১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বীর মুক্তিযোদ্ধারা চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে : অ্যাডভোকেট জুবায়ের

বিজয় দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন এহসানুল মাহবুব জুবায়ের - ছবি : নয়া দিগন্ত

বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে মন্তব্য করে জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, ‘বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় জীবনের শ্রেষ্ট অর্জন। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদরা আমাদের প্রেরণার উৎস। পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠী রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য জাতিকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দিয়েছিল। অথচ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ঐক্যের, বিভক্তির নয়।’

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং মহানগর সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সিলেটের ৩৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

প্রধান অতিথি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দাবিদার পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার স্বাধীনতার মূলনীতিকে ধ্বংস করে দেশে একটি দলের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিল। মানুষের মৌলিক মানবাধিকার ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী সমাজ প্রতিষ্ঠায় আমাদের তরুণ ছাত্র সমাজ শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নেমেছিল। সেই আন্দোলন দমাতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ছাত্র-জনতার উপর গণহত্যা চালিয়েছে। এতে দু’হাজার মানুষ শহীদ হলেও আহত হন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের শুধু পতনই হয়নি, খুনী হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। জুলাই আন্দোলনে আহতরা এখনো হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছেন। আমরা তাদের সুস্থতা কামনা করছি। জামায়াত মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ ও জুলাই আন্দোলনের ছাত্র-জনতার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে কাজ করছে। এই পথে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।’

অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও জুলাই আন্দোলনের নিহতদের রুহের মাগফেরাত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও জুলাই আন্দোলনে আহতদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করা হয়।

এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মো: আবুল ফারুক, আবুল কাশেম, মঈন উদ্দিন, মো: সিরাজ চুন্নু, নওয়াব আলী, মো: সোনা মিয়া, মো: সিদ্দেক আলী, মির্জা জামাল পাশা, আব্দুস শহীদ খাঁন, নজরুল হোসেন, জমির উদ্দিন, বাবুল মিয়া, মো: মনাফ খাঁন, মো: রইছ আলী, হাজী মখলিছুর রহমান, মো: কলমদর আলী, মো: জানু মিয়া, মো: হিরা মিয়া, শোয়েব আহমদ, সুরুজ আলী, মহি উদ্দিন, ছখাই মিয়া, এখলাছুর রহমান, মছদ্দর আলী, হানিফ আলী, আনোয়ার রাজা চৌধুরী, লিয়াকত আলী বাচ্চু, জানু মিয়া, আজিজুল হক খসরু, সমছির আলী, মো: সুরুজ আলী, সায়েদ আলী ময়না মিয়া ও ছানাওর আলী।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর নায়েবে আমির ড. নূরুল ইসলাম বাবুল সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জাহেদুর রহমান চৌধুরী ও মাওলানা ইসলাম উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা বলেন, ‘ইতিহাস স্বাক্ষী দেশের সকল ক্রান্তিলগ্নে জামায়াতে ইসলামী অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করেছে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখতে জামায়াতের সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা অতন্ত্র প্রহরীর ভূমিকা রাখছে। আগামীতেও সন্ত্রাস-দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে জামায়াতের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিজয়ের ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও যে মহান লক্ষ্যে দেশ স্বাধীন হয়েছিল তা আজো বাস্থবায়ন হয়নি। দীর্ঘ ১৬ বছর দেশে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও কথা বলার অধিকার ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের ঐক্যের চেতনাকে রাজনৈতিক কারণে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছিল। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে বিজয়ের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেমিক জনতা দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। এবার বিজয়ের সুফল প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে দেশপ্রেমিক জনতাকে সাথে নিয়ে জামায়াতের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।’


আরো সংবাদ



premium cement