২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্য সর্বনিম্ন বয়স ১৬

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের জন্য সর্বনিম্ন বয়স ১৬ -

যুক্তরাজ্যে ১৬ বছরের কমবয়সীদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে। যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনমন্ত্রী পিটার কাইল বিবিসিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অনলাইনে মানুষ এবং বিশেষ করে শিশুদের নিরাপদ রাখতে যা করতে হবে তাই করবেন। তিনি বলেন, শিশুরদের ওপর স্মার্টফোন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মতো প্রযুক্তির প্রভাব সম্পর্কে আরও গবেষণার দরকার আছে। এরই মধ্যে, যুক্তরাজ্যের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকমকে পাঠানো ‘কৌশলগত অগ্রাধিকার বিষয়ক চিঠি’তে তিনি এ বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন। অনলাইন সেইফটি অ্যাক্ট (ওএসএ)-এর মাধ্যমে বাড়তি ক্ষমতাও পেতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
আইন সংস্থা ফ্রিথস-এর ইওনা সিলভারম্যান সোশ্যাল মিডিয়ার এ সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞাকে সমস্যার সমুদ্রে একফোঁটা পানির মতো সমাধান হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার মতে, নিষেধাজ্ঞা জারি করলে শিশুরা অনলাইনে সমস্যাযুক্ত কনটেন্ট খুঁজে পাওয়ার জন্য নতুন উপায় খুঁজবে। সরকারকে আরও ভাবতে হবে। এটি এমন একটি সমস্যা যার জন্য সাংস্কৃতিক পরিবর্তন প্রয়োজন এবং প্রযুক্তির পেছনে না গিয়ে, এক ধাপ এগিয়ে আইন প্রণয়ন দরকার।
আইন করে শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার সীমাবদ্ধ করার বিষয়টি মূলত আলোচনায় এসেছে অস্ট্রেলিয়ার মাধ্যমে। সম্প্রতি দেশটি ১৬-এর কম বয়সী শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে নতুন আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে। যুক্তরাজ্য একই পথে হাঁটবে কিনা জানতে চাইলে কাইল বলেন, ‘সব কিছুরই সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু তিনি আরও প্রমাণ দেখতে চান। পাশাপাশি, আগামী বছর কার্যকর হতে যাওয়া ওএসএ নিয়ন্ত্রকরা কঠোরভাবে প্রয়োগ করছে কিনা, সে বিষয়েও নজর রয়েছে যুক্তরাজ্যের প্রযুক্তিমন্ত্রীর। তিনি বলেছেন, আমি শুধু নিশ্চিত করতে চাই সরকার এ আইনের কেমন প্রয়োগ আশা করছে অফকম সেটি যেন বোঝে। সোশ্যাল মিডিয়া ও মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো যদি ওএসএ মেনে না চলে তবে কয়েক শ’ কোটি পাউন্ডের আর্থিক জরিমানার বিধান রয়েছে।
শিশুদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া সীমাবদ্ধ করার পাশাপাশি অনেকেই পরামর্শ দিচ্ছেন স্মার্টফোনের ব্যবহারও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল বিবেচনা করছে যা শিশুদের ডিজিটাল জীবনকে কীভাবে নিরাপদ করা যায় সেটি পরীক্ষা করবে।
এটি হেলথ কেয়ার প্রফেশনালস ফর সেইফার স্ক্রিন নামের এক সংগঠনের কাছ থেকে তাদের গবেষণার প্রমাণ শুনবে। সংগঠনটি শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চায়।
যুক্তরাজ্য ছাড়াও শিশু-কিশোরদের সুরক্ষার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ন্যূনতম বয়সসীমা ১৫ বছর নির্ধারণের পরিকল্পনা করছে নরওয়ে সরকার। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ছোট শিশুদের মস্তিষ্কের বিরুদ্ধে কাজ করছে বলে এই উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে নরওয়ে। এর মাধ্যমে শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী জনাস গাহর স্টোর বলছেন, এটি একটি কষ্টসাধ্য লড়াই হবে।
তবে শিশুদের ‘অ্যালগরিদমের শক্তি’ থেকে সুরক্ষিত করতে রাজনীতিকদের অবশ্যই হস্তক্ষেপ করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের জন্য ইতোমধ্যেই ১৩ বছরের জন্য একটি ন্যূনতম বয়সসীমা কার্যকর করেছে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটি। তবে নরওয়ের মিডিয়া কর্তৃপক্ষের গবেষণা অনুসারে, ৯ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের মধ্যে ৫৮ শতাংশ, ১০ বছরের মধ্যে ৭২ শতাংশ এবং ১১ বছরের মধ্যে ৭২ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে।
নিঃসঙ্গ শিশুদের জন্য একটি কমিউনিটি তৈরি করতে সাহায্য করে সোশ্যাল মিডিয়া। তবে নিজস্বতা প্রকাশের অধিকার ‘অ্যালগরিদমের হাতে’ থাকা উচিত নয়। এ ছাড়া এটি ব্যবহারকারীদের ‘মনোযোগ শুধু একদিকে ধাবিত করে এবং নিস্তেজ’ করে দিতে পারে। কারণ স্ক্রিনে সবকিছু খুব দ্রুত ঘটে।


আরো সংবাদ



premium cement