০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১ পৌষ ১৪৩১, ৪ রজব ১৪৪৬
`

শাবিপ্রবিতে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি বন্ধ

- ছবি : নয়া দিগন্ত

সব ধরনের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও ফাঁকা আসনে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারছে না শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভর্তির ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও শুধুমাত্র গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় জিএসটির আহ্বায়কের একক সিদ্ধান্তে ভর্তি বন্ধ হতে যাচ্ছে।

এদিকে আসন শূন্য থাকার পরেও ভর্তি না নেয়াকে জিএসটির সিলেট বিদ্বেষী মনোভাব ও বৈষম্যমূলক আচরণ বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

এ ব্যাপারে শাবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

অথচ আগামীকাল শনিবার থেকে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতে পুরোপুরি প্রস্তুতি ছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শাবিপ্রবি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি (জিএসটি) গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে ইউজিসি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ফাঁকা আসন দ্রুত পূরণের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও জিএসটিকে অনুরোধ করে কোনো ফাঁকা আসন রেখে ২০২৩-২৪ এর ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ না করার জন্য। কিন্তু জিএসটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুরোধকে গুরুত্ব না দিয়ে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অনাকাঙ্খিত এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থ পরিপন্থী।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. সাজেদুল করিম দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার সর্বোচ্চ ফোরাম হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফাঁকা আসন পূরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যা অত্যন্ত যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ফাঁকা রেখে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে বঞ্চিত করাকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কখনোও ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক মনে করে না। এই আলোকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল চূড়ান্ত ভর্তির আগে জিএসটি থেকে প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ডাটা থেকে মেরিট লিস্ট অনুযায়ী ফাঁকা আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু জিএসটির এমন নির্দেশ শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন সঙ্কট তৈরি করবে। এর প্রভাব দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারে।

তিনি আরো বলেন, ‘ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করার জন্য ইতোমধ্যে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে আমরা দরখাস্ত দিয়েছি। আশা করছি ভর্তির ব্যাপারটি চালু থাকবে।’

জানা গেছে, অপেক্ষমাণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের আবেদন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ও ইউজিসির চিঠিকে আমলে না নিয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন ফাঁকা রেখে জিএসটির ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ সরকারি অর্থের অপচয় ও অপেক্ষমাণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করার কৌশল মাত্র। এর ফলে কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে এর সম্পূর্ণ দায়ভার জিএসটি কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তাবে। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে জিএসটির অন্তর্ভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি ফাঁকা আসন আছে তা উল্লেখ না করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জিএসটির আহ্বায়কের চিঠি পাঠানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে। বরং ফাঁকা আসনে অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থী ভর্তি করে এই সমস্যার সন্তোষজনক সমাধান করা সম্ভব। সে লক্ষ্যে জিএসটি কার্যকর ব্যবস্থা নিলে শিক্ষার্থীগণ উপকৃত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement