২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`
করোনাভাইরাসের প্রভাব

ছাতকের শুক্ল স্টেশনে চুনাপাথর আমদানিতে কমেছে রাজস্ব

ছাতকের শুক্ল স্টেশনে চুনাপাথর আমদানিতে কমেছে রাজস্ব - ফাইল ফটো

বৈশ্বয়িক প্রাণঘাতী ব্যাধি করোনাভাইরাসের প্রভাবে সুনামগঞ্জের শিল্পনগরী ছাতকের স্থানীয় শুল্ক স্টেশনের অধীনে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানিতে কমে গেছে রাজস্ব আদায়ের হার। পূরণ হয়নি সরকারের নির্ধারিত বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা। করোনাভাইরাসের প্রভাবে চুনাপাথর আমাদানিতে বিঘ্নিত হওয়ায় ২০১৯-২০ইং অর্থবছরে সরকারি রাজস্ব আদায় কমে গেছে। করোনাকালীন সময়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে চলতি ২০২০-২১ইং অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে কি না, এনিয়ে সংশয় রয়েছে।

ছাতক, চেলা ও ইছামতি রুটে রাজস্ব আদায়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯০ কোটি ৬২ হাজার টাকা। এর মধ্যে গত ৩০ জুন মাস পর্যন্ত মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৬ কোটি ২০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৩ কোটি ৭৯ লাখ ৯২ হাজার টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।
মূলতঃ করোনার প্রভাবেই ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানিতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কম হয়েছে বলে জানিয়েছে ছাতক শুল্ক স্টেশন বিভাগ। ২০১৯-২০ইং অর্থবছরে ছাতক রুটে চুনাপাথর আমাদানিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ কোটি ৪০ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এখানে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৩ কোটি ৭৪ হাজার টাকা। ইছামতি রুটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৪১ লাখ ৬ হাজার টাকা। আদায় হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার টাকা। চেলা রুটে লক্ষ্যামাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ১৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৪ হাজার টাকা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সরকারি হিসাব অনুযায়ী এর আগের ২০১৮-১৯ইং অর্থবছরে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানিতে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল। ওই বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৮ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৬৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। যা মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ কোটি ৯৩ লাখ ১২ হাজার টাকা কম ছিল।

চলতি ২০২০-২১ইং অর্থবছরে ছাতক রুটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯ কোটি ৫৮ লাখ ১১ হাজার টাকা। চেলা রুটে ২ কোটি ৫৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ও ইছামতি রুটে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকাসহ মোট ৩টি রুটে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।

জানা গেছে, ছাতক শুল্ক স্টেশনের আওতায় ৩টি রুটে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ছাড়াও এশিয়ার বৃহত্তর সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানি ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি কর্তৃপক্ষ মিয়মিতভাবে কনভেয়ার বেল্ট, রজ্জুপথ ও ব্যবসায়ীরা নৌপথে চুনাপাথর আমাদানি করে থাকে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে লাফার্জ-হোলসিম কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় মাস চুনাপাথর আমাদানি বন্ধ রাখে। ফলে রাজস্ব আদায় প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এছাড়াও ছাতক সিমেন্ট কোম্পানিতে গত ২৬ মার্চ থেকে চুনাপাথর আমাদানি বন্ধ রয়েছে।

এদিকে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে চেলা ও ইছামতি রুটেও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে। যার ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কবে নাগাত আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে, এ নিয়ে সুস্পষ্টভাবে কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

স্থানীয় চুনাপাথর ব্যবসায়ী ও ছাতক লাইম স্টোন ইম্পোটার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের সাবেক সেক্রেটারি আব্দুল হাই আজাদ বলেন, চেলা ও ইছামতি রুটে চুনাপাথর আমাদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কমেছে সরকারের রাজস্ব আদায়ও।

ছাতক শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো: ইব্রাহিম খলিল জানান, মূলত করোনার প্রভাবেই রাজস্ব আদায় কমেছে। যার ফলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়নি। তবে আমদানি কার্যক্রম চালু হলে রাজস্ব ঘটতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement