১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০১ মাঘ ১৪৩১, ১৪ রজব ১৪৪৬
`

সুনামগঞ্জে তরুণকে হত্যার মামলায় আসামি গ্রেফতার

গ্রেফতার আসামি রিপন আহমদ - ছবি : নয়া দিগন্ত

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পাকনা হাওরে গভীর রাতে আকরাম হোসেন (২৭) নামে এক তরুণকে গলা কেটে হত্যার মামলায় আসামি রিপন আহমদকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে গোপন সূত্রের ভিত্তিতে সুনামগঞ্জের মোহাম্মদপুর এলাকার কাওসারের কলোনি থেকে জামালগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার রিপন উপজেলা সদর ইউনিয়নে পশ্চিম লক্ষীপুর গ্রামের আলী আহমদের ছেলে বলে জানা গেছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত ১১ জানুয়ারি শনিবার রাত আনুমানিক ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের রাজাপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাছে উড়ার বিল-সংলগ্ন পাকা রাস্তার পূর্ব পাশে অটোরিকশাচালক আকরাম হোসেনকে গলা কেটে ও মুখ হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ধানের জমিতে রেখে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহত আকরাম হোসেন সুনামগঞ্জের মোহাম্মদপুরের কুতুবপুর এলাকায় তার মা-বাবা ও ভাইবোনের সাথে একটি ভাড়া বাসায় থেকে অটোরিকশা চালিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি দিরাই থানার সরমঙ্গল ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামে। ঘটনার দিন শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের রাজাপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সন্নিকটে উড়ার বিল-সংলগ্ন পাকা রাস্তার পূর্ব পাশে অর্ধগলা কেটে ও মুখ হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ধানের জমিতে রেখে চলে যায় দুর্বৃত্তরা।

পরে স্থানীয় আরেক অটোরিকশাচালক আলাউদ্দিন ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে আকরাম হোসেনের ব্যাটারিচালিত গাড়ি ও ধানের জমিতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার চিৎকার শুনতে পান। পরে আলাউদ্দিন জামালগঞ্জ থানায় মুঠোফোনে জানিয়ে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই আকরাম হোসেনের পরিবারের সহযোগিতায় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পর দিন রোববার ভোর ৭টার দিকে আকরাম হোসেন মারা যান। এর পর সিলেট কোতোয়ালী থানার অধীনে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।

এ ঘটনার পরপরই সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন খান (পিপিএম) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে নিহত আকরাম হোসেনের বাবা মো: রফিকুল ইসলাম জামালগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা খুনিকে খুঁজতে আরো তৎপর হয়।

পুলিশ জানায়, আসামির ভাষ্য অনুযায়ী নিহতের অটোরিকশা ছিনতাইয়ের জন্য তাকে সুনামগঞ্জ থেকে অটোরিকশাসহ নির্জন হাওরে নিয়ে আসে। একপর্যায়ে হঠাৎ তার মাথায় খুনের পরিকল্পনা এলে আকরাম হোসেনকে হত্যা করে।

জামালগঞ্জ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শ ম কামাল হোসেইন বলেন, ‘ঘটনার পরই খুনিকে শনাক্তের চেষ্টা করেছি। পুলিশ সুপার সরেজমিন পরিদর্শন করে নির্দেশনা দেন। নিহতের পিতা মামলা করার পর। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সহায়তা হয়। এর পর আসামিকে সুনামগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। আসামি হত্যার দায় স্বীকার করে। এবং আসামির কথা অনুযায়ী হত্যা কাজে ব্যবহৃত ছুরি ও ভিকটিমের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার আদালতে আসামিকে সোপর্দ করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement