২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

শাবিপ্রবিতে পুলিশের গুলিতে সজলের ঝাঁঝরা শরীরে ৮৩টি স্প্রিন্টার

শাবিপ্রবিতে পুলিশের গুলিতে সজলের ঝাঁঝরা শরীরে ৮৩টি স্প্রিন্টার - ছবি : নয়া দিগন্ত

সজল কুণ্ড। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তিনি। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনের নিচতলায় রয়েছে তারা একটি ক্যাফেটেরিয়া। সজল এটি নিজেই পরিচালনা করেন। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র- জুনিয়র সবার সাথে তারা পরিচিতি ভালো। চলতি মাসের ১৬ জানুয়ারি তার ওপর হামলার সময় কী ঘটেছিল সেটি বর্ণনা করলেন সজল কুণ্ড।

ওইদিন বিকেলে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। এ সময় ক্যাম্পাসে নিজের প্রতিষ্ঠানেই বসা ছিলেন সজল। পুলিশ ধাওয়া করায় শিক্ষার্থীরা তার দোকানে আশ্রয় নেন। এর মধ্যে অনেক মেয়ে শিক্ষার্থীও ছিলেন। পুলিশ দোকানের দিকে এলে সহপাঠীদের রক্ষা করতে এগিয়ে যান সজল। এরপর পুলিশের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেডের আঘাতের ঝাঁঝরা হয়ে যায় সজলের শরীর। তার শরীরে রয়েছে ৮৩টি স্প্রিন্টার। ঝাঁঝরা হয়ে গেছে শরীরের অনেক অংশ। তাৎক্ষণিক শিক্ষার্থীরাই তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বেঁচে গেছেন সজল কুণ্ড। এখনো হুইল চেয়ারে চলাফেরা করতে হচ্ছে তাকে। বর্তমানে তিনি বাসাতেই রয়েছেন। সিলেটেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি। সজল হাসপাতাল থেকে কিছুটা সুস্থ হয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এদিকে সজলের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ঢাকায় নিয়ে তার উন্নত চিকিৎসা করা হবে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মোহাইমিনুল বাশার রাজ নামের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের এক মুখপাত্র জানান, সজল কুণ্ড ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরপর ক্যাম্পাসে ফিরেছিলেন। বর্তমানে তিনি বাসাতেই রয়েছেন। তার শরীরে প্রায় ৮৩টি স্প্রিন্টারের আঘাত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় সজল কুণ্ডকে খুব দ্রুতই ঢাকায় পাঠানো হবে। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সজল কুণ্ডের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশনায় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের মূল দাবিসহ অন্যান্য দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা সকল শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

তিনি জানান, ভিসির নির্দেশে পুলিশ ওইদিন বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল; আর সজল কুণ্ড হচ্ছে তার প্রমাণ। শিক্ষার্থীরা নিরস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। আর পুলিশ ছিল সশস্ত্র।

এদিকে ছাত্র বিক্ষোভ ও অনশনে উত্তাল ক্যাম্পাস এখন শান্ত। হলে যারা আছেন তারা ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে প্রতিদিনই অহিংস আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা এরই মধ্যে ভিসি’র বাসভবনের সামনেও স্লোগান সংবলিত আল্পনা আঁকিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement