চা বাগানে রাবার চাষের বিকল্প হতে পারে কফি
- মৌলভীবাজার সংবাদদাতা
- ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:৩৪, আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:২৮
উপযোগি মাটি আবহাওয়া জলবায়ু ও উপযুক্ত পরিবেশ থাকায় মৌলভীবাজারের পাহাড়ি টিলা ভূমিতে বাণিজ্যিক ভাবে এরাবিকা জাতের কপি চাষের সম্ভাবন রয়েছে। পরীক্ষামুলক ভাবে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মাথিউড়া চা বাগানে কপি চাষ করা হয়েছে।
২০১৭ সালে ওই চা বাগানের ৪ টি বাংলোর সামনে ৪০ একর ভূমিতে পরীক্ষামুলক ভাবে সুদূর আফ্রিকা মহাদেশের ইতোপিয়ার এরাবিকা জাতের ১০ হাজার কপির চারা লাগানো হয়েছিল। এ বছর ফল এসেছে। কোম্পানী বাংলোর সামনে গাছগুলো অনেকটা বড় হয়েছে। সারিবদ্ধ ভাবে ফিশারী বাংলোর সামনে বেশ কিছু গাছ রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন চা বাগান গুলোতে রাবার উৎপাদনের আর সুযোগ থাকবে না। চায়ের পাশাপাশি বানিজ্যিক ভাবে কপি চাষ রাবারের বিকল্প হতে পারে। কম খরচে কপি চাষে বেশী লাভবান হওয়া যাবে। যে মাটিতে অল্পমাত্রা বা ক্ষারত্ব আছে সে মাটিতেই কপি চাষের উপযোগি।
কফি বাজারে নতুন ব্যবসায়ের সম্ভাবনা দেখে কফি চাষের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছেন মৌলভীবাজারের চা-বিশেষজ্ঞরা। ইতো মধ্যে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর মাথিউড়া চা বাগানে তা শুরু হয়েছে।
মথিউরা চা বাগানের সিনিয়র ম্যানেজার ইবাদুল হক জানান, তারা রাস্তার পাশের জমিতে, তাদের ৪টি বাংলোর আশেপাশে এবং অন্যান্য অংশে এরাবিকা বিভিন্ন ধরণের ১০ হাজার কফি গাছ লাগিয়ে ছিলেন। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কফির চারা রোপণ করেছি এবং ফল ইতিমধ্যে বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।
চা বাগানে রাবার চাষে সরকারী নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাবার চাষের পরিবর্তে কফি একটি ভাল বিকল্প হতে পারে। আমরা একা চা চাষের উপর নির্ভর করতে পারি না। করোনভাইরাস সহ বিভিন্ন সঙ্কটের কারণে চায়ের দাম দ্রুত হ্রাস পেয়েছে। সুতরাং,চা বাগানের জমির সুস্থ ব্যবহারের জন্য কফি একটি অর্থনৈতিকভাবে টেকসই বিকল্প হতে পারে। চা শ্রমিকরাই কপি চাষে পরির্চযা করতে পারে এর জন্য আলাদা শ্রমিক নিয়োগের দরকার হয় না। চা বাগানের শ্রমিক বাবুলাল জানান বাজারে কফির একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত আছে। তবে দুর্ভাগ্য যে , কপি প্রসেসিংএর ব্যবস্থা খুবই অপ্রতুল।
ম্যানেজার ইবাদুল হক আরো জানান তারা দুটি উপায়ে কফি সংগ্রহ করেন। একটি হ'ল কাঁচা কফি এবং অন্যটি পিষ্ট।
কাঁচা কফির ক্ষেত্রে, এটি পান করার আগে একটি মেশিনে গুঁড়ো করা প্রয়োজন। বাংলাদেশী এবং বিদেশী উভয় বাজারেই কাঁচা কফির প্রচুর চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে একটি প্রবণতা দেখা দিয়েছে যে চা বেশিরভাগ নিম্নবর্ণের লোকেরা গ্রহণ করেন। আর কফি যেন উচ্চবিত্তদের পানিয়। বাজারে এবং তরুণদের মধ্যে কফির চাহিদা বাড়ছে এর মধ্যে নারীদের বেশী পছন্দনিয়। নতুন প্লানটেশনে কপি চাষ অর্থনৈতিক ভাবে আমাদের আশা জাগাবে মৌলভীবাজারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান এই জেলার মাটিতে পর্যাপ্ত অল্পমাত্রা থাকায় পাহাড় টিলা ভূমিতে কফি চাষের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা জেলার উপযুক্ত ভূমিতে কপি চাষের জন্য আগ্রহী কৃষকদের উৎসাহিত করব। কপি চাষ মাটি এবং যত্মের উপর নির্ভর করে। কৃষিমন্ত্রী নিজেও এ জেলায় কফি চাষ জনপ্রিয় করতে তার প্রয়োজনীয় মতামত প্রকাশ করেছেন।