‘সিলেটে সাধারণ কোনো হিন্দু বাড়িতে হামলা হয়নি’
- সিলেট প্রতিনিধি
- ১২ আগস্ট ২০২৪, ১৯:৪৩
শেখ হাসিনা সরকার দেশ ছাড়ার খবর চাউর হওয়ার পর মুহুর্তে আত্মগোপনে চলে যান সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতারা। ব্যতিক্রম হয়নি সিলেটে। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীসহ সিলেটে থাকা আওয়ামী লীগের সকল মন্ত্রী-এমপি ও নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। এই সুযোগে ওই দিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত এসব বেশিরভাগ নেতার বাসা-বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এদিকে, গত কয়েকদিন থেকে সিলেটসহ সারা দেশে হিন্দু ধর্মালম্বীদের ব্যানারে তাদের বাসা-বাড়ি ও মন্দিরে হামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ করছেন। তবে সিলেটে সাধারণ হিন্দুদের উপর বা তাদের বাসা-বাড়িতে এখন পর্যন্ত কোনো হামলা হয়নি বলে জানিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ।
এছাড়া কোথাও কোনো মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেনি বলেও নিশ্চিত করেছে সংগঠনটি। বরং হিন্দুদের উপাসনালয় ও বাড়িঘরের নিরাপত্তায় পাড়ায় মহল্লায় মাইকিং করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। ৫ আগস্টের রাত থেকে অনেক মন্দিরে মুসলিমরা পাহারা দিচ্ছেন- এমন দৃশ্যও দেখা গেছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাহস ও আশ্বাস দিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কয়েকজন হেভিওয়েট আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় হামলা এবং ভাঙচুর হয়েছে। সনাতন ধর্মী হিসেবে নয়, এদের বাসায় হামলা হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে। ৫ আগস্ট বিকেলে নগরের গোপালটিলা এলাকায় সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রনজিৎ সরকারের বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। একইদিনে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বিধান চন্দ্র সাহার অফিস, নগরের শেখঘাট এলাকায় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি পিযুষ কান্তি দে'র বাসা ও মির্জাজাঙ্গাল এলাকার অফিস এবং নগরের আখালিয়া এলাকার মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কাউন্সিলর জগদীশ দাশের কার্যালয়ে হামলা ভাঙচুর করা হয়। হাসিনার দেশ ছেড়ে পালানোর পর ৫ আগস্ট বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের অন্তত ২৫ জন শীর্ষ পর্যায়ের নেতার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এরপর থেকেই সিলেটের বিভিন্ন মন্দিরে হামলার গুজব ছড়িয়ে পড়ে। যদিও তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। হিন্দুদের উপাসনালয় ও বাড়িঘরের নিরাপত্তায় ৫ আগস্ট রাত থেকেই পাড়ায় মহল্লায় মাইকিং করেছে জামায়াতে উসলামী, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অনেক মন্দির পাহাড়াও দিচ্ছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং মাদারাসার ছাত্ররা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাহস ও আশ্বাস দিচ্ছেন।
হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ, সিলেট জেলা শাখার এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমার জানামতে-সিলেটে এখন পর্যন্ত সাধারণ কোনো হিন্দু আক্রান্ত হননি। যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তারা সকলেই আওয়ামী লীগ নেতা। ঢালাওভাবে হিন্দুদের বাড়িতে হামলা হচ্ছে- এমন কথা গুজব। দেশ শান্তিতে থাকুক-আমরাও এটাই চাই। নিজ ধর্মেল সবাইকে গুজব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন ওই হিন্দু সংগঠনের নেতা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা