১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

১৭ দিন পর জ্ঞান ফিরলেও শঙ্কায় গুলিবিদ্ধ রাইয়ান, নিতে হবে বিদেশে

১৭ দিন পর জ্ঞান ফিরলেও শঙ্কায় গুলিবিদ্ধ রাইয়ান, নিতে হবে বিদেশে - ছবি : নয়া দিগন্ত

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবরের পর দক্ষিণ সুরমা থানার সামনে বিজয় উল্লাসে মেতে উঠেন ছাত্রজনতা। সেখানে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় দক্ষিণ সুরমার সিলাম ইউনিয়নের ডালিপাড়া গ্রামের নানু মিয়া ও ছোট ছেলে রাইয়ান আহমদ (১৬)। ১৭ দিন পর ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে জ্ঞান ফিরেছে রাইয়ানের। তবে জ্ঞান ফিরলেও তার শারীরিক অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। চিকিৎসকরা বলছেন, তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ইউকে বা সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।

ছোট ভাই সম্পর্কে এই তথ্য জানিয়েছেন তার বড় ভাই আইমান আহমদ। আইমান বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল সে। সেখানে ১৪ দিন চিকিৎসা নিয়েও তার জ্ঞান ফিরেনি। সিলেটের চিকিৎসকরা তাকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে রেফার করেন। সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নিজে এসে ঢাকায় হাসপাতালে ভর্তি করান আমার ভাইকে। এখন সে ন্যাশনাল নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত শুক্রবার তার জ্ঞান ফিরেছে। এখন শুধু চোখ খুলে তাকাতে পারে। আমাদের সবাইকে চিনতে পারছে বুঝা যায়। মাঝে মাঝে আস্তে আস্তে বলে তার মাথায় খুব যন্ত্রণা করে। তাকে অপারেশন করতে ইউকে নেয়া লাগবে। গুলি না বের করলে সে সুস্থ হবে না। এখানের ডাক্তাররা বলছেন, যদি পারেন আপনারা দেশের বাইরে নিয়ে যান।

জানা যায়, নানু মিয়া ও রুনু বেগমের দুই মেয়ে দুই ছেলে মিলে ছয়জনের সংসার। রাইয়ানের বড় বোন নাদিয়া বেগম অনার্স ও নাজিয়া বেগম ডিগ্রি অধ্যয়নরত। তার বড় ভাই আইমান আহমদ এইচএসসি প্রথম বর্ষে পড়েন ও আহত রাইয়ান আহমদ সিলাম পিএল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। সিলামের ডালিপাড়ার বাড়িতে এখন কেউ নেই। রাইয়ানের চিকিৎসার জন্য স্বপরিবারে ঢাকায় চলে গিয়েছেন তারা। সেখানে হাসপাতালের পাশের এলাকায় ছোট একটি বাসা ভাড়া নিয়েছেন।

রাইয়ানের বড় ভাই আইমান আহমদ বলেন, আমার বাবা সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার এলাকার রাজা ম্যানশনের একটি লাইব্রেরিতে কর্মচারীর কাজ করেন। আমরা ভাই-বোন সবাই লেখাপড়া করছি। তিনিই আমাদের সংসার চালান। এখন তিনিও আমাদের সাথে ঢাকায় আছেন। ঠিক নাই কতদিন ঢাকা থাকা লাগবে। বাইরে চিকিৎসা নেয়ার আগে পর্যন্ত তো এখানে থাকতেই হবে। এখন কোনোভাবে আল্লাহ চালাইতাছেন আমাদের। অনেকেই আমাদের কিছু আর্থিক সাহায্য করেছেন। চিকিৎসা খরচ সব সরকারিভাবে দেয়া হচ্ছে।

চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরের ব্যবস্থা নিয়ে রাইয়ানের খালাত ভাই মুজিবুর রহমান বলেন, রাইয়ানের মাথার পেছনের দিক দিয়ে গুলি ব্রেইনের ভেতর রক্ত শিরার মধ্যে গিয়ে ঢুকে গেছে। এখানে নিউরো সায়েন্সের ডাক্তাররা বোর্ড বসিয়ে বলেছেন, অপারেশন লাগবে। কিন্তু আমাদের দেশে হাই ফিকুয়েন্সি কোনো মেশিন নেই। আর এই অপারেশন মেশিনের মাধ্যমে না করলে তার ব্লিডিং থামানো যাবে না। ব্লিডিং থামানো না গেলে অপারেশনের সময় সে মারা যাবে। এই অপারেশন ইন্ডিয়াতে হবে না। কারণ ইন্ডিয়াতেও হাই ফিকুয়েন্সি মেশিন নাই। ইউকে না হয় সিঙ্গাপুর এই অপারেশন করতে হবে।

তিনি আরো জানান, ঢাকা ভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আসছিলেন রাইয়ানের খোঁজ খবর নিতে। আমরা এখন কাগজপত্র তাদের কাছে জমা দিয়েছি। গত বৃহস্পতিবার ডাক্তাররা সব দেখে সামারি দিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ে কাগজ জমা হয়েছে। তাকে ইউকে নেয়ার প্রসেসিং চলছে। মনে হয়, সরকারিভাবে করা হবে। আমরা এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানি না। ঢাকা ভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আশ্বাস দিয়েছেন যে তারা ইউকে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। এখানেও তার সর্বোচ্চ চিকিৎসা হচ্ছে। বিদেশে পাঠানোরও চেষ্টা চলছে। সে আস্তে আস্তে একটু কথা বলতে পারে। মুখ দিয়ে কিচ্ছু খেতে পারে না। নাকে নল দিয়ে খাওয়ানো হয়। মাথায় খুব যন্ত্রণা করে এটা সে বলতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
গোয়াইনঘাটের অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা, আটক ১ প্রশাসনে অবিলম্বে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনুন : স্পিক বাংলাদেশ ইবিতে ভিসি নিয়োগের দাবিতে ফের বিক্ষোভ সমাবেশ মানুষের সুবিধাভোগের জন্যেই সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন আজমেরি ওসমানের টর্চার সেল পরিদর্শন করল র‌্যাব একনেকে ১ হাজার ২২২ কোটি ১৪ লাখ টাকার ৪টি প্রকল্প অনুমোদন এই ঔদ্ধত্যের উৎস কোথায়? সংস্কারের আবশ্যকতা : রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার চাই এস আলম গ্রুপের সম্পত্তি বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রিট বন্দরে ছেলেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়, গ্রেফতার ৪

সকল