২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

আ’লীগের লোকজন এত কুকর্ম করেছে যে তারা বন-জঙ্গলেও আশ্রয় পাচ্ছে না : জামায়াত আমির

কুলাউড়ায় জামায়াত আমিরের ত্রাণ বিতরণ - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ সহযোগীরা এত কুকর্ম করেছে যে তারা এখন বন-জঙ্গলেও আশ্রয় পাচ্ছে না। এখন খালে-বিলে লুকিয়ে থেকেও রেহাই পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে তাদের অনেকের পাপের বিচার শুরু হয়ে গেছে।’

তিনি শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে কুলাউড়া উপজেলায় বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং দুর্গত মানুষের মধ্যে উপহারসামগ্রী বিতরণ করেন।

এর আগে উপজেলার টিলাগাও বাজারে এক সভায় জামায়াত আমির বলেন, ‘চোরদের জন্য প্রতি বছর নদীর বাঁধ ভাংছে। বিগত সময়ে বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকা চোরদের পকেটে চলে যাওয়ার ফলে নদী খনন হয়নি। তাই প্রায় প্রতি বছর নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা হচ্ছে। আর মানুষের জানমালের ক্ষতি হচ্ছে।’

‘বর্তমানে সৃষ্ট বন্যার জন্য প্রতিবেশী দেশের ভারতেরও দায় আছে। শুকনো মৌসুমে তারা বাঁধ দিয়ে পানি আটকিয়ে রাখে আর বর্ষার সময় পানি ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশকে ভাসিয়ে দেয়। এটা চলতে দেয়া হবে না। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে এ ব্যাপারে যাওয়া হবে। কারো জমিদারি চলবে না,’ বলেন তিনি।

জামায়াত আমির আরো বলেন, ‘১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতির দেশ। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সকল ধর্মের মধ্যে সম্প্রতি রয়েছে। কোনো অপশক্তি এ সম্প্রতি বিনষ্ট করতে পারবে না।’

‘সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু বলে জাতিকে বিভক্ত করা যাবে না। আমরা সকলে মিলে এ দেশটাকে নতুন করে গড়ে তুলব,’ বলেন তিনি।

জামায়াত আমির বলেন, ‘৫ আগস্ট হিমালয় পর্বত কিভাবে ধসে পড়ল, কিভাবে পরিবর্তন হলো। আমরা বলি আল্লাহর ইচ্ছায় সবকিছু সম্ভব হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও সহযোগীরা এত কুকর্ম করেছে যে তারা বন-জঙ্গলেও আশ্রয় পাচ্ছে না। এখন খালে-বিলে লুকিয়ে থেকেও রেহাই পাচ্ছে না। ইতোমধ্যে তাদের অনেকের পাপের বিচার শুরু হয়েছে। আগামীতে আরো হবে।’

তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘৫ তারিখ জালিম সরকার বিদায় নিয়েছে। আমরা এখন দেশটাকে গঠন করব। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সহযোগিতা করব। ছাত্রলীগ ও পুলিশ অতীতে যা করেছে তার জন্য তারা শিক্ষা পাচ্ছে। আমাদের ১১ জন নেতাকে হত্যা করেছে। আমাদের দলের নেতৃবৃন্দের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়ি লুটপাট করেছে এবং বুলডোজার দিয়ে ভেঙ্গে চুরমার করেছে। জামায়াতে ইসলামীর ওপর সবচেয়ে বেশি নিপীড়ন চালিয়েছিল জালিম আওয়ামী সরকার। তাদের পতনও হয়েছে সেভাবে। এরপরেও আপনারা কোনো প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা করবেন না। এক জলুমতন্ত্রের পরে আরেক জুলুমতন্ত্র চাই না।’

টিলাগাও বাজারে দুপুর ১টায় কুলাউড়া উপজেলা জামায়েতের আমির মো: আব্দুল হামিদ খানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা জামায়াতের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জামায়াতের মৌলভীবাজার জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, জেলা সহ-সেক্রেটারি আলাউদ্দিন শাহ, মৌলভীবাজার পৌর জামায়াতের আমির তাজুল ইসলাম, কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল মোন্তাকিম, ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সুমন, জেলা সেক্রেটারি নিজাম উদ্দিন, সাবেক জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন, পৌর সভাপতি রুহুল আমিন ও সেক্রেটারি মনসুর আহমদ প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement