয়ায় সেই ধারণা আরো জোরালো হয়। তবে সেমিফাইনালে অখ্যাত খেলোয়াড়ের কাছে যে হালেপের দৌড় শেষ হয়ে যাবে, এটা কেউই ভাবতে পারেননি। এ দিন রিবাকিনার ম্যাচ জিততে মাত্র ৭৫ মিনিট লাগল।

কাজাখস্তানের প্রথম টেনিস খেলোয়াড় হিসাবে কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠলেন রিবাকিনা। ২০১৫-য় গারবিনে মুগুরুজার পর এত কম বয়সে কোনো কেউ মহিলা সিঙ্গলসের ফাইনালে ওঠেননি। ২০১৯-এ বুখারেস্ট এবং ২০২০-তে হোবার্ট বাদে এখনো কোনো ডব্লিউটিএ সিঙ্গলস ট্রফি জেতেননি রিবাকিনা। তবে ফাইনালে উঠেছেন অনেকবার। এ বছর জানুয়ারিতে অ্যাডিলেড ওপেনে হারেন তৎকালীন বিশ্বের এক নম্বর অ্যাশলে বার্টির কাছে।

দুর্দান্ত ‘এস’ সার্ভিস করার জন্য তাকে টেনিস সার্কিটে ‘এস কুইন’ নামে ডাকা হয়। এ দিন পাঁচটি ‘এস’ মেরেছেন। চলতি বছরে এই নিয়ে ২১৯টি ‘এস’ হয়ে গেল তার। শুধু তাই নয়, তার শটের বৈচিত্রও রয়েছে। হালেপের বিরুদ্ধে সেটা ভালোই বোঝা গেছে। দুরন্ত কোর্ট কভারেজ করতে পারেন। তার সঙ্গে রয়েছে নিখুঁত গ্রাউন্ডস্ট্রোক এবং শক্তিশালী ফোরহ্যান্ড। হালেপের বিরুদ্ধে তিনি ১৭টি উইনার মেরেছেন। হালেপ নিজেও ১৪টি উইনার মারেন। তবে এ দিন আটটি ডাবল ফল্ট করেছেন তিনি। তার মধ্যে দু’টি হয়েছে তার বিরুদ্ধে ব্রেক পয়েন্টে। সেমিফাইনাল পর্যন্ত একটিও সেট খোয়াননি হালেপ। সেমিফাইনালে দাঁড়াতেই পারলেন না ২৩ বছরের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

অন্য দিকে, উইম্বলডনে জাবিউরের স্বপ্নের দৌড় অব্যাহত রয়েছে। প্রথম আরবীয় নারী হিসাবে কোনো গ্র্যান্ড স্ল্যামের সেমিফাইনালে উঠেছিলেন। সেই রেকর্ড আরো উন্নত করে এ বার ফাইনালে পৌঁছে গেলেন। ট্রফি জিতলে নতুন ইতিহাস তৈরি করবেন তিনি। উল্টা দিকে যিনি ছিলেন, সেই মারিয়া দু’বার মা হওয়ার জন্য টেনিস থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। তার পরেও ফিরে এসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যে টেনিস খেলেছেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। শেষ দিকে আর টানতে পারছিলেন না। তা সত্ত্বেও ছন্দে থাকা জাবিউরের থেকে একটি সেট কেড়ে নিয়েছেন তিনি।

এই নিয়ে টানা ১১টি ম্যাচ জিতলেন জাবিউর। শেষ ২৪টি ম্যাচের মধ্যে ২২টি জিতেছেন। ১৯৬৮ সালে পেশাদার টেনিস খেলোয়াড়দের গ্র্যান্ড স্ল্যামের অন্তর্ভুক্তির পর আফ্রিকার কোনো খেলোয়াড় ফাইনালে ওঠেননি। জাবেউর দৃষ্টান্ত তৈরি করলেন। ম্যাচের পর বলেছেন, 'তিউনিসিয়ার একজন গর্বিত নারী হিসেবে আজ এখানে দাঁড়িয়েছি। জানি তিউনিসিয়ার লোক এখন পাগলের মতো উচ্ছ্বাস করছে। আশা করি আমার পারফম্যান্সের সাহায্যে আগামী প্রজন্মকে ভালোভাবেই অনুপ্রাণিত করতে পারব। শুধু তিউনিসিয়া নয়, আরব এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশ থেকে আররোটেনিস খেলোয়াড়কে উঠে আসতে দেখতে চাই। নিজের অভিজ্ঞতা ওদের সাথে ভাগ করে নিতে চাই।'
সূত্র : আলজাজিরা ও আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement