কোম্পানীগঞ্জের দু’পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র, আহত অর্ধশতাধিক
- আবদুল কাদের তাপাদার, সিলেট
- ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩:২৭
সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা কোম্পানীগঞ্জের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র থানাবাজারে তুচ্ছ ঘটনার জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে। এ সময় দু’টি মোটরসাইকেল আগুনে পোড়ানো হয়েছে। বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
শনিবার রাত ৭টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা দফায় দফায় চলে এ সংঘর্ষ। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছিল। পরে সিলেট থেকে বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে রয়েছেন বর্নি গ্রামের বাবুল, কোম্পানীগঞ্জ গ্রামের হাবিব, রহিম হোসেন, মোহন, সুন্দর আলী, সোলেমান, রিশাদ, রবি মিয়া, জাহেদ মিয়া, মাহফুজ, মাসুক, আলী নুর, আলমাছ, তারেক, হাবিবুর, ঈসা মিয়া, মোহাম্মদ আলী, বেলাল মিয়া, শিবলু, স্বপন, খোরশেদ মিয়া, কাঁঠালবাড়ি গ্রামের শাহিনুর, সায়েম, শান্ত, রায়হান, আব্দুল হামিদ, সেলিম, নাঈম, শাহ আলম, নাজিম, আব্বাস, কাজল, লুলু, সাইফুর রহমান, ইলিয়াছ, এনায়েত উল্লাহ, আবুল হোসেন, বনপুর আদর্শগ্রামের জৈন উদ্দিন, নয়াগাঙেরপাড়ের হোসাইন আহমদ, বুড়দেও গ্রামের মাহদি হাসান শরীফ, মনজুর আলী, নবী হোসেন, গৌখালেরপাড়ের সোহরাব, পারকুলের সাজ্জাদ, শিলেরভাঙা গ্রামের এনামুল, উত্তর কলাবাড়ির আমির উদ্দিন, দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামের আব্দুছ সত্তার, মাসুক মিয়া ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়ার গাড়ির চালক জুয়েল।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো: কামরুজ্জামান রাসেল জানান, কোম্পানীগঞ্জ হাসপাতালে ৪৯ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহত একজনকে অন্যত্র রেফার করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, বর্নি গ্রামের বাবুল নামের একজন থানাবাজার পয়েন্টে একটি ওষুধের দোকানে মোবাইল চার্জে দিয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পরে মোবাইল নিতে দোকানে গেলে ওষুধ কোম্পানির এক ব্যক্তি তার সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। বাবুল ওই ব্যক্তিকে গালাগাল দেন। ঘটনাস্থলে থাকা কোম্পানীগঞ্জ ও কাঁঠালবাড়ি গ্রামের একাধিক ব্যক্তি তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু ঘটনা গড়ায় হাতাহাতিতে। বর্নির বাবুল মারধরের শিকার হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে কাঁঠালবাড়ি ও কোম্পানীগঞ্জ গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বাজারে অবস্থান নেয়। একপক্ষ উপজেলা ভূমি অফিসের আশপাশে এবং অপরপক্ষ বাজারের পয়েন্ট এবং টিঅ্যান্ডটি রোডের উত্তরা ব্যাংকের পাশে অবস্থান নেয়। উভয়পক্ষের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাটা ধাওয়া। রাত ৭টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত টানা চার ঘণ্টা চলে এই সংঘর্ষ। এ সময় দুটি মোটরসাইকেল আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়। বাজারে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৫০ জনের বেশি লোক আহত হয়।
গুরুতর আহত একজনকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, বাবুলের পক্ষ নিয়ে বর্নি গ্রামের লোকজনও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় কিছু যুবককে যানবাহন আটক করে তল্লাশি চালাতে দেখা যায়। সংঘর্ষ চলাকালে মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার-জুড়ে গাড়ির লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খাচ্ছিল কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ। একপর্যায়ে সিলেট থেকে বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য এসে পুলিশকে সাথে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার উপ-পরিদর্শক তন্ময় জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় সেনাবাহিনী দু’জনকে আটক করেছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে অতিরিক্ত ফোর্স চাওয়া হয়। সেনাবাহিনীকেও জানানো হয়। পরে সম্মিলিত চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষ এই সংঘর্ষে জড়ায়। যারা সরাসরি এই ঘটনায় জড়িত ছিল সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা