২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

‘চ্যানেলগুলো পচা আলু কিনে দর্শকদের খাওয়াচ্ছে’

বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর অনুষ্ঠানের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন অভিনয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট্ররা। - ছবি: সংগৃহীত

দেশের টিভি চ্যানেলগুলো ‘কম পয়সায় পচা আলু কিনে দর্শকদের খাওয়াচ্ছে’ বলে অভিযোগ করেছেন অভিনয়শিল্পীরা। নাটকের মানের অবনতির জন্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলোও দায়ী বলে তারা মন্তব্য করেন। তাদের অভিযোগ মান নিয়ন্ত্রণ না করেই নাটকগুলো চালানো হচ্ছে।

গত শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক সেমিনারে অভিনয়শিল্পীরা এ অভিযোগ করেন।

সেমিনারে ‘পেশাদারিত্বের সঙ্কটে দেশের টেলিভিশন নাটক ও অভিনয়শিল্প’ শীর্ষক প্রবন্ধ পড়েন অভিনয় শিল্পী সঙ্ঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান। এ নিয়ে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন অভিনয়শিল্পীরা।

প্রবন্ধে টিভি নাটকের আজকের এ অবস্থার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে টেলিভিশন ও টেলিভিশন নাটককে শিল্প ঘোষণা না করা, সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব, নাটকের মান নিয়ন্ত্রণে চ্যানেলের ব্যর্থতা কিংবা উদাসীনতা, মধ্যস্বত্বভোগীদের হস্ত—ক্ষেপ, নাটকের মূল্য কমে যাওয়া, নাটকে চরিত্রাভিনেতাদের হারিয়ে যাওয়া প্রভৃতিকে।

মুক্ত আলোচনায় অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম, অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী, মোশাররফ করিম, আফরোজা বানু, নাট্যকার বৃন্দাবন দাস ও শাহরিয়ার নাজিম জয় বক্তব্যে রাখেন।

সেমিনারে বলা হয়, দেশে নির্মিত ৮০ শতাংশ নাটক গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। এর ফলে দেশের দর্শক বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন ভারতীয় বাংলা চ্যানেলগুলো দেখে।

টিআরপি প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের রুচির ওপর ভিত্তি করে টেলিভিশনের টিআরপি নির্ধারণ করা হচ্ছে।

সেমিনারে অভিনয়শিল্পীরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট চারটি সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ অভিনেতা আবুল হায়াত ও এনামুল হক, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি মামুনুর রশীদ, নাট্যকার সঙ্ঘের সভাপতি মাসুম রেজা, সেক্রেটারি জেনারেল এজাজ মুন্না, ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক, অভিনয় শিল্পী সঙ্ঘের সভাপতি শহিদুল আলম সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম প্রমুখ।

 

আরো পড়ুন : নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে দেশে আসছেন শাবানা

নয়া দিগন্ত অনলাইন, ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ২০:০৭


নির্বাচন উপলক্ষে দেশে ফিরছেন বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণালী যুগের অভিনেত্রী শাবানা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে এমপি নির্বাচন করবে অভিনেত্রীর স্বামি ওয়াহিদ সাদিক। তার প্রচারণা কাজে যুক্ত হবেন অভিনেত্রী। এজন্য দেশে ফিরেই তিনি যাবেন যশোর। সেখানে সংসদীয় আসন ৬ (কেশবপুর) থেকে প্রার্থী হবেন তিনি। 

সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাসেই দেশে ফিরছেন কিংবদন্তি এ অভিনেত্রী। এ যাত্রায় কয়েক মাস তিনি বাংলাদেশে থাকবেন। 


শাবানার স্বামী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল বছর খানেক আগে থেকেই। বেশ কয়েকবার স্বামীকে নিয়ে কেশবপুরের সাধারণ মানুষের সাথে মতবিনিময় করেছেন। সর্বশেষ গত ১৮ জুলাই যশোর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ও স্বামীর জন্মভিটা বড়েঙ্গা গ্রামে এ মতবিনিময় করেন।

তখন শাবানা জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎকালে তিনি শাবানাকে নিবার্চন করতে বলেন। তবে তিনি নিজে এ মুহূর্তে নিবার্চনে না আসতে চাইলেও স্বামী ওয়াহিদ সাদিক যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসন থেকে নিবার্চন করবেন বলে ঘোষণা দেন।

এক সময়ের জনপ্রিয় মেধাবী অভিনেত্রী শাবানা পর্দায় নেই সেই ২০০০ সাল থেকে। কিন্তু দর্শকদের হৃদয়ে ঠিকই আছেন তিনি। মাত্র নয় বছর বয়সে ১৯৬২ সালে ‘নতুন সুর’ ছবিতে ছোট্ট মেয়ের চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে শাবানার চলচ্চিত্রে আগমন। শাবানা রত্না নামে ‘নতুন সুর’ ছবিতে অভিনয়ের পর তালাশ, সাগর, ভাইয়া সহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করলেন। ১৯৬৬ সাল থেকে নতুন পরিচয়ে সবার সামনে এলেন বিউটি কুইন শাবানা। কারণ সে বছরই ‘বনবাসে রূপবান’-এ সোনাভানের চরিত্রে নায়িকা হিসাবে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেন তিনি।

এরপর ‘চকোরি’ এবং ‘জংলি মেয়ে’ ছবি দুটিতে প্রধান নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ১৯৬৭ সালে চকোরি রিলিজের পর থেকে শাবানার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল ঢাকার বাইরে লাহোর ও করাচীতে। ১৯৬৮ সালে নায়িকা হিসেবে চাঁদ আওর চাঁদনি, ভাগ্যচক্র এবং কুলি’তে, ১৯৬৯ সালে দাগ, মুক্তি, ১৯৭০ সালে পায়েল, সমাপ্তি, ছদ্মবেশী, বাবুল, মধুর মিলন ও একই অঙ্গে এত রূপ সিনেমাতে তিনি অভিনয় করেন। সেসময় রাজ্জাক-সুচন্দা জুটির অসম্ভব জনপ্রিয়তার সময় কাজী জহিরের ‘মধুমিলন’ এর অভিনয় দেখে দর্শকরা প্রশংসা ধন্য হলেন শাবানা। দ্বৈত অনুরাগের সংঘাত ও পরিণতির উপর ভিত্তি করে নির্মিত এ ছবি দর্শকের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

শাবানা নিজে এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ‘আমার তো মনে হয় ‘মধুমিলন’ ছবিতে সম্ভবত প্রথম হৃদয়ষ্পর্শী অভিনয় দেখাতে সক্ষম হয়েছিলাম।‘ স্বাধীনতার পর আবার ছবি নির্মাণ শুরু হল। শাবানা আগের জনপ্রিয়তা নিয়ে ১৯৭২ সালেই ৮টি ছবির নায়িকা ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি ‘ওরা এগার জন’ আর কাজী জহিরের ‘অবুঝ মন’ করে সারা বাংলাদেশের দর্শকরা জেনে গেল শাবানার তুলনা হয় না। ঢাকার চলচিত্রে শাবানা একাই একশ।

শাবানা মোট ১০ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে তিনি প্রথম এই পুরস্কার পান ‘জননী’ সিনেমার জন্য। এরপর ১৯৮০, ১৯৮২, ১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৮৯, ১৯৯০, ১৯৯১, ১৯৯৩ এবং ১৯৯৪ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। তার অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে আছে ১৯৮২ সালে নাট্য নিকেতন পুরস্কার, ১৯৮২ ও ১৯৮৭ সালে বাচসাস পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে আর্ট ফোরাম পুরস্কার ও সায়েন্স ক্লাব পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে ললিতকলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে কামরুল হাসান পুরস্কার, ১৯৮৮ সালে নাট্যসভা পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে কথম একাডেমী পুরস্কার, ১৯৯১ সালে প্রযোজক সমিতি পুরস্কার এবং জাতীয় যুব সংগঠন পুরস্কার। শাবানা ১৯৭৩ সালে ওয়াহিদ সাদিককে বিয়ে করেন।

১৯৯৭ সালে শাবানা দীর্ঘ ৩৪ বছর কাজ শেষে হঠাৎ চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে বিদায় নেয়ার ঘোষণা দেন। এরপর তিনি আর নতুন কোন ছবিতে অভিনয় করেননি। ২০০০ সালে তিনি সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। এককালের ঢাকার চলচ্চিত্রের বিউটি কুইন খ্যাত শাবানা এখন পরিপূর্ণভাবে ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়ে জীবন যাপন করছেন। এখন তার দেখা পাওয়া সাধারণ মানুষের পক্ষে তো বটেই কোনো সাংবাদিকের পক্ষেও কঠিন।

স্বামী এবং ২ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়ে তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী। তার পৈতৃক বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ডাবুয়া গ্রামে। তার বাবা ফয়েজ চৌধুরী চিত্র পরিচালক ছিলেন। 

 


আরো সংবাদ



premium cement