সিম সোয়াপ প্রতারণা থেকে নিরাপদ থাকুন
- আহমেদ ইফতেখার
- ২৯ জুন ২০২৪, ০০:০০
স্মার্টফোন এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। আর এই স্মার্টফোনেই রয়েছে প্রতারণার ফাঁদ। আপনার ফোনে আসা ফিশিং লিঙ্ক, ম্যালওয়্যারের লিঙ্কে ক্লিক করে ব্যাংক থেকে উধাও হচ্ছে টাকা, এমন ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি অনলাইন শপিং করতে গিয়েও লাখ লাখ টাকার প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকে। তবে এখন নতুন ধরনের প্রতারণার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। এর নাম সিম সোয়াপিং।
আপনার ফোনে যে সিম রয়েছে তারই একটি ডুপ্লিকেট সিম রয়েছে বাজারে। অথচ আপনি তা জানেনও না। একবার ভাবুন বিষয়টি কতটা সাঙ্ঘাতিক। আপনার সিমের ডুপ্লিকেট যদি হ্যাকারদের হাতে থাকে তাহলে আপনার গোটা ফোনের অ্যাকসেস থাকবে তাদের কাছে।
আপনার ফোন নম্বর সুরক্ষিত রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ব্যাংক হিসাব, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টের সাথে ফোন নম্বর যুক্ত থাকে।
সাইবার অপরাধীরা মুঠোফোন সংযোগের সিম কার্ড সোয়াপ করে ব্যক্তির ফোন নম্বরের দখল নিয়ে নেয়। এই সিম সোয়াপ এক ধরনের হ্যাকিং কৌশল, যার মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা কারো সিম কার্ড নকল করে বা দখল নিয়ে নেয়। কৌশলে সিম কার্ড নকল করার পর সেই ব্যক্তির বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের সুরক্ষাব্যবস্থা যেমন- টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বদলে ফেলে। তারপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্যের দখল নেয় সাইবার অপরাধীরা আর যে ব্যক্তির সিমের দখল নেয়া হয়েছে বা সিম সোয়াপ করা হয়েছে, তিনি সেটি সহজে বুঝতেও পারেন না।
ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে সিম সোয়াপ বা সিমের দখল নিতে পারে হ্যাকাররা। এ জন্য তারা ‘সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ কৌশলের আশ্রয় নিয়ে ব্যক্তিকে প্রতারিত করতে পারে। ফিশিং কল, এসএমএস, ইমেইল পাঠিয়ে সাইবার অপরাধীরা ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে সিম সোয়াপ করতে পারে। এ ছাড়া সাইবার অপরাধীরা সহজেই কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ব্যক্তির নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা প্রভৃতি সংগ্রহ করে সাইবার অপরাধীরা সিম সোয়াপ করতে পারে। সিম প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যদি যথাযথভাবে ব্যক্তির পরিচয় যাচাই না করে তবে সাইবার অপরাধীরা সংগৃহীত তথ্য ও নথি দিয়ে সেই ব্যক্তির সিম তুলে নিতে পারে।
হঠাৎ করে যদি সিমের সেবা বন্ধ হয়ে যায় তবে সতর্ক থাকতে হবে। নেটওয়ার্ক রয়েছে এমন এরিয়াতে থাকলেও নো সার্ভিস বা ইমারজেন্সি কল অনলি অনেক সময় ধরে দেখলে সাবধান হতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে যদি কল ও এসএমএস সেবা ব্যবহার করা না যায়, তবে সতর্ক থাকতে হবে। সিম নিষ্ক্রিয় বা ডিঅ্যাক্টিভ হলে এমন হতে পারে আর ব্যক্তির অজান্তে তার সিম ডিঅ্যাক্টিভ হলে তাতে সিম সোয়াপ হওয়ার শঙ্কা থাকে।
ব্যক্তির অজান্তে যদি সিম পরিবর্তন করা হয়েছে এমন বার্তা আসে, তবে তৎক্ষণাৎ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ব্যাংকসহ বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে যদি সন্দেহজনক কার্যক্রম দেখা যায় এবং এসব অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা না যায়, তবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে।
যেভাবে সুরক্ষিত থাকবেন
সিম সোয়াপ বা যেকোনো ধরনের অনলাইন প্রতারণা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা খুবই জরুরি। কারণ, সুরক্ষিত না থাকলে ব্যক্তিগত ও আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। দেখে নেয়া যাক, কিভাবে সিম সোয়াপ প্রতারণা কৌশল থেকে সুরক্ষিত থাকা যায়।
ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব অ্যাকাউন্টের জন্য শক্তিশালী ও জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে এবং সেগুলো নিয়মিত পরিবর্তন করতে হবে। খুবই সাধারণ তথ্য দিয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করা যাবে না।
অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদার করতে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু করতে হবে। তবে টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন প্রক্রিয়ার কোডপ্রাপ্তি এসএমএস নির্ভর না হয়ে বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে। যেকোনো অপরিচিত লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সাইবার অপরাধীরা ক্ষতিকর লিংক পাঠিয়ে যন্ত্রের দখল নেয় ও ব্যক্তিগত এবং আর্থিক তথ্য সংগ্রহ করে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা