তরুণদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার : উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার
- এম এ রকিব, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার)
- ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৯
তরুণ সমাজের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মৎস ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেছেন, ‘দেশের তরুণরা যে বিশাল একটা সাফল্য নিয়ে এসেছে, তাদের ছোট্ট একটা দাবি ছিল সেটা থেকে যে দেশের বৈষম্য দূর করার জন্য তারা প্রাণ দিয়েছে, আহত হয়েছে। হাজার হাজার তরুণ এখনো হাসপাতালে পড়ে আছে। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোটাই যথেষ্ট নয়। তাদের কথা সারাক্ষণই আমাদের মনে রাখতে হবে। বিশেষ করে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ কথাটা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখে। এই তরুণদের সম্পর্কে নিয়ে নানান পরিকল্পনা যুব মন্ত্রণালয় করতে পারে, সমাজকল্যাণ থেকে করতে পারে, মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকেও করতে পারি। তরুণদেরকে নিয়ে যেসব প্রকল্প করতে পারি সেগুলো আমরা বেশি আগ্রহের সাথে দেখব। এই সরকার একটা উদ্যোগ নিয়েছে, শহীদ পরিবার এবং আহত পরিবারকে সহায়তা দেবার। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সাথে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রাণালয়ও কিন্ত আছে। তার মানে আমরাও তাদেরকে সহায়তা দিতে পারব।’
আজ রোববার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাইক্কা বিল মৎস্য অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট সুফলভোগীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস ও প্রাণীসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রাকৃতিক মাছের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। আমরা শুধু ফিসারিজ মাছের উপর নির্ভর না করে দেশীয় মাছের উৎপাদন বাড়াতে হবে। এখানে মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনেক বড় দায়িত্ব রয়েছে। সেদিক থেকে আমি মনে করি, এভাবে মাছের অভয়াশ্রম তৈরী করা, সেগুলিকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।’
উপদেষ্ট বলেন, ‘আপনাদের সন্তানদের লেখাপড়া করিয়ে শহরে পাঠিয়ে দিবেন না। মৎস্য সম্পদ রক্ষার কাজে তারা নিজেদেরকে উৎসর্গ করতে পারে। এখানে কাজ করে তারা যেন ভালো থাকতে পারে এবং তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে সেদিকে দৃষ্টি দিবেন।’
তিনি বলেন, ‘বাইক্কাবিলকে সংরক্ষণের জন্য একটা সম্পদ ব্যবস্থাপনা সংগঠন রয়েছে। যারা মাছের অভয়াশ্রমকে সংরক্ষণের জন্য ভালো কাজ করে যাচ্ছে। তারা এই বিলটিকে এবং দেশীয় মাছকে রক্ষা করার জন্য বড় একটা ভূমিকা রাখছে। এখানে শুধু মাছের জন্য নয়, বিলের পারে পাখিরও একটা অভয়াশ্রম হয়েছে বিলের পাড়ে গাছ লাগানোর কারণে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘এখানে ১১৮ হেক্টরের স্থায়ী মৎস অভয়াশ্রমের সাথে আরো ৫ হেক্টর ভূমি অন্তুর্ভূক্ত করার একটা দাবি রয়েছে সেটা বিবেচনা করা যায় কি না সেটা ভাবতে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বলব। পাশাপাশি দাদুরিয়া বিল খনন করার উদ্যোগ আমরা নিব। তবে, কিছু কিছু কাজে জটিলতা আছে, সেগুলো সময় লাগবে। কারণ অনেকগুলো মন্ত্রণালয়ের সাথে সম্পৃক্ত। এছাড়া স্থানীয় নীতি নির্ধারণের যে কমিটি রয়েছে সেটার সাথে মৎস্য কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করতে হবে। এই অভয়াশ্রমটি দীর্ঘ মেয়াদি করতে হলে মৎস্য মন্ত্রণালয় ছাড়া কেউ দায়িত্ব নিবে না, তাই যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে মৎস্য কর্মকর্তাদের এখানে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই অভয়াশ্রমটি একটা বীজতলার মতো। আমরা কৃষিতে বীজতলা বলি, কিন্তু মাছেরও যে বীজতলা আছে এবং এই কথাটা শুনতে যে কত সুন্দর, তা এখানে না এলে জানতাম না। এই বীজতলাকে ঠিকিয়ে রাখতে হলে মৎস্যকর্মকর্তাদের এই কমিটিতে রাখতেই হবে। এছাড়া বর্ষায় নেট দিয়ে হাওরের মাছকে আটকে দেয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। মাছকে বিল থেকে যেতে দিবেন, আবার তাদেরকে আসতে দিবেন না, এটা অন্যায়। মাছ তো আবার বিলে আসার জন্য মিছিল করবে না দাবী-দাওয়া নিয়ে। এটা করা যাবে না। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। মাছ একটা অবলা প্রাণী।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাইক্কাবিলে ট্যুরিজমের একটা নিষেধাজ্ঞা থাকা দরকার। এখানে মাছের পাশাপাশি পাখির ডিস্টার্ব হচ্ছে। এছাড়া পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছেন এখানে যারা ঘুরতে আসেন। তারা পলিথিনসহ নানান প্যাকেট ফেলে যাচ্ছেন। এগুলো পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। তাদের নিজেদের আনন্দের জন্য অন্য জায়গায় যেতে পারেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘হাওরের পাখি শিকার করে যারা আনন্দ পান তাদেরকে এই কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। এটা একটা নির্মম এবং অমানবিক কাজ। এই কাজটা করা ঠিক হবে না। এটি দেশের জন্য ক্ষতি, প্রাণ প্রকৃতির জন্য ক্ষতিক্ষর। এজন্য দেশের প্রচলিত আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতার বিকল্প নেই।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা