ভারতে বাংলাদেশী নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে শাবি ও সিকৃবিতে বিক্ষোভ
- সিলেট ব্যুরো
- ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:২৭
ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশী এক নারীকে (২৮) ধর্ষণের পর হত্যার প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে পৃথক বিক্ষোভে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়
শনিবার রাত ৯টার দিকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ভারত বরাবরের মতোই সাম্প্রদায়িক ও সন্ত্রাসী একটি রাষ্ট্র। গত ১৫ বছরের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে তারা আমাদের মাথায় চড়ে বসেছে। তাদের সাথে সকল ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করা উচিত। সাম্প্রদায়িক মনোভাব থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।’
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আজাদ শিকদার বলেন, ‘ভারত যেভাবে আমাদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে চাচ্ছে তা আমরা কোনোদিন হতে দিবো না। আমরা আমাদের বোনের হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। উপদেষ্টাদের উচিত ভারতের হাইকমিশনারকে জবাবদিহির পাশাপাশি বিচারের জন্য চাপ প্রয়োগ করা।’
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
শনিবার রাত সাড়ে দশটায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রহল প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন সিকৃবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি টিএসসি হয়ে প্রশাসনিক ভবনের পাশে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘ভারতের দালালেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘আমার বোন মরলো কেন, মোদি সরকার জবাব দে’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সমাবেশে সিকৃবির স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী গোলাম মর্তুজা সেলিম বলেন, ‘ভারতে আমাদের বাংলাদেশী এক বোনকে বৈধ পাসপোর্ট থাকার সত্ত্বেও ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্বাধীনতা পরবর্তী ভারত সরকার কখনো বাংলাদেশীদের প্রথম শ্রেণির নাগরিক মনে করেনি। তারা যদি আমাদের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক মনে করতো তাহলে বৈধ পাসপোর্ট থাকার সত্ত্বেও আমার বোন এই হত্যাকাণ্ডের শিকার হতো না। আমরা স্পষ্ট করে ভারত সরকারকে বলে দিতে চাই, তারা যদি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার না করে তাহলে তাদের দোসরদের আমরা যেভাবে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করেছি, তেমনি আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি তাদের গদির দিকে অগ্রসর হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীনতা পরবর্তী ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে অসংখ্য বাংলাদেশী হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে, যারা বিচার এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। বিপ্লব পরবর্তীতে আমরা ভারত সরকারকে দেখেছি জুলাই বিপ্লবকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড অভিহিত করার চেষ্টা করেছে। যার ফলশ্রুতিতে তারা দু’হাজারের অধিক জনগণের হত্যাকারী ও লক্ষাধিক জনগণের আহতকারীদের আশ্রয় দিয়েছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সরকারকে উৎখাত করতে এমন কোনো হীন চক্রান্ত নেই যা ভারত বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে না। বাংলাদেশকে সফল রাষ্ট্রে পরিণত করতে ভারতের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’
উল্লেখ্য, গেল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ভারতের কর্নাটকে এক বাংলাদেশী নারীকে (২৮) ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। কর্নাটকের কালকেরে লেক এলাকায় ওই নারীর লাশ পাওয়া যায়। জানা গেছে, তার স্বামী একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। তিন সন্তান নিয়ে উত্তর বেঙ্গালুরুতে থাকতেন তারা।