সুনামগঞ্জের ফসল রক্ষা বাঁধে অনিয়ম, ইউএনওসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
- দিরাই-শাল্লা (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ২২:৫৩
সুনামগঞ্জের হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়মের অভিযোগে দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন।
বাঁধে প্রকল্প গ্রহণ, অতিরিক্ত বরাদ্দ ও নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, বিক্ষোভ-প্রতিবাদের পর আদালতে এই মামলা করা হয়।
এজাহারে দিরাই ইউএনওর বিরুদ্ধে বাঁধের কাজের অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরে হয়। জেলার আরো কয়েকটি উপজেলায়ও বাঁধের কাজে অনিয়মের অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানা যায়।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের আদালতে দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: মাহমুদুর রহমান খোন্দকার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী এ টি এম মোনায়েম হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। জেলার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে ওই মামলাটি করেন হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য জেবেল মিয়া।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন দিরাই উপজেলার বাঁধের কাজের ২৭ নম্বর পিআইসির সভাপতি মো: জগলু মিয়া ও ২৮ নম্বর পিআইসির সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, হাওরের বোরো ধান রক্ষায় সরকার প্রতিবছর অস্থায়ি বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এবছরও দিরাই উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের জগডোবা বাঁধের কাজের জন্য ২৭ নম্বর পিআইসিতে ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৪৪ টাকা ও ২৮ নম্বর পিআইসিতে ১৪ লাখ আট হাজার ৭৯৬ টাকা বরাদ্দ দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
তবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাহমুদুর রহমান খোন্দকার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারি প্রকৌশলী এ টি এম মোনায়েম হোসেন এই দুটি বাঁধের মধ্যে ২৭ নম্বর পিআইসির বরাদ্দের ৩১ লাখ ৭১ হাজার টাকা ও ২৮ নম্বর পিআইসির বরাদ্দের টাকা ৩৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা করে দেন। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে মামলা হামলাসহ মৃত্যুর হুমকি প্রদর্শন করে আসছেন সংশ্লিষ্টরা।
এছাড়া পিআইসির নীতিমালা না মেনেই যাদের জমি নেই বাঁধের পাশে তাদের দিয়ে বাঁধের কাজ করানোসহ এখন পর্যন্ত বাঁধের কাজ শেষ না করার বিষয়টিও মামলা উল্লেখ্য করেন বাদি। বাদি জেবেল মিয়া বলেন, এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে তাদের মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়েছে। পাউবো কর্মকর্তা এ টি এম মোনায়েম বাদি হয়ে একটি মামলায় স্থানীয় কৃষকদের আসামি করে। এ মামলা তিনজন কৃষক জেল হাজতে রয়েছেন। আমি কৃষকদের পক্ষে আদালতে মামলা করেছি আশা করি ন্যায় বিচার পাব। আমরা কৃষকের স্বার্থে কাজ করা সংগঠন কৃষকের ওপর নির্যাতন জুলুম এবং তার স্বপ্নে ফসল নিয়ে কাউকে খেলার সুযোগ দিব না।
এ ব্যাপারে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, চলতি বছর ফসল রক্ষা বাঁধের নামে সর্বত্র অনিয়ম হয়েছে। আমরা বার বার প্রতিবাদ করেছি, মানববন্ধন ও মিছিল মিটিং করেছি। এতে কোনো কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে আদালতের কাছে এলাম। এখন শুধুমাত্র দিরাই উপজেলায় মামলা হয়েছে। আরো কয়েকটি উপজেলায়ও মামলার প্রস্তুতি চলছে।
দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মাহমুদুর রহমান খন্দকার দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, দিরাই উপজেলার ভাটিদল এলাকার জগঢুবা হাওরের একটি ক্লোজারে বাঁধ নির্মাণে প্রতিবছর আমাদেরকে প্রতিবন্ধকতার সম্মূখীন হতে হয়। ওই বাঁধ এলাকার একটি মৎস্যজীবী পরিবার সবসময় বাঁধ নির্মাণে বাঁধা দেয়। এই বিষয়ে পাউবো’র শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। এরপরও আমরা বিকল্প জায়গা দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করতে গেলে ওই মৎস্যজীবী পরিবার বাঁধা দেয়। বাধ্য হয়ে পাউবো’র পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ করা হলে তিনজনকে পুলিশ আটক করে। তারা এখনো কারাগারে রয়েছেন। এর জের ধরে মামলা হতে পারে। আমরা মামলার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী মামলার পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা