২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

সিলেটে তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি ৭ লাখ মানুষ

- ছবি - ইউএনবি

দ্বিতীয় দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই তৃতীয় দফায় বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট। ফলে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ যেন শেষ হচ্ছে না। ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গত সোমবার (১ জুলাই) নতুন করে বন্যা দেখা দিয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। তবে মহানগরে এখনো বন্যার দেখা মেলেনি।

তৃতীয় দফার বন্যায় জেলার ১৩ উপজেলার ৯৭টি ইউনিয়নের এক হাজার ১৭৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সাত লাখ এক হাজার ৬৫৮ জন মানুষ। এসব এলাকার ১৮৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন আট হাজার ৩৫১ জন।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সিলেট জেলা প্রশাসনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় সিলেটের সবকয়টি উপজেলা আক্রান্ত হয়েছে। বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি পাঁচটি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এই নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে ১০ দশমিক ৭৯ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এখানে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।

কুশিয়ারার পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৯ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৭, শেওলা পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার ও শেরপুরে ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সারি, সারিগোয়াইন ও লোভা নদীর পানি কিছুটা কমেছে।

সিলেট আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো: সজীব হোসাইন বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত সিলেটে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান বলেন, তৃতীয় দফা বন্যার আশঙ্কা আগে থেকেই করা হচ্ছিল। যার কারণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে দির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রয়েছে। পরিস্থিতি সতর্কতার সাথে মোকাবিলা করতে সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ মে ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটে বন্যা দেখা দেয়। ৮ জুনের পর থেকে বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। গত ১৭ জুন থেকে শুরু হওয়া অবিরাম বৃষ্টিতে আবারো জেলায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দেয়, সেই বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতে গত ১ জুলাই থেকে তৃতীয় দফা বন্যা দেখা দেয় সিলেটে।


আরো সংবাদ



premium cement