সিলেটে ব্রিটিশ নাগরিকসহ ৪ জনের কারাদণ্ড
- আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট
- ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৩
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ নাগরিককে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন সিলেটের আদালত। কারাদণ্ড প্রাপ্ত এই চার আসামিকে ৮৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। এছাড়া সিলেটে থাকা তার স্ত্রী, শ্যালক ও মামাকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে দুদক সিলেটের আদালত পরিদর্শক মো: জাহিদুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে রায়ের এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, বৃহস্পতিবার সিলেটের বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক শাহাদাৎ হোসেন প্রামাণিক এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মিসবাহ উদ্দিন ওরফে রবিন চৌধুরী, তার স্ত্রী শাহিদা বেগম শান্তি, শ্যালক রিপন সিরাজ ও আব্দুল খালেক ওরফে মাখন উদ্দিন। রায়ে মিসবাহর আট বছর, তার স্ত্রী শাহিদা, শ্যালক রিপন ও মামা খালেকের চার বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসাথে আসামিদের ৮৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রায় ঘোষণার পর মিসবাহ উদ্দিনসহ তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শাহিদা পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৬ জুন যুক্তরাজ্যের হোম অফিসের এক চিঠির ভিত্তিতে মিসবাহ উদ্দিন চৌধুরীর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মিসবাহ লন্ডনে একটি প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপক থাকাকালে ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে নিজ নামে মোট ১৩টি জাল মর্টগেজ আবেদনের মাধ্যমে তিনি এবং অন্যরা মিলে ৫০ লাখ পাউন্ডেরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেন, যার বড় একটি অংশ বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
দুদক জানিয়েছে, চুরি, মিথ্যাচার ও নিজ অবস্থানের অপব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা প্রাপ্তি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ২০১১ সালের আগস্ট মাসে মিসবাহ লন্ডন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।
সংস্থাটি আরো জানায়, পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে মিসবাহ নিজের নাম পরিবর্তন করে রবিন চৌধুরী নাম ধারণ করেন এবং এ নামে যুক্তরাজ্যের পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সও সংগ্রহ করেন।
দুদক জানিয়েছে, মিসবাহ উদ্দিন মর্টগেজ ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে পাওয়া টাকা এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে এনে বিভিন্ন ব্যাংক শাখায় তার নিজের, স্ত্রী ও বাবার নামে টাকা স্থানান্তর করে এফডিআর বিনিয়োগ, এসওডি ঋণ গ্রহণ করে শেয়ার ক্রয়, ফ্ল্যাট ক্রয়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগসহ বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে হস্তান্তর করে মানি লন্ডারিং করেছেন। এ অবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে।
মামলার তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্র দাখিলের পর আসামি আবদুর রহিম মৃত্যুবরণ করায় ২০১৭ সালের ১৪ মে এক আদেশে তাকে বাদ দেয়া হয়।
দুদক সিলেটের কোর্ট পরিদর্শক মো: জাহিদুল ইসলাম বলেন, চার আসামিকে আদালত সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া অর্থদণ্ড পরিশোধের জন্য ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়সীমা বেধে দিয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে দণ্ডিত অর্থ পরিশোধ না করলে আসামিদের প্রত্যেককে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। এছাড়া আসামিদের ব্যাংকে অবরুদ্ধ টাকাসহ মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আনা টাকা ও কেনা সম্পত্তি আদালত রাষ্ট্রে অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা