০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১, ২ রজব ১৪৪৬
`

সিলেটে পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার

সিলেটে পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার - ছবি : নয়া দিগন্ত

জেলা পরিবহণ শ্রমিক সংগঠনের ডাকা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেটের জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠক শেষে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন দৈনিক নয়া দিগন্তকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ‘জেলা প্রশাসকের আশ্বাস দিয়েছেন, কিশোর নিহতের ঘটনায় কোনো মামলা হবে না। গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে। এই আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমাদের দাবি মানা না হলে আবারো কর্মসূচি দেয়া হবে।’

জানা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনায় এক কিশোর নিহতের জেরে একাধিক বাস ভাঙচুরের প্রতিবাদে কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সোমবার থেকে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন পরিবহণ শ্রমিকরা। মঙ্গলবারও এই সড়কে যান চলাচল করেনি।

এদিকে এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার থেকে পুরো সিলেটে কর্মবিরতির ডাক দেয় সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। সোমবার বিকেলে এ কর্মসূচি ঘোষণা দিলেও রাতে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে কেবল সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চালাচাল বন্ধ রাখেন তারা। এতে সিলেট-জকিগঞ্জ ও সিলেট-বিয়ানীবাজারগামী যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েন।

যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো বাস জকিগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। একইভাবে জকিগঞ্জ থেকেও সিলেটের উদ্দেশেও কোনো বাস আসেনি। অনেক যাত্রীকে বাসের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয়েছে। বাস ছেড়ে যাবে না জানার পরও যাত্রীরা ধর্মঘট প্রত্যাহারের অপেক্ষায় ছিলেন।

উল্লেখ্য, রোববার সকালে জকিগঞ্জের কামালগঞ্জ আব্দুল মতিন কমিউনিটি সেন্টারের কাছে সড়কের পাশে শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলছিল। মাঠ থেকে বলটি সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে চলে গেলে বল আনতে আবির আহমদ (১৪) নামের এক কিশোর দৌড় দেন। এ সময় দ্রুতগামী একটি গেটলক বাসের ধাক্কায় সে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।

পরিবহণ শ্রমিকদের অভিযোগ, এ সময় ওই বাসটি ছাড়া আরো তিনটি বাস ভাঙচুর করা হয়। এর প্রতিবাদে সোমবার পরিবহণ শ্রমিকরা সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। মঙ্গলবারও সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন তারা।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুহিম দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমাদের বাসের চালক অন্যায় করলে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। কিন্তু আইন হাতে তুলে নিয়ে বাস ভাঙচুর করা ও পুড়িয়ে দেয়া সন্ত্রাসী কাজ। আমরা এর বিচার চাই। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসের চালক জকিগঞ্জ থানায় মামলার আবেদন করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় কোনো মামলা হবে না। আর কোনো বাসে হামলা হবে না। বৈঠকে সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা, নিহত স্কুলছাত্র আবিরের পরিবারের সদস্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement