১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩০, ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

শাবি’র হলে আন্দোলকারীদের তল্লাশি, শর্টগান-রিভলবার ও মাদক উদ্ধার

শাবি’র হলে আন্দোলকারীদের তল্লাশি, শর্টগান-রিভলবার ও মাদক উদ্ধার - ছবি : নয়া দিগন্ত

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রশাসন থেকে ৩টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশনা দিলেও তা মানেননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

বুধবার সকালে সিন্ডিকেট সভা করে দুপুর ৩টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশনা দেয় শাবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ। এই নির্দেশনার পরপরই কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। তারা উল্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়াটারে থাকা শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ৩টার মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়ার অনুরোধ জানিয়ে বিবৃতি দেন।

দুপুর ২টায় পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবারের সংঘাতে নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে শাবিপ্রবি'র ফটকের সামনে গায়েবানা জানাযা পড়েন। এরপর বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘হল কারো বাপের না, আমরা হল ছাড়বো না', 'এই ক্যাম্পাস আমাদের, আমরা ক্যম্পাস ছাড়বো না', 'আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেথে দেবো না' এসব শ্লোগান দিতে থাকেন।

আন্দোলনকারী একাধিক শিক্ষার্থী নয়া দিগন্তকে জানান, ছাত্র আন্দোলনের তীব্রতা দেখে ভয় পেয়ে সরকার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত মানি না। আমরা ক্যম্পাসে থেকেই আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

এদিকে, বিকেল ৪টা থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হলগুলোতে তল্লাশি শুরু করেন। বিশেষত ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত কক্ষগুলোতে তল্লাশি চালান তারা। এ সময় কক্ষগুলো থেকে কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র, বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র ও মদের খালি বোতল জব্দ করেন তারা। পরে এগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন। তল্লাশিকালে ছাত্রলীগ নেতারা হলে ছিলেন না। এ সময় হলের দেয়ালে ঝুলতে থাকা ছাত্রলীগ নেতাদের ছবি সম্বলিত প্লে কার্ড ও ফেস্টুন ছিড়ে তাতে অগ্নিসংযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। পরে সাড়ে ৬টায় উদ্ধারকৃত অস্ত্র নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আন্দোলনের শাবিপ্রবির সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, দেড় শতাধিক মদের বোতল, ১টি শর্টগান, ১টি রিভলবার, ৩টি চেইন, ১০০টি স্টিলের পাইপ, ১০টি রামদা, ১২টি চাকু, হাতুড়ি ৩টা ও কিছু গাঁজা পেয়েছি। শুধু শাহপরাণ হলের বিভিন্ন কক্ষ থেকে এসব আমরা জব্দ করেছি। সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ার কারণে আর তল্লাশি চালাতে পারিনি। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) আমরা বাকি হলগুলোতে তল্লাশি করবো। আমরা জানতে পেরেছি, তল্লাশি শুরু হয়েছে জানতে পেরে সন্ত্রাসীরা অনেক অস্ত্র সরিয়ে ফেলেছে।

তিনি আরো বলেন, আজ থেকে শাবিকে ছাত্রলীগ ও সন্ত্রাসমুক্ত ঘোষণা করলাম। এরা এখানে মাদক কারবার করতো। আজ থেকে শাবিতে এসব বন্ধ। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, আগামীতে যাতে রাজনৈতিক পরিচয়ে বা শক্তির জোরে হলের সিট বরাদ্দ দেয়া না হয়, মেধা যাচাইয়ের ভিত্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেন সিট দেয়া হয়।

গালিব বলেন, যাদের কক্ষে এসব জিনিস পেয়েছি তাদের আমরা শনাক্ত করতে পারিনি। তবে প্রশাসনের প্রতি দাবি, তারা এদের চিহ্নিত করে তাদের ছাত্রত্ব আজীবনের জন্য বাতিল করতে হবে।

প্রেস ব্রিফিং শেষে মাদকদ্রব্য ও অস্ত্রগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেন কাছে হস্তান্তর করেন আন্দোলনকারীরা।


আরো সংবাদ



premium cement