বড়লেখায় বিএসএফের গুলিতে চাশ্রমিক নিহত, জিরো লাইন থেকে লাশ উদ্ধার
- আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট
- ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৪১
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে গোপাল বাগতি (৩৬) নামে এক চাশ্রমিক নিহত হয়েছেন।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে নিহতের স্বজনদের উপস্থিতিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও পুলিশ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো লাইন থেকে তার লাশ উদ্ধার করেছে।
নিহত গোপাল বাগতি বড়লেখা উপজেলার সরকারি মালিকানাধীন নিউ সমনবাগ চা বাগানের মোকাম সেকশনের সাবেক ইউপি সদস্য অকিল বাগতির ছেলে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, গত শনিবার পাহাড় থেকে বাঁশ আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন গোপাল বাগতি। তার স্বজনদের অভিযোগ, অসাবধানতাবশত: সীমান্তের জিরো লাইনের কাছে গেলে গোপাল বাগতিকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। এ সময় তার সাথে আরো কয়েকজন শ্রমিক ছিলেন। তারা বিএসএফের গুলির ভয়ে পালিয়ে রক্ষা পান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সকালে চাশ্রমিক গোপালসহ আরো কয়েকজন শ্রমিক বাঁশ কেটে আনতে পাথারিয়া পাহাড়ের দুর্গম জঙ্গলে যান। সেখান থেকে রাত পর্যন্ত বাড়ি ফেরেননি গোপাল। বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রোববার ভোরের দিকে তারা খবর পান বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের বিওসি টিলা বিওপির আওতাধীন সীমান্ত পিলারের মধ্যবর্তী জিরো লাইনের গভীর জঙ্গলে একটি লাশ পড়ে আছে। খবর পেয়ে বিজিবি ও থানা পুলিশ স্বজনদের নিয়ে ঘটনাস্থল গিয়ে নিহত গোপালের লাশ শনাক্ত করেন। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, ‘নিহত গোপালের শরীরে গুলির দাগ রয়েছে। তাদের অভিযোগ বিএসএফ গুলি করে তাকে হত্যা করে লাশ ফেলে গেছে।’
নিহত গোপাল বাগতির সাথে থাকা শ্রমিকদের বরাত দিয়ে দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ইমরান আহমদ বলেন, ‘গোপালসহ আরো কয়েকজন দিনমজুর পাহাড়ে বাঁশ কাটতে যান। এ সময় বিএসএফ গুলি করলে গোপাল বাগতি নিহত হন। তার সাথে থাকা অন্যরা সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। তবে ভয়ে তারা মুখ খুলেনি।’
বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মেহেদী হাসান পিপিএম জানান, ‘রোববার সকালের দিকে কয়েকজন চাশ্রমিক বিজিবি বিওসিটিলা বিওপির টহল দলকে জানায় সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস এলাকায় একটি লাশ দেখতে পায়। বিষয়টি তারা থানা পুলিশকে অবহিত করে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিওসি টিলা বিওপির টহল দল তাৎক্ষণিক পুলিশ ও নিহতের স্বজনসহ ওই স্থানে অভিযান চালিয়ে সীমান্ত পিলার ১৩৯১/২-এস থেকে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি লাশের সন্ধান পায়। পরে স্বজনরা নিহত গোপাল বাগতির লাশ শনাক্ত করেন। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে, তার (নিহত গোপালের) শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে আইনিব্যবস্থা নেয়ার জন্য নিহতের লাশ বড়লেখা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আবদুল কাইয়ূম রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘দুর্গম এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’