সিলেটে দফায় দফায় ব্যবসায়ী-অটোরিকশাচালক সংঘর্ষ

সিলেট নগরীতে অবৈধ পার্কিংকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের সাথে অটোরিকশাচালকদের সংঘর্ষ হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দেড়টা থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত টানা দুই ঘণ্টার সংঘর্ষে পুরো বন্দরবাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
উভয়পক্ষের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় অন্তত চার-পাঁচটি দোকান ও ১৫-২০টি সিএনজি অটোরিকশাভাঙচুর করা হয়। এছাড়া সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ১৫-২০ জন আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে দোকানের সামনে অবৈধভাবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা পার্কিং করাকে কেন্দ্র করে নগরীর সিটি সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীর সাখে অটোচালকের বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় অন্য ব্যবসায়ী ও চালকরা এগিয়ে এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ব্যবসায়ীরা বেশ কিছু অটোরিকশা ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে ব্যবসায়ীদের ধাওয়ায় চালকরা কিছুটা পিছু হটেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিছুক্ষণ আবারো চালকরা সংঘবদ্ধ হয়ে ব্যবসায়ীদের দিকে তেড়ে আসে। এতে আবার উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এদিকে এ ঘটনার পর বন্দরবাজারসহ নগরীর বেশ কয়েকটি পয়েন্ট সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা রাস্তার মাঝখানে অটোরিকশা রেখে সড়কে যানচলাচল বন্ধ করে দেন। পরে সেনাবাহিনীর টহল দল গিয়ে অটোরিকশা সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এ ব্যাপারে বন্দরবাজার হাসান মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো: আজিজুল করিম দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, এক চালক দোকানের সামনে তার অটোরিকশাপার্কিং করেন। তখন দোকানদার দোকানের সামনে থেকে সরিয়ে পার্কিং করার কথা বললে ওই চালকের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে কয়েকজন চালক এক হয়ে ওই ব্যবসায়ীর ওপর হামলা চালায়। তখন অন্য ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেই মুহূর্তে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারীরা বেরিয়ে এলে চালকরা তাদের উপরও হামলা চালায়। এতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষে ৩০-৩৫ জন আহত হয়েছেন। কয়েকটি দোকান ও অটোরিকশাভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে উভয়পক্ষের সাথে বসার চেষ্টা চলছে।

সিলেট জেলা সিএনজিচালিত অটোরিকশার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ বলেন, একজন অটোরিকশাচালক সিটি সুপার মার্কেটের সামনে গাড়ি পার্কিং করায় ব্যবসায়ীরা মারধর করেন। এতে ওই শ্রমিকের মাথা ফেটে যায়। এ সময় অন্য শ্রমিকরা প্রতিবাদ করতে গেলে মার্কেটের ব্যবসায়ীরা চালকদের ওপর হামলা চালান। এ সময় অন্তত ৩০-৩৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
এতে ৩০-৪০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। আহতরা সিলেট এমএজি ওসামানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, অটোরিকশাচালক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকজন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি অটোরিকশা ও দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে। বিষয়টি সমাধানে দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনা চলছে।