২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দোয়ারাবাজারে বন্যায় ভেসে গেছে ২৫ কোটি টাকার মাছ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় পাহাড়িয়া ঢল ও অব্যাহত বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যার পানিতে ভেসে গেছে মাছ চাষিদের ২৫ কোটি টাকার মাছ।

উপজেলা মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, আকস্মিক বন্যায় উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মৎস্য চাষিরা বেশি ক্ষতি হয়েছেন। সদর, লক্ষিপুর, দোহালিয়া, নরসিংপুর ও মান্নারগাঁও ইউনিয়ন মিলিয়ে প্রায় ১৬০০-এর অধিক পুকুর তলিয়ে যায়। এতে প্রায় ২৪০০ টন মাছ ও মাছের পোনা ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মৎস্য চাষিরা।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যার আর্থিক মূল্য ২৫ কোটি ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

বন্যার পানিতে পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ অনেকেই উপার্জনের মাধ্যম হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অনেকেই উপার্জনের মাধ্যম হারিয়ে হাহাকার করছেন। ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের সহায়তা প্রত্যাশা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিরা।

দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের লামাসানিয়া গ্রামের মৎস্য চাষি আজিজুল হক জানান, ‘বাড়ির পাশে ছয়টি পুকুরে রুই, কতলা, গ্রাসকার্প ও তেলাপিয়াসহ নানান প্রজাতির ৩০ লক্ষাধিক টাকার মাছ চাষ করেছিলেন। এবারের বন্যায় সবকয়টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। আমার এখন রাস্তায় বসতে হবে। মাথা তুলে দাঁড়ানোর কোনো উপায় দেখছি না।’

দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের মৎস্য চাষি ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার পুকুরে রুই, কাতল, মৃগেল ও গ্রাসকার্প মাছের চাষ করেছিলাম। কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে পুকুরে থাকা প্রায় দুই লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। অনেক চেষ্টা করেও মাছ রক্ষা করতে পারিনি। শনিবার থেকে পানি কিছুটা কমেছে। কিন্তু যে ক্ষতি হয়েছে, তা সরকারি সহায়তা ছাড়া কাটিয়ে উঠতে পারবো না।’

তিনি জানান, উপজেলা সদরের লামাসানিয়া, টেবলাই, বিরিশিং এলাকার কয়েক শতাধিক পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে উপার্জনের মাধ্যমে হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন মৎস্য চাষিরা।

লক্ষিপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের মৎস্য চাষি আবু তাহের, নোয়াপাড়া গ্রামের মৎস্য চাষি মকসুদুল হক বলেন, দু’জনের বাড়ির পাশে চারটি পুকুরে রুই, কাতল, গ্রাসকার্প ও তেলাপিয়া মাছের চাষ করেছিলাম। এবারের বন্যায় পুকুরগুলোর মাছ বানের পানিতে ভেসে যাওয়ায় চার লাখ টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে। মাছ রক্ষায় পুকুরের চারপাশে জালের বেষ্টনী দিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

দোয়ারাবাজার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি বর্মন জানিয়েছেন, বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষির তালিকা করে পুনর্বাসনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্ট দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বন্যার পানি থেকে মাছ চাষের পুকুর রক্ষায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement